অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা চাচিই ভাতিজির খুনী

আজাদী অনলাইন | রবিবার , ৪ এপ্রিল, ২০২১ at ১১:১২ অপরাহ্ণ

নগরীর আকবশাহ থানার শাপলা আবাসিকে চাচিই গলাটিপে ভাতিজি কুলসুম আক্তারকে(১৪) খুন করেছে। আজ রবিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার জাহানের আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন চাচি সুমি আক্তার। বাংলানিউজ
সুমি আক্তারের স্বামী মো. আলমগীর হোসেনের বড় ভাই আনোয়ার হোসেনের মেয়ে কুলসুম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কুলসুমের দেড় বছর বয়সে বাবা মো. আনোয়ার হোসেন মারা যান। এরপর তার মা মাফিয়া বেগম অন্যত্র চলে যান। তখন কুলসুম আক্তারের দাদি ও ফুফুরা দেখাশুনা করতেন। চার-পাঁচ বছর আগে চাঁদপুর থেকে নগরীর আকবর শাহের ভাড়া বাসায় চাচা মো. আলমগীর হোসেন নিজের ছেলে ও মেয়েদের সঙ্গে লালন পালন করার জন্য কুলসুমকে নিয়ে আসেন।
কিছুদিন আগে সুমি আক্তারের স্বামী মো. আলমগীর হোসেন সৌদি আরব চলে গেলে ভাতিজি কুলসুম আক্তারকে কাজের মেয়ের মতো সারাদিন কাজ করাতেন সুমি আক্তার।
ঠিকভাবে ভরণ পোষণ দিতেন না এবং খারাপ আচরণ করতেন। কাজ করতে অনীহা দেখালে কুলসুম আক্তারকে মারধর করতেন সুমি আক্তার।
গত বছরের ২ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আসামি সুমি আক্তারের মেয়ের সঙ্গে মৃত কুলসুম আক্তারের ঝগড়ার বিষয়কে কেন্দ্র করে কুলসুমকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন সুমি আক্তার।
গত বছরের ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা (জ্বর, সর্দি, হাত পা ব্যথা) অসুস্থতায় ভুগছিল কুলসুম আক্তার।
স্থানীয় ওষুদের দোকান থেকে ওষুধ নিয়ে সেবন করার পর মোটামুটি সুস্থ হয়েছিল কুলসুম আক্তার।
গত ৩ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে কুলসুম আক্তারের মৃত্যুতে আকবর শাহ থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন সুমি আক্তার।
মামলায় সুমি আক্তার দাবি করেন গত ৩ জুলাই ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ফজরের নামাজ পড়তে উঠলে কুলসুম আক্তারকে নামাজ পড়তে ডাকতে যান। ডাকাডাকির সময় কুলসুমের কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে হাত স্পর্শ করলে, হাত ঠাণ্ডা ও শক্ত হয়ে আছে দেখতে পান সুমি আক্তার।
পরে ২ জুলাই রাত সাড়ে ১১টা থেকে ৩ জুলাই ভোরের যেকোনো সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে কুলসুম আক্তার মৃত্যুবরণ করে বলে সুমি আক্তার অপমৃত্যু মামলায় দাবি করেন।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (পাহাড়তলী) আরিফ হোসেন জানান, কুলসুম আক্তারের মৃত্যুতে থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হয়। মরদেহের ময়নাতদন্তে কুলসুম আক্তারকে শ্বাসরোধে হত্যা করার রিপোর্ট আসায় শনিবার সুমি আক্তারকে আটক করা হয়। থানায় জিজ্ঞাসাবাদে উল্টাপালটা উত্তর দেওয়া শুরু করেন সুমি আক্তার।
তিনি বলেন, “এক পর্যায়ে সুমি আক্তার হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন। আজ রবিবার আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারের সাবেক-বর্তমান ২ কাউন্সিলরসহ ৩ জনের ৫ দিনের রিমান্ড
পরবর্তী নিবন্ধশীতলক্ষ্যায় যাত্রীবাহী লঞ্চডুবিতে ৫ মরদেহ উদ্ধার