অবশেষে আক্ষেপ ঘুচল মোমিনুলের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ২৩ এপ্রিল, ২০২১ at ৭:৪৩ পূর্বাহ্ণ

আচার আচরণ, চলন, বলনে যেমন শান্তশিষ্ট তেমনি মাঠে ব্যাট হাতেও দারুণ শান্ত মোমিনুল হক। তবে খেলেন শৈল্পিক ক্রিকেট। যদিও এরই মধ্যে নিজের গায়ে টেস্ট ক্রিকেটারের লেবেলটা লাগিয়ে ফেলেছেন টাইগারদের টেস্ট অধিনায়ক। আর সেই টেস্টেই একটি বড় আক্ষেপ কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল মোমিনুলকে। আর সেটি হচ্ছে টেস্ট ক্যারিয়ারে বিদেশের মাটিতে কোন সেঞ্চুরি করতে না পারা। সে আক্ষেপ ঘুচেছে মোমিনুলের। দারুণ এক সেঞ্চুরি করে জবাবটাও দিলেন টেস্ট দলপতি। পূরণ করে ফেললেন দেশের বাইরে সেঞ্চুরি স্বাদ। টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড আগে থেকেই মোমিনুলের। এবার সে সেঞ্চুরি ১০ থেকে বেড়ে হলো ১১টি। তবে আগের সবকটিই ছিল দেশের মাঠে। তিন অঙ্কের জাদুকরি ছোঁয়া বিদেশের মাঠে তিনি পেলেন এই প্রথমবার। আগের দিনের ৬৪ রান নিয়ে গতকাল পাল্লেকেলে টেস্টের দ্বিতীয় দিন লাঞ্চের আগে শতরানের বহু কাঙ্ক্ষিত সেই মাইলফলকে পা রাখেন মোমিনুল ২২৪ বল খেলে। এটি মোমিনুলের সবচাইতে ধীর গতির টেস্ট সেঞ্চুরি। আগের সবচেয়ে ধীরগতির সেঞ্চুরিটি ছিল ১৭৩ বলে।
ধৈর্যের পরীক্ষায় উতরে পাওয়া এই অর্জনে মুছে গেল তার ক্যারিয়ারের একটি কালো দাগ। বিদেশের মাঠে কোনো সেঞ্চুরি না করে দেশের মাটিতে সবচেয়ে বেশি টেস্ট সেঞ্চুরি বিশ্বরেকর্ড এতদিন ছিল মোমিনুলের। সে রেকর্ড থেকে অবশেষে মুক্তি পেলেন মোমিনুল। দেশের মাটিতে মোমিনুলের সেঞ্চুরি বাংলাদেশের ক্রিকেটের নিয়মিত দৃশ্যের একটি। দেশের বাইরে গেলে সেই তিনি হয়ে ওঠেন অচেনা। এবারের সেঞ্চুরি আগে বিদেশের মাটিতে মাত্র ছয়টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে মোমিনুলের। ঘরের মাঠে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের গড় সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের মতোই ৫৬.৩৯। কিন্তু প্রতিপক্ষের মাঠে গড় ছিল কেবল ২২.৩০। তবে এবার বোধহয় সে ডেডলক খুলতে শুরু করেছে গতকালের সেঞ্চুরির মধ্য দিয়ে।
গতকালের সেঞ্চুরির আগে দেশের বাইরে মোমিনুলের সর্বোচ্চ ছিল ৭৭ রান । ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় সেই ইনিংস খেলার পর ১৭ ইনিংসে পাননি কোনো হাফ সেঞ্চুরি। এর মধ্যে চল্লিশ ছুঁতে পারেন কেবল একবার। শূন্য রানে আউট পাঁচবার। যদিও দেশের বাইরে মোমিনুলের শুরুটা বেশ ভালো হয়েছিল। ২০১৩ সালে শ্রীলংকাতেই প্রথম টেস্টে করেছিলেন ৫৫ রান। পরের টেস্টের প্রথম ইনিংসে করেন ৬৪ রান। কিন্তু সেই ধারা আর ধরে রাখতে পারেননি পরে। অবশেষে দেশের বাইরে ১৭ টেস্ট ও ৩৩ ইনিংসের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সেঞ্চুরির আবিরে নিজেকে রাঙাতে পারলেন মোমিনুল হক। অথচ বাজে ফর্মের কারণে ২০১৭ সালে নিজেদের শততম টেস্টে জায়গা হারিয়েছিলেন মোমিনুল । কারণ তার আগের টেস্টে করেছিলেন ৭ এবং ৫। এবার সেই শ্রীলংকায় গেলেন অধিনায়ক হয়ে। কাঁধে দায়িত্ব অনেক। দলের সামপ্রতিক বাজে পারফরম্যান্সে চাপও চেপে বসেছিল ভীষণ। তবে সব চ্যালেঞ্জের জবাবটা দিলেন চওড়া ব্যাটে দারুণ এক সেঞ্চুরি করে। গত ছয় ইনিংসে এটি তার তৃতীয় সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারের বড় এক আক্ষেপ ঘোচানো সেঞ্চুরিও হয়ে গেল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইফতারের ছবি সামাজিক মাধ্যমে না দেওয়ার আহ্বান রুবেলের
পরবর্তী নিবন্ধভারতের উত্তর প্রদেশে ট্রেন দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত