ফুটবলের ইতিহাসে এমন নজির আছে কিনা সেটি বের করতে হলে ফুটবলের আপাদমস্তক গবেষণা করতে হবে। দুই ঘণ্টা পর আর্জেন্টিনার গোল বাতিল করে দিয়েছেন রেফারি। যা পুরো বিশ্বজুড়ে তৈরি করেছে চাঞ্চল্য। শেষ পর্যন্ত চরম বিতর্কিত ম্যাচে আফ্রিকান মরক্কোর ২–১ গোলে হেরে গেছে আর্জেন্টিনা। অলিম্পিক ২০২৪ সালের আসরের প্রথম ম্যাচেই কি ঘটেছিল, তা আগে জেনে নেওয়া যাক। নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময় যোগ করা হয় ১৫ মিনিট। তখন মরক্কো এগিয়ে ২–১ গোলে। লম্বা একটি সময় অতিরিক্ত হিসেবে যোগ করায় ক্ষিপ্ত ছিল মরক্কোর সমর্থকরা। তাদের ধারণা আর্জেন্টিনাকে সুবিধা দিতেই এতগুলো মিনিট অতিরিক্ত যোগ করা হয়। ধারণা অনুসারে ১০৫ মিনিটের সময় গিয়ে, অর্থাৎ খেলা শেষ হওয়ার কয়েক মুহূর্ত আগে আর্জেন্টিনার ক্রিশ্চিয়ান মেদিনা হেড করে গোল করেন। এরপরই ক্ষুব্ধ মরক্কোর সমর্থকরা মাঠে বৃষ্টির মত বোতল ছুঁড়তে শুরু করে। আতশবাজিও ফোটায়। যে কারণে ম্যাচের শেষ বাঁশি না বাজিয়েই রেফারি দুই দলের ফুটবলারদের নিয়ে মাঠ ত্যাগ করেন। এ সময় মরক্কোর সমর্থকরা মাঠে নেমে আসে। অবস্থা বেগতিক দেখে অলিম্পিক কর্তৃপক্ষ মাঠের জায়ান্ট স্ক্রিনে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেখায়, ‘মাঠে আপনাদের সময় শেষ। সুতরাং, যে যেখানে আছেন, সেখানকার কাছাকাছি গেইট দিয়ে বের হয়ে যান।’ সমর্থকরাও ম্যাচ শেষ হয়ে গেছে মনে করে মাঠ ছেড়ে যান। ১ ঘণ্টা পর মাঠ পরিষ্কার করে আবারও দুই দলকে আনা হয় খেলার শেষ বাঁশি বাজানোর জন্য। এ সময় নিয়মানুযায়ী ভিএআর দিয়ে গোল চেক করা হয়। যেখানে দেখা যায় ব্রুনো অ্যামিওনে অফসাইডে ছিলেন। ফলে আর্জেন্টিনার গোল বাতিল করে দেন রেফারি। এর এক মিনিটের মধ্যেই খেলা শেষের বাঁশিও বাজিয়ে দেন তিনি। রেফারির এমন অভূতপূর্ব সিদ্ধান্তের জেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী তারকা লিওনেল মেসি। আলবিসেলেস্তাদের অলিম্পিক দলের কোচ হাভিয়ের মাসচারানো এই ঘ্টনাকে কেলেঙ্কারি বলে উল্লেখ করেছেন। রেফারির এই সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত প্রতিবাদে ফিফার কাছে অভিযোগপত্র দিয়েছে আর্জেন্টিনা। অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আর্জেন্টিনার গণমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসের সাংবাদিক গাস্টন ইদুল। তিনি জানিয়েছেন, আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন (এএফএ) ফিফার ডিসিপ্লিনারি কমিশনে অভিযোগ দিয়েছে। সেখানে ম্যাচটিতে হস্তক্ষেপের উপর জোর দিয়েছে আর্জেন্টিনা। তাদের দাবি, রেফারি সিদ্ধান্ত জানাতে অনেক দেরি করেছেন। এই ধরনের সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। যা অগ্রহণযোগ্য। অলিম্পিকে টিকে থাকতে হলে গ্রুপ পর্বের বাকি দুই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে হবে আর্জেন্টিনাকে। তাদের পরের ম্যাচ ২৭ জুলাই ইরাকের বিপক্ষে এবং শেষ ম্যাচ ৩০ জুলাই ইউক্রেনের বিপক্ষে।