অবসরের এমন স্বপ্নই দেখেছিলেন দি মারিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক | মঙ্গলবার , ১৬ জুলাই, ২০২৪ at ৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ

টানা তিন বছরে তিন ফাইনাল হারের যন্ত্রণা। তা কাটিয়ে চার বছরের মধ্যে তিনটি বড় ট্রফি জয়দশ বছরের ব্যবধানে হৃদয়ের পুরনো ক্ষত পুরোপুরি ভোলার সুযোগ পেলেন আনহেল দি মারিয়া। আর শিরোপা দিয়েই তিনি রাঙালেন শেষটা। তাই তো বিদায়ী ম্যাচ খেলে বললেন, এমন অবসরের স্বপ্নই দেখেছেন সবসময়। গত বছর দি মারিয়া ঘোষণা দিয়েছিলেন, এবারের কোপা আমেরিকাই হবে আর্জেন্টিনার হয়ে তার শেষ খেলা। আর এই টুর্নামেন্টে একদম শেষ ম্যাচ পর্যন্তই খেলল আর্জেন্টিনা। ফাইনালে কলম্বিয়াকে হারিয়ে তারা জিতল টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৬তম শিরোপা। এর সবশেষ দুটির সাক্ষী দি মারিয়া। ২০২১ সালের কোপা আমেরিকায় দি মারিয়ার একমাত্র গোলেই দীর্ঘ ২৮ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়ে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। পরের বছর বিশ্বকাপ ফাইনালেও দলের তিন গোলের একটি করেন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। এবার যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত কোপার ফাইনালে জালের দেখা পাননি তিনি। তবে ম্যাচ জুড়ে দাপুটে ফুটবল খেলেন সৃষ্টিশীল এই ফুটবলার। এমনিতে দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি বা শেষ দিকে দি মারিয়াকে তুলে নেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। ৬৪তম মিনিটে চোখ জল নিয়ে লিওনেল মেসি মাঠ ছাড়াতেই হয়তো বিদায়ী ম্যাচে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারকে আরও বেশি সময় মাঠে রাখেন তিনি। ১১৭তম মিনিটে দি মারিয়া মাঠ ছাড়ার সময় আর্জেন্টিনা ১০ গোলে এগিয়ে। সে সময় চোখে জল থাকলেও মনের ভেতর আরেকটি ফাইনাল জয়ের দুয়ারে থাকার তৃপ্তি ও অন্যরকম এক ভালো লাগাই কাজ করছিল তার মনে। ম্যাচ শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সেই কথাই বলেন ৩৬ বছর বয়সী তারকা। ‘এটি ভাগ্যে লেখা ছিল। ঠিক এমনই। আমি এটিরই স্বপ্ন দেখেছি। এভাবেই অবসর নেওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। আমার এখন অনেকগুলো সুন্দর অনুভূতি আছে। আমি এই প্রজন্মের কাছে চির কৃতজ্ঞ যারা এসব অর্জন সম্ভব করেছে, যেগুলো আমি খুব করে চেয়েছিলাম।’ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষটা যেমন সাফল্যময় করলেন দি মারিয়া, এর ঠিক বিপরীতটাও দেখেছেন তিনি। ২০১৪ সালে ফিফা বিশ্বকাপের পর ২০১৫ ও ২০১৬ সালের ফাইনালে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। প্রতিটিরই সঙ্গী ছিলেন দি মারিয়া। তার যন্ত্রণা একটু বেশিই ছিল কারণ চোটের কারণে খেলতে পারেননি ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে। সেই বেদনাময় সময় পেছনে ফেলে এবার সাফল্যের শিখরে ভাসছেন দি মারিয়া, ভাসছে আর্জেন্টিনা। বিদায়ী মিডফিল্ডারের মতে, এমনটা প্রাপ্যই ছিলেন তারা। ‘এমনভাবে শেষ করার চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে? ফাইনালে ওঠা এবং সেগুলো জেতা সহজ নয়। আমি জানি, কারণ মুদ্রার উল্টো পিঠের জীবনটাও আমি দেখেছি। এখন এটি হচ্ছে। কোনো এক পর্যায়ে এটি হওয়ারই ছিল।’ আগেই অবসরের ঘোষণা দেওয়া দি মারিয়ার জন্য বিশেষ করে ফাইনাল ম্যাচটি জিততে চেয়েছিলেন মেসি। অ্যাঙ্কেলের চোটে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক মাঠ ছাড়ার পর তার ভূমিকাতেই খেলেন দি মারিয়া। দীর্ঘ দিনের সতীর্থকে আরেকটি শিরোপা উপহার দিতে পারায় তার উচ্ছ্বাস যেন আরও বেশি। ‘অ্যাঙ্কেলের সমস্যার কারণে মেসিকে চলে যেতে হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা তাকে কিছু আনন্দ দিতে পেরেছি।’ অন্তিম সময়ে দি মারিয়ার জায়গায় মাঠে আসেন নিকলাস ওতামেন্দি। সিনিয়র দলে হয়তো নিজের শেষ টুর্নামেন্টে খেললেন অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডার। ফাইনাল শেষে ট্রফি নেওয়ার সময় দীর্ঘ দিনের এই দুই সতীর্থকে ডেকে নেন মেসি। এক সময়ের কঠিন অধ্যায় পেরিয়ে হয়তো এমন বিদায়েরই স্বপ্ন দেখেছিলেন তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইউরো জিতে ইয়ামালের যতো রেকর্ড
পরবর্তী নিবন্ধচ্যাম্পিয়ন হয়ে কত টাকা পেল আর্জেন্টিনা-স্পেন