ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে নান্দনিক করে সাজিয়ে তুলতে ২০১৬ সালের বর্ষার শেষের দিকে মিডিয়ান গ্যাপে লাগানো হয়েছিল বাহারি সব ফুলের চারা। কিছুদিন পরিচর্যার পর তাতে সবুজের বান ডাকে যেন। পরবর্তীতে মাঝখানে কিছু কিছু এলাকায় গাছ মারা গেলে ১৭ ও ১৮ সালের বর্ষায় সেখানে নতুনভাবে চারা লাগানো হয়। কিন্তু এরপর থেকে যত্নের অভাবে বিনষ্ট হতে থাকে শোভাবর্ধনকারী সেসব বৃক্ষরাজি।
সচেতন মহলের অভিমত, সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ বছর ধরে এই দৃষ্টিনন্দন বৃক্ষের সমারোহ গড়ে তুলেছিল। আর কয়েক বছর রক্ষণাবেক্ষণ ও মাঝেমধ্যে পরিচর্যা পেলেই হয়ত এটি স্থায়ী রূপ পেয়ে যেত। এই দীর্ঘ দাবদাহে পরিচর্যা না পেলে অবশিষ্ট ভালগাছগুলোও হয়ত মরে যাবে।
সড়ক ও জনপথ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ সাল নাগাদ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় দুইশ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে করা হয়েছিল এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। মিডিয়ান গ্যাপ নামক ডিভাইডারের মধ্যখানের মাটি দেয়া ফাঁকা অংশে রোপণ করা হয়েছিল ৫০ হাজার বকুল, হৈমন্তী/কুরচী, সোনালু, রাধাচূড়া, কেছিয়া, কৃষ্ণচূড়া, কাঞ্চন, করবী, জারুল, কদম, পলাশসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছ। এছাড়া লং এরিয়াতে (গাছ ব্যতীত খালি অংশ) সবুজ ঘাস লাগানোর কথা ছিল। ঘাসের সমারোহ এবং নানা ফুলের নান্দনিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা- এই ছিল উদ্দেশ্য। এ সড়কটিকে ৫টি প্যাকেজে বিভক্ত করে করা হয়েছে এই কার্যক্রম। ফুলের চারা লাগানোর পর দেয়া হয়েছে সংরক্ষণের জন্য বাঁশের তৈরি বেষ্টনীও। এরপর এসব চারা রক্ষণাবেক্ষণেও রাখা হয়েছে একটি বিভাগ। কিন্তু এতসব আয়োজনের মধ্যে গত বছরের বর্ষা শেষে চলতি বছরের শুরুতেই দেখা যায়, সড়কের মীরসরাই, মিঠাছরা, বড়তাকিয়া, সোনাপাহাড়, দুর্গাপুর অংশে অনেক গাছ মরে গেছে।
পরিবেশ পর্যবেক্ষক প্রফেসর ডা. জামশেদ আলম বলেন, প্রথমত যথাযথ পরিচর্যার অভাব, দ্বিতীয়ত পানির অভাব। এছাড়া সড়কের দুই ধারের প্রচুর ধুলাবালি, গাড়ির কালো ধোঁয়া এবং বর্ষা মৌসুমে ঝোঁপঝাঁড়ে ঘিরে থাকার কারণে কিছু কিছু গাছ মারা যায়।
এই বিষয়ে জানতে চেয়ে ফোর লেনের চট্টগ্রাম অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও সওজের চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, পূর্বের বিভিন্ন প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। শীঘ্রই নতুন প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম অংশের মিডইয়ানের সকল বৃক্ষাদি রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হবে।