অনেক রেকর্ডের ম্যাচে সিটি কর্পোরেশনকে উড়িয়ে দিল মুক্তিযোদ্ধা

আল আমিনের ১৪৬ আর ইনজামামের ৫ উইকেট

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ২ মার্চ, ২০২৪ at ৭:৩৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে বরাবরই ঢাকার ক্রিকেটাররা জয় পরাজয়ের বড় নিয়ামক হয়ে দাঁড়ায়। তবে এবারে চট্টগ্রামের ক্রিকেটাররাই চট্টগ্রাম লিগে বেশ দাপট দেখাচ্ছে। অন্তত প্রিমিয়ার লিগের যে কয়টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে তাতে তেমনটিই দেখা যাচ্ছে। আর গতকাল মুক্তিযোদ্ধার হয়ে চট্টগ্রামের দুই তরুণ যা করে দেখালেন তাতো রীতিমত চোখ ছানাবড়া হয়ে যাওয়ার মত ব্যাপার। দলীয় রানের রেকর্ড, ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড, বিশাল জয়ের রেকর্ড সহ নানা রেকর্ডে মোড়ানো এক ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র রীতিমত উড়িয়ে দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন একাদশকে। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধার জয়টা ১৬২ রানের। এবারের প্রিমিয়ার লিগে প্রথম সেঞ্চুরি, প্রথম তিনশত রানের বেশি দলীয় স্কোর, প্রথমবারের মত দেড়শ রানের বেশি ব্যবধানে জয়, সব মিলিয়ে দারুণ এক ম্যাচ জিতল মুক্তিযোদ্ধা। লিগে এটি তাদের টানা দ্বিতীয় জয়। আর সিটি কর্পোরেশন একাদশের টানা দ্বিতীয় হার। দলীয় পারফরম্যান্সের অনন্য নিদর্শন দেখাল গতকাল মুক্তিযোদ্ধা। যেখানে কার পারফরম্যান্স এগিয়ে আর কারটা পিছিয়ে তা খুজে বের করা বেশ কঠিন।

এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রতিপক্ষ মুক্তিযোদ্ধাকে ব্যাটিং এর আমন্ত্রণ জানিয়েছিল সিটি কর্পোরেশন একাদশের অধিনায়ক। কত বড় ভুলটাইনা করেছেন তিনি সেটা টের পেতে বেশি সময় লাগেনি। মুক্তিযোদ্ধার দুই ওপেনার সাফায়েত ইফতি এবং আল আমিন মিলে উদ্বোধনী জুটিটাকে ৫০, ১০০, ১৫০ করে দুই’শর কাছাকাছি নিয়ে যান। নিজেদের প্রথম ম্যাচে এই দুই তরুনের উদ্বোধনী জুটি ছিল ৭৬ রানের। গতকাল সেটাকে তারা নিয়ে গেলেন ১৭৯ রানে। দুর্ভাগা বলতে হবে সাফায়েত ইফতিকে। ৯১ রান করে ফিরেছেণ তিনি সেঞ্চুরি মিস করে। তার ৯৭ বলের ইনিংসটিতে ১২টি চারের মার ছিল। দ্বিতীয় উইকেটে আরিফুলকে নিয়ে আরো ৬৫ রান যোগ করেন আল আমিন। আরিফুল ফিরেন ১৯ বলে ৩১ রান করে। ৯১ রান করে বিদায় নিয়ে ইফতি সেঞ্চুরি মিস করলেও সে পথে হাটেনি আল আমিন। তুলে নিয়েছেন এবারের লিগের প্রথম সেঞ্চুরি। তবে তার আগে অধিনায়ক রিপন এসে ফিরে গেছেন মাত্র ১ রান করে। আল আমিন হাফ সেঞ্চুরি করেন ৮৪ বলে। আর সেঞ্চুরি তুলে নেন ১১৪ বলে। এরই জাওয়াদ মোহাম্মদকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৯৩ রানের আরেকটি ঝড়ো জুটি গড়ে তোলেন আল আমিন। মাত্র ২৫ বলে ৪টি চার এবং ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৫০ রান করে ফিরেন জাওয়াদ। এর দুই রান পর ফিরেন আল আমিন। শুরু থেকে ৪৮ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করা আল আমিন ফিরেছেন নিজের দেড়শ রান থেকে মাত্র ৩ রান দুরে থাকতে। ১৪২ বলে ১৪টি চার এবং ৫টি ছক্কার সাহায্যে ১৪৭ রান করে রনি চৌধুরীর বলে ফিরেন আল আমিন। তার আগে এবারের লিগে সবচাইতে বেশি ব্যক্তিগত ইনিংসের মালিক হয়ে গেলেন এই ওপেনার। শেষ দিকে রতন দাশের ৮ বলে ৩ ছক্কায় ২২ রানের ঝড়ে ৩৬৬ রানের পাহাড়ে চড়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। সিটি কর্পোরেশন একাদশের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন রনি চৌধুরী এবং আশরাফুল বাবু।

৩৬৭ রানের পাহাড়সম টার্গেট। সে টার্গেটে ছুটতে গিয়ে শুরুতেই ইনজামামের তোপের মুখে পড়ে সিটি কর্পোরেশন একাদশের ব্যাটাররা। দ্রুত সাজ্জাদ, আরাফাত এবং মোরশেদকে ফেরান ইনজামাম। ৪৭ রানে তিন উইকেট নেই সিটি কর্পোরেশনের। এরপর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন অনিসুল এবং আরিফ রেজা। ৫০ রান যোগ করেন দুজন। দুজনই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। ৭১ বলে ৫৭ রান করা আনিসুলকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন জাওয়াদ। পঞ্চম উইকেটে আরিফ রেজা এবং লিখন মিলে ৬১ রান যোগ করেন। এজুটি ভাঙ্গার পর আর ঠিকতে পারেনি সিটি কর্পোরেশন একাদশের ব্যাটাররা। ৩৫ রান করা লিকনকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন রতন দাশ। আশরাফুল বাবুকে নিয়ে আরো ৩৪ রান যোগ করার পর ফিরেন আরিফ রেজা। ফিরে আসার আগে ৮৯ বলে করেন ৬৮ রান। শেষ পর্যন্ত ৪৭.৪ ওভারে ২০৪ রান করে অল আউট হয়ে গেলে সিটি কর্পোরেশন একাদশের কপালে জুটে ১৬২ রানের পরাজয়। মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে ৩০ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেণ ইনজামাম। ২টি উইকেট নিয়েছেন মনিরুজ্জামান। আজকের ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়ন এবং ইস্পাহানী স্পোর্টিং ক্লাব পরষ্পরের মোকাবেলা করবে। খেলাটি শুরু হবে সকাল ৯টায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিপিডিএল রুবিকন সিটি কর্পোরেট স্পোর্টস কার্নিভাল এর সমাপ্তি
পরবর্তী নিবন্ধটেক্সাসের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দাবানল জ্বলছে