অকাল বৃষ্টিতে আমনের ক্ষতি

রাউজান প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ২৭ অক্টোবর, ২০২০ at ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ

গত বৃহস্পতিবার থেকে দুদিন টানা বৃষ্টিতে রাউজানের বিভিন্নস্থানে আমন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মাঠে মাঠে রোপা আমন জমির পানিতে লুটিয়ে পড়েছে। দেখা যায়, প্রতিটি আমন ক্ষেত এখন ফুলে ফলে ভরা। আমন চাষিদের আশংকা যেসব ফসল পানিতে লুটিয়ে পড়েছে সেসব ফসল বেশির ভাগ নষ্ট হয়ে যাবে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানের আমন চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার উত্তারাংশের হলদিয়া, ডাবুয়া, চিকদাইর, গহিরা, কদলপুর এলাকায় আমন ধান পাক ধরতে শুরু করেছে। দক্ষিণাংশের বিলে বিলে এখন ফুলে ফুলে সজ্জিত আমন ক্ষেত। আশা জাগানো বাম্পার ফলনের মাঝে বৃষ্টির পানিতে ফুলে ফলে মাথা ভারী ধান গাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়ায় কৃষকরা উৎকন্ঠার মধ্যে পড়েছে। স্থানীয়রা বলেছেন ধান ক্ষেতে কাঁচা পাকা ধান ও ফুলের দোল খাওয়ার দৃশ্যে কৃষকরা আশায় বুক বেঁধেছিল। কৃষক কৃষাণীদের মুখে শোভা পাচ্ছিল হাসির ঝিলিক। তবে কৃষকরা সার্বক্ষণিক শংকার মধ্যে ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগের। সর্বশেষ অকাল বৃষ্টিতে তাদের মুখের হাসি ম্লান করে দিয়েছে। পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের সরকার পাড়ার কৃষক কৃষ্ণ দে বলেছেন, এবার তিনি আমন চাষ করেছেন আড়াই একর জমিতে। তার চাষাবাদ ঋণের টাকায় বর্গা জমিতে। জমিতে বাম্পার ফলনের দৃশ্য দেখে আশায় বুক বেঁধেছিলেন তিনি। এবার বৃষ্টিতে তার ফুলে ফলে ভরা ধান এখন মাটিতে লুটে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের লোকজনের মতে রাউজানে এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাদের হিসাব মতে এই উপজেলায় আমন চাষাবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে। শেষ পর্যন্ত আর কোনো দুর্যোগ দেখা না দিলে কৃষকরা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলা সম্ভব হবে। উৎপাদিত শুকনো ধান পাওয়া যাবে ৫২ হাজার ২০ মেট্রিক টন। আর এই পরিমাণ ধান থেকে চাল পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে ৩৪ হাজার ৭ শত মেট্রিক টন। কৃষি বিভাগের মতে অকাল বৃষ্টির মধ্যে যেসব ধান ফুলের মধ্যে পানিতে লুটে পড়েছে, সেগুলো আবার মাথা তুলে দাঁড়াবে। ক্ষতি তেমন হবে না।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, বেশি আমন চাষাবাদ হয়েছে হলদিয়া, ডাবুয়া, চিকদাইর, গহিরা ইউনিয়নে। এসব এলাকায় মাঠে মাঠে এখন কাঁচা পাকা ধান। তুলনামূলকভাবে চাষাবাদ কম হয়েছে পশ্চিম গুজরা, বিনাজুরী, উরকিরচর ও পৌর এলাকায়। যেটুকু জমিতে এখানে আমন চাষা হয়েছে সব জমিতে দেখা যায় বাম্পার ফলন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সঞ্জিব কুমার সুশীল বলেছেন, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে স্থায়ী পতিত জমির পরিমাণ ৩ শত ৪০ হেক্টর। খালের সাথে থাকা এসব পতিত জমিতে কৃষকরা চাষাবাদ করতে চান না জোয়ার ভাটার পানির চাপের কারণে। তিনি জানান এখানে আমনের পাশাপাশি কৃষকরা ৪ শত ৮৫ হেক্টর জমিতে মৌসুমী সবজি চাষ করেছে। এসব সবজির মধ্যে রয়েছে বেগুন, কচু, ঢেড়স, চাল কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া সহ বিভিন্ন ধরনের শাক। তিনি বলেন, এই বৃষ্টিতে ফসলের বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাব্বির আহমদ বলেছেন, রাউজানের কৃষকরা সব ধরনের আধুনিক সুযোগ সুবিধা পাওয়ায় উৎসাহ নিয়ে কৃষি কাজে নেমেছেন। তার আশা আগামীতে ঝড় বৃষ্টি না হলে কৃষকরা ভাল ধান পাবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফেরদৌস ওয়াহিদের ভাতিজিদের বাড়িতে ঢোকার ব্যবস্থা করতে আদালতের আদেশ
পরবর্তী নিবন্ধপতেঙ্গায় পূজা মণ্ডপে কাউন্সিলর প্রার্থী ফরিদুল আলমের নগদ অর্থ সহায়তা