আর্চারী তীর ধনুকের খেলা। তবে সেটা আধুনিক তীর–ধনুক। আর এই তীর–ধনুকের খেলায় বাংলাদেশ পাচ্ছে অনেক সাফল্য। এবারের অলিম্পিকে যাচ্ছে মাত্র একজন ক্রীড়াবিদ। তিনি একজন আর্চার। অথচ এই সম্ভানাময় খেলাটি চট্টগ্রামে শুরু হলেও তেমন গতি পায়নি। তাই চট্টগ্রাম থেকে বের হয়নি তেমন কোন খেলোয়াড়। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার আর্চারী কমিটি গত চার বছরে দু একটি লিগ করলেও নানা সীমাবদ্ধতার কথা জানান তখনকার সম্পাদক শাহবাজ মুনতাসির চৌধুরী। তিনি জানান আসলে গত মেয়াদে আমাদের লম্বা একটা সময় চলে গেছে করোনায়। তারপরও আমরা দুটি লিগ করেছি। তবে আর্চারির সবচাইতে বড় বাধা যেটা তা হচ্ছে এই খেলার সামগ্রী। খুব দামি হওয়ায় সবার পক্ষে এই সামগ্রী ক্রয় করা সম্ভব হয়না। তাই ইচ্ছা থাকলেও প্রশিক্ষনের কাজটা চালানো সম্ভব হয়না। তবে এবারে যেহেতু আবার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুনতাসিরের ওপর তাই তিনি নতুন করেই সবকিছু শুরু করতে চান। অতীতে কি হয়েছে সে সব নিয়ে আর ভাবতে চাননা। সম্প্রতি চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সবকটি সাব কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে আর্চারির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নির্বাহি কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমানকে। আর সম্পাদক শাহবাজ মুনতাসির চৌধুরী।
কমিটির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেণ আমি যদিও এই ইভেন্টে নতুন তারপরও যেহেতু আমাদের সাধারণ সম্পাদক আমাকে একটি দায়িত্ব দিয়েছে সেটি পালনে আমি সচেষ্ট থাকব। তবে এবারের দায়িত্বটা সবার জণ্য কঠিন হবে। সবাইকে তাদের কর্মকান্ডের হিসেব দিতে হবে। আগে কি হয়েছে সেটি নিয়ে আর ভাবতে চাইনা। আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে। আর্চারি বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় একটি খেলা। কিন্তু এটি খেলতে গেলে অনেক খরচ। কারণ এই খেলার উপকরন গুলো বেশ দামি। তাই আমরা চাইব আগে কিছু উপকরণ কিনতে। কারন সবার পক্ষে এই উপকরন ক্রয় করা সম্ভব নয়। আমরা যদি কিছু উপকরন কিনতে পারি তাহলে সে গুলো দিয়ে অনুশীলনের কাজ চালাতে পারব।
আর আর্চারি মুলত তরুনদের খেলা। তাই তরুনদের গড়ে তুলতে হবে এই খেলার জন্য। যেহেতু পর্যাপ্ত খেলোয়াড় এখন নেই চট্টগ্রামে সেহেতু আমাদেরকে খেলোয়াড় তৈরি করতে হবে। সে জণ্য উপকরনের পাশাপাশি আমাদের অনুশীলনের একটি সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। আর্চারির মত খেলায় রেডিমেইড কিছু পাওয়া যাবেনা। সৃষ্টি করতে হবে। তবে সেজন্য সময় চাই। আশা করছি সময় নিয়ে সবকিছু করতে পারব।
কমিটির সম্পাদক শাহবাজ মুনতাসির চৌধুরী বলেণ আসলে আমাদের আন্তরিকতা বা ইচ্ছা থাকলেও আর্চারিতে সবকিছু করা সম্ভব নয়। কারণ এই খেলাটি অনুশীলন নির্ভর। এখানে আপনাকে নিশানা ঠিক করতে হবে। নিশানা ভেদ করতে হবে। আর সে জন্য অনুশীলনের বিকল্প নেই। তবে সবচাইতে বেশি যে জিনিসটা দরকার তা হচ্ছে খেলার উপকরণ। তাই আমরা চেষ্টা করব এবারের মেয়াদে একটি স্পন্সর নিয়ে আগে কিছু খেলার উপকরণ ক্রয় করে সেগুলো দিয়ে আমরা অনুশীলনের কাজটা করব। তিনি বলেন আমরা চাইছি যেন তেন লিগ বা টুর্নামেন্ট না করে আগে কিছু খেলোয়াড় তৈরি করি। তারপর তাদের দিয়ে বড় করে একটি লিগ আয়োজন করব। আসলে আমরা একটি জিনিস উপলদ্ধি করতে পারছি তাড়াহুড়ো করে আসলে কিছু হবেনা। দ্রুত ফল পাওয়ার মত কিছু নেই। যেহেতু এখন সবকিছু নতুন করে শুরু হচ্ছে, তাই আমাদেরকেও এখন নতুন করে ভাবতে হবে।
শোনা যায় চট্টগ্রামে আর্চারি প্রশিক্ষণের একটি একাডেমি রয়েছে। সে একাডেমির ছাত্রদের চট্টগ্রামের লিগে বা জেলা দলের হয়ে খেলতে দেওয়া হয়না। আর্চারি সম্পাদক বলেন আসলে গত মেয়াদে আমি লম্বা একটা সময় ছিলাম দেশের বাইরে। কি হয়েছে সেটা আমি জানিনা। তবে জেলা ক্রীড়া সংস্থা এখন একটা কঠোর অবস্থানে রয়েছে। যেসব একাডেমি বা ক্লাব জেলার জন্য খেলোয়াড় দেবেনা তারা চট্টগ্রামের লিগে খেলতে পারবেনা। তারপরও আমরা সবাই বসে আলাপ আলোচনা করে একটি সমাধানে পৌছা সম্ভব। কারন আমরা সবাই চাই চট্টগ্রামের খেলাধুলার উন্নয়ণ। তাই সবাই মিলে চেষ্টা করলে ফল আসবে।
আর্চারি কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে মোহাম্মদ রাশেদ, সজিব বিকাশ বড়ুয়া, ইঞ্জিনিয়ার আবু মোহাম্মদ রাশেদ চৌধুরী, কামরুল আহসান হাবিব এবং আবদুর রশিদ লোকমানকে।
তিনজন যুগ্ম সম্পাদক হলেন আবু বক্কর ছিদ্দিক, তানভীর আহমেদ চৌধুরী এবং আলী আহসান। সদস্যরা হলেন সালাউদ্দিন জাহেদ, এমডি মনসুরুল আলম চৌধুরী, আবুল ফয়সাল চৌধুরী, ফয়সাল বিন ফিরোজ, গুলশান আরা পান্না, লুৎফুল করিম সোহেল, হায়দার আলি এবং আলি হাসান রাজু।