মাচায় ফুটেছে বাহারি রঙের শিম ফুল, নিচে ফলেছে থোকায় থোকায় বরবটি। শুধু দুটি সবজি আবাদই নয়, কোথাও কোথাও মাচায় চাষ হয়েছে শিম, লাউ কিংবা চিচিঙ্গা। মাচার নিচে হলুদের গাছ। এমন মিশ্র চাষ পদ্ধতিতে সবজি আবাদ হচ্ছে রাঙ্গুনিয়ায়। এক জমিতে চাষ করছেন তিন থেকে চার রকমের ফসল, এতে ভালো ফলনও পাচ্ছেন রাঙ্গুনিয়ার প্রান্তিক কৃষকরা। এভাবে বাড়ির পাশে পতিত জায়গায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় বেড়েছে নিরাপদ সবজি চাষাবাদ। এতে এসব পরিবারে প্রতিদিনের পুষ্টি চাহিদা যেমন মিটছে; একইভাবে সবজি বাজারে বিক্রি করে বাড়তি টাকা আয়েরও সুযোগ পাচ্ছেন তারা।
উপজেলার মরিয়মনগর ইউনিয়নের কাটাখালি গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার কৃষক মোহাম্মদ নুরু মিয়া তার বাড়ির পাশে পতিত জায়গায় মাচায় করেছেন শিমের চাষ এবং মাচার নিচে সাথী ফসল হিসেবে করেছেন বরবটির চাষাবাদ।
এ সময় তিনি বলেন, বাড়ির পাশের পতিত জমিতে শিম এবং বরবটি একসাথে চাষাবাদ করেছি। বরবটিতে প্রচুর ফলন এসেছে এবং ইতিমধ্যে শিমেরও ফলন দেখা যাচ্ছে। এতে আমি একসাথে দুটো ফসল উৎপাদন করতে পারছি এবং আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি। এভাবে যে সমস্ত জমি বাড়ির পাশে পতিত পরে রয়েছে, সে সমস্ত জমিতে সকলেই সবজি চাষাবাদ করলে মোট আবাদ বাড়বে।
পোমরা এলাকার নঈম উদ্দিন জানান, বাড়ির পাশের খালি জমিতে লাউ, মিষ্টি কুমড়াসহ নানা জাতের সবজি আবাদ করেছি। ভালোই ফলন এসেছে এবং পরিবারের সবজির আবাদ অনেকটা পূরণ হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার শীল বলেন, বাড়ির পাশে মিশ্র চাষের বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে। বাড়ির মহিলারা কিংবা স্কুল কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও বাড়ির পতিত জায়গায় এরকম সবজি চাষাবাদ করতে পারেন। এতে কোন অতিরিক্ত শ্রমিকের প্রয়োজন হয় না এবং বাড়ির সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, কৃষকদের আবাদ বাড়াতে এবং পতিত জমিকে আবাদের আওতায় আনতে নানা প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এরমধ্যে মিশ্র ফসল আবাদ উল্লেখযোগ্য। কৃষকদের পতিত জায়গায় নিরাপদ সবজি চাষাবাদের জন্য সহযোগিতা করা হচ্ছে। বিশেষ করে পারিবারিক পুষ্টি বাগান প্রকল্পের অধীন কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার, পানি দেওয়ার ঝাঁজরি ও বেড়া দেওয়ার জন্য নেট দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যেই রাঙ্গুনিয়ায় বেড়েছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান। মিশ্র চাষাবাদ হওয়ায় এক জমিতেই একাধিক ফসলের বাড়তি ফলন পাওয়া যাচ্ছে। আমরা চাই প্রতিটি বাড়ির পতিত জায়গায় যাতে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করে নিজেরা নিজেদের চাহিদা মেটাতে পারে। সেজন্য আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হতে প্রতিনিয়ত কৃষকদেরকে বিভিন্নভাবে উদ্বুদ্ধ করছি।