অলির বই বাজেয়াপ্ত ও কনকের ভিডিও কনটেন্ট বন্ধের নির্দেশ

ইতিহাস বিকৃতি

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৯ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করায় কর্ণেল (অব.) অলি আহমদের লেখা ‘ রেভোলিউশন, মিলিটারি পারসোনেল অ্যান্ড দ্য ওয়ার অব লিবারেশন ইন বাংলাদেশ’ বইটি নিষিদ্ধ ও বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। বিএনপির সাবেক নেতা অলির ওই বইতে জিয়াউর রহমানকে ‘দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল। গত ১৭ আগস্ট সাংবাদিক কনক সরওয়ারের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেইসবুক লাইভে অলি আহমদের সাক্ষাৎকারসহ কনক সরওয়ারের ‘দেশবিরোধী’ সব ভিডিও কনটেন্ট ‘নিষিদ্ধ, বন্ধ, অকার্যকর ও অপসারণ’ করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অলির যেসব বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে, সেগুলোও নিষিদ্ধ এবং বাজেয়াপ্ত করতে বলেছে আদালত। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও তথ্য মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। গতকাল হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ একটি রিট পিটিশনের (নং-৮৫৮৫/২০২০) প্রাথমিক শুনানি শেষে এ আদেশ দিয়েছেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেয়া অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাইকোর্টের আদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্টদের উক্ত ইউটিউব কন্টেন্ট বন্ধের বিষয়ে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য বলা হয়েছে।
রিট পিটিশন দাখিলকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ উদ্দিন আহমেদ আসিফ গতকাল আজাদীকে বলেন, কনক সারওয়ারের ইউটিউব চ্যানেলের কনটেন্ট ব্লক করে দেয়ার নিদের্শনার পাশাপাশি হাইকোর্ট তথ্য মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে কর্ণেল অলির ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে না এ মর্মে রুল জারি করেছেন। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দেয়ার জন্যও বলেছেন হাইকোর্ট।
গত ৭ সেপ্টেম্বর ব্যারিস্টার আসিফ কর্ণেল অলির বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনে একটি আইনি নোটিশ দেন। ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ জানান, নোটিশের জবাবে উনি(অলি আহমদ) উনার বক্তব্যে অনড় থাকেন।
এরপর তিনি গত ১৭ নভেম্বর এবিষয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করেন। এরআগে ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ আজাদীকে জানিয়েছিলেন, গত ১৭ আগস্ট কনক সারওয়ারকে ইউটিউব চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাতকারে কর্ণেল অলি দাবি করেন জিয়াউর রহমান অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি। অলি আরো দাবি করেন, অনেকেই জানেন না। আমি সাথে ছিলাম, আমি জানি। অথচ সংবিধানে বঙ্গবন্ধুকে প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপ রাষ্ট্রপতি বলা হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে এটা নিয়ে কোনো কথা কেউ উত্থাপন করেননি। তাই উনার এ মন্তব্য ইতিহাস বিকৃতির।
৭৫’ পরবর্তী বঙ্গবন্ধু হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির যে অপচেষ্টা করা হয়েছিল তারই আদলে কর্ণেল (অব.) অলি ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কর্ণেল অলির এ ধরনের বক্তব্য দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর আমার কাছে মনে হয়েছে, এটা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি এবং সংবিধান লঙ্গন করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঐতিহ্যের ইঞ্জিনে বিজয়ের রং
পরবর্তী নিবন্ধমহানগর বিএনপির সম্ভাব্য আহ্বায়ক কমিটি থেকে বাদ পড়ার খবর