এম টি মার্কেন্টাইল–২১ নামের তেল পরিবহনকারী জাহাজের ইনচার্জ ড্রাইভার মোহাম্মদ মোস্তফা কামালকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ঘটনায় ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার তাদের সবাইকে নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সদরঘাট নৌ থানা পুলিশের এসআই কামাল। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ১৪ জনকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হচ্ছে।
এর আগে সকালে হালিশহর থানায় হত্যার ঘটনায় মামলা করা হয়। মামলায় জাহাজটির মাস্টার রমজান মাহমুদ খোকনসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছিল। যার নম্বর ১৪(৪)/২৫। মামলায় খুনসহ লাশ গুম করার অভিযোগও আনা হয়। মোস্তফা কামালের ভাই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় রেকর্ডকৃত মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মোস্তফা কামাল বিগত ২০২১ সালের ১ নভেম্বর থেকে মেঘনা গ্রুপের তেলবাহী এমটি মার্কেন্টাইল–২১ নামক জাহাজের চীফ ইঞ্জিন ড্রাইভার হিসাবে চাকরি করছেন। গত ২৫ এপ্রিল বিকেলে তেলবাহী মার্কেন্টাইল–২১ জাহাজটি নিয়ে স্টাফেরা পতেঙ্গা এলাকার এলজি–৪ নং ঘাট হতে খুলনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। গত ২৫ এপ্রিল সকালে মোস্তফা কামালের ভগ্নিপতি মোহাম্মদ আনছারুল হক প্রথমে ফোন করে বাদিকে তার ভাইকে জাহাজে পাওয়া না যাওয়ার কথা জানান। তখন তিনি উক্ত জাহাজের ইনচার্জ মাস্টার রমজান মাহমুদ খোকনকে ফোন করে তার ভাই নিখোঁজের বিষয়ে জানতে চান।
রমজান মাহমুদ তাকে জানান, জাহাজটি হাতিয়া থানার কাজীর বাজার বরাবর পূর্ব পাশে মেঘনা নদীতে এসে পৌছালে মাস্টার রমজান মাহমুদ জাহাজের অপর স্টাফ মোহাম্মদ মিলনকে ইঞ্জিন রুমে পাঠিয়ে ড্রাইভার মোহাম্মদ মোস্তফা কামালকে ইঞ্জিনের আরপিএম একটু বাড়িয়ে দিতে বলেন। কিন্তু মিলন এসে তাকে জানান যে, মোস্তফা কামালকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে হাতিয়া থানার জিডি নং–১০৭৪, তাং–২৫/০৪/২০২৫ রেকর্ড করা হয়।
গত ২৭ এপ্রিল সকালে সদরঘাট নৌ থানার অভিযান টিম সিএমপি হালিশহর থানাধীন হালিশহর সমুদ্র সৈকতের সামনে গানার্স ট্রেনিং এলাকা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের উপকুলে একজন পুরুষের লাশ ভাসতে দেখে। বাদি গিয়ে তার ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজোসে তার ভাই মোহাম্মদ মোস্তফা কামালকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে সাগরে ফেলে দেয়।
মামলায় জাহাজের মাস্টার রমজান মাহমুদ খোকন এবং অপরাপর জাহাজের স্টাফ জিয়া উদ্দিন, মোহাম্মদ নুর আলম, মোহাম্মদ সায়মন চৌধুরী, মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন রানা, মোহাম্মদ ইউনুছ, মোহাম্মদ মিলন খাঁন, মাহাবুবুর রহমান, জাবেদ, জয়নাল আবেদীন, মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, আব্দুল মালেক খান, শুকরান উদ্দিনসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩জনকে আসামি করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল তার লাশ খুলনার বাগেরহাটে নিয়ে গিয়ে দাফন করা হয়েছে বলেও স্বজনেরা জানিয়েছেন।