এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের উত্তর পাশে অবস্থিত কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টের অবৈধ দখলে থাকা জায়গার কিছু অংশ ভেঙে দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। গতকাল সকালে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অবৈধ দখলে থাকা অবশিষ্ট অংশ নিজেদের খরচে ভেঙে ফেলতে হোটেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশানের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হোসেন। ২০০৯ সালের ২২ মে তৎকালীন চট্টগ্রাম ফুটবল খেলোয়াড় সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মান্নানকে টেইকওয়ে রেস্টুরেন্ট করার জন্য অস্থায়ীভাবে ৭৭৫ বর্গফুট খালি জায়গা বরাদ্দ প্রদান করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। যেখানে শর্ত হিসেবে ছিল কোনও স্থায়ী স্থাপনা নির্মান করা যাবে না। কাউকে সাবলেট দেওয়া যাবে না। প্রথমে কেজিএন নামে একটি রেস্টুরেন্ট চালু করা হয় সে জায়গায়। পরবর্তীতে সাবলেট দিয়ে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট নামে চালু করা হয়। এরই মধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ দেখতে পেয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ ৭৭৫ বর্গফুটের স্থলে প্রায় ৩৪০০ বর্গফুট দখল করে নিয়েছে। শুধু তাই নয় হোটেলের পাশে খেলোয়াড়দের অনুশীলনের জন্য যে খালি জায়গা রয়েছে সেটিতেও স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। ফলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ পরিচালক মো. আসলাম হোসেন উক্ত অবৈধ দখলে থাকা জায়গা উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসন এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বরাবরে চিঠি প্রদান করেন।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন গত ২৫ ডিসেম্বর উক্ত জায়গা উচ্ছেদের আদেশ জারি করে। তারই প্রেক্ষিতে গতকাল এই উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। সকালে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খেলোয়াড়দের অনুশীলনের জায়গায় নির্মাণ করা জুসবার ভেঙে দেন। এছাড়া হোটেলের পেছনের অংশে যে বর্ধিত অংশ দখল করা হয়েছে সেটিরও কিছু অংশ ভেঙে
দেওয়া হয়। বাকি অংশটুকু নিজেদের খরচে ভেঙে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সাথে যে অংশটুকু জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে বরাদ্দ হিসেবে পাওয়া গেছে সে অংশটুকু চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষকে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের চিঠিতে উল্লেখ করা হয় হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য বরাদ্দকৃত জায়গার বাইরে পানির রিজার্ভ ট্যাংক, স্টেডিয়ামের ২৫ নং গেটের দর্শকদের প্রবেশ পথসহ অন্যান্য খালি জায়গা হোটেলের কাজে ব্যবহার করে আসছিল। এছাড়া জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের মূল প্রবেশ পথটিও দখল করে যাতায়াতে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয় যেহেতু চট্টগ্রামে এখন মাঠের যথেষ্ট সংকট চলছে। সেহেতু এই অবৈধ দখলে থাকা জায়গাটি উদ্ধার করতে পারলে ছেলে মেয়েদের অনুশীলনের একটি ব্যবস্থা হবে। তারই প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি এবং জেলা প্রশাসক এই উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেন।
এদিকে গতকালের এই উচ্ছেদের কার্যক্রমের প্রশংসা করেছেন চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের অনেকেই। তারা বলেন, বর্তমান জেলা প্রশাসক চেষ্টা করছেন খেলার মাঠগুলো পুনরায় ফিরিয়ে আনার। এই উচ্ছেদ সে কাজকে বেগবান করবে বলে মনে করছেন অনেকেই। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক নগরীর আউটার স্টেডিয়ামকে নতুন করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছেন। আউটার স্টেডিয়ামের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সেখানে নতুন করে মাঠ তৈরির টেন্ডারও সম্পন্ন হয়েছে। এখন সেটা দৃশ্যমান হওয়ার অপেক্ষা।












