মীরসরাইয়ের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য ৩০০ একর জমির প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর একই পরিমাণ অতিরিক্ত জমি চাচ্ছে সৌদি আরব। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলানের সঙ্গে বৈঠকের পর এ কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, সৌদি আরবকে ৩০০ একর জমি মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আরও ৩০০ একর জমি তারা চায়। মোট ৬০০ একর জমি বিনিয়োগের জন্য। এ বিষয়ে আলাপ–আলোচনা হয়েছে। কোন ধরনের কারখানা করবে, সেটা বিনিয়োগকারী কোম্পানিগুলো ঠিক করবে বলে এক প্রশ্নে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের।
জনশক্তি রপ্তানি ও হজ নিয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে যে সম্পর্ক, তাকে এখন ‘বিনিয়োগ সম্পর্কে’ রূপ দেওয়ার কাজ চলছে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, সৌদি আরবের সরকার এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। জ্বালানি খাতে সৌদি আরবের বিনিয়োগের আগ্রহের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, গ্রিন এনার্জি সেক্টরে বিনিয়োগ করতে তারা আগ্রহী। ভাসমান সোলার প্যানেলের মাধ্যমে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তারা আগ্রহ ব্যক্ত করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা টার্মিনাল পরিচালনায় সৌদি বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা টার্মিনাল তারা অপারেট করতে যাচ্ছে। সেখানে ১২০ কোটি মার্কিন ডলার তারা খুব অল্প সময়ে বিনিয়োগ করবে।
বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ৫০০ কোটি গাছ লাগানোর ‘সৌদি গ্রিন ইনিশিয়েটিভে’ বাংলাদেশি কৃষিবিদসহ অন্যদের ভূমিকা রাখার প্রস্তাব রাষ্ট্রদূত দিয়েছেন বলে জানান তিনি। সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদ বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই বছরের দ্বিতীয়ার্ধে তার সফর কীভাবে হতে পারে, সে ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। এদিন সৌদ রাষ্ট্রদূত ছাড়াও মিশরের রাষ্ট্রদূত ওমর মহি আলদিন ফাহমী এবং অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার নার্ডিয়া সিম্পসন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। চলতি বছর মিশরের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে, শিগগিরই এটি উদযাপিত হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মিশর তাদের দেশে পাট চাষ করতে চায়, এ বিষয়ে তারা বাংলাদেশের সহায়তা চেয়েছে। আমরা বলেছি, এ বিষয়ে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।
অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, আইসিটি, চামড়া খাতে বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের বড় উন্নয়ন অংশীদার অস্ট্রেলিয়াকে ইকোনমিক জোনগুলোতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির বিষয়েও আলাপ হয়েছে।