অনলাইনে সরকারের ক্রয়কার্যে সন্ত্রাস কমলেও দুর্নীতি বেড়েছে : টিআইবি

| মঙ্গলবার , ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ

অনলাইনভিত্তিক সরকারি ক্রয়কার্য (জিপি) সম্পাদন হওয়ার ফলে সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে দরপত্র ছিনতাই, জমাদানে বাধা দেওয়া এবং শক্তি প্রদর্শনের ঘটনা বন্ধ হয়েছে। তবে এর মাধ্যমে দুর্নীতি নির্মূলে যে প্রত্যাশা করা হয়েছিল তা পূরণ হয়নি, বরং আরও বেড়েছে। এমনটি বলেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

গতকাল ধানমন্ডিতে টিআইবির নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশে ইসরকারি ক্রয় : প্রতিযোগিতামূলক চর্চার প্রবণতা বিশ্লেষণ (২০১২২০২৩)’ শীর্ষক গবেষণাপত্র উপস্থাপনের আগে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেন টিআইবির জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান। খবর বাংলানিউজের।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট লোকজন ও ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশে নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছে কাজগুলো দিয়ে থাকে। এতে দেখা যায়, একই প্রতিষ্ঠানের একাধিক দরপত্র জমা পড়ে। অন্য প্রতিষ্ঠানের দরপত্র পড়ার সুযোগ থাকে না। এর ফলে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হয়। ইজিপিতে নির্দিষ্ট ঠিকাদারদের বাইরের উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার যে আশা করা হয়েছিল তা হয়নি।

জিপির ক্ষেত্রে যেসব দুর্নীতি হয় : অনলাইনে সরকারি ক্রয়কার্যে শীর্ষ ৫ ভাগ ঠিকাদার মোট কাজের ২৬ ভাগ করছে এবং প্রতি বছরেই তাদের কাজের পরিধি বাড়ছে। অন্যদিকে নিচের দিকে ১০ শতাংশ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশ কাজ করছে এবং প্রতি বছর তাদের হিস্যা কমছে। সরকারি ক্রয়কার্যের একচতুর্থাংশ ক্রয়কার্যে সম্পন্ন হয় একটি মাত্র দরপত্রে। নির্দিষ্ট কিছু দরপত্র দাতা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা একক দরপত্রের মাধ্যমে ক্রয়কার্য সম্পাদন করে থাকে। সোনাইমুড়ি, বরগুনা ও দাগনভূঞা পৌরসভায় সর্বোচ্চ ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ একক দরপত্র পড়ে। আর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে (চসিক) পড়ে ৬২ দশমিক ৭০ শতাংশ। এরপরই রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরশন, ৫৫ দশমিক ২১ শতাংশ।

দরপত্র অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হওয়ার কারণে সরকারি অর্থ অপচয় হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব তুলে ধরে টিআইবির গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, সরকারি ক্রয়কার্যে চার শতাংশের নিচে দরপত্র জমা পড়লে তা অস্বচ্ছ কার্যক্রম বলে বিবেচিত হয়। সেখানে বাংলাদেশের চারটির নিচে দরপত্র জমা পড়ে ৪৬ শতাংশ। আর চারটির বেশি জমা পড়ে ৫৪ শতাংশ।

বর্তমানে ২৫ কোটি টাকার নিচে টেন্ডারিং হয় অনলাইনে। বাকি টেন্ডার কার্যক্রম অনলাইনের বাইরে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিশ্বে জাহাজভাঙা শিল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধচবিতে সাংবাদিককে মারধরের ঘটনা তদন্তে কমিটি