নগরীর ষোলশহর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত এলাকায় পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে যায় পুরো এলাকা। ভুক্তভোগীদের দাবি, রাস্তার ডিভাইডার এবং পাশের খালের রিটেইনিং ওয়াল জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। অপরদিকে ফ্লাইওভারের উপর থেকে পানি নামার পাইপগুলো সরু হওয়ায় সেখানেও তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত পথ তৈরি করে দেয়া হলে ক্ষণিক বৃষ্টিতে যে জলাবদ্ধতা তৈরি হয় তার অবসান হতো বলে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন।
দুই নম্বর গেট থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত রাস্তার পাশের চশমা খালটি বর্তমানে বড় আকারের একটি নালায় পরিণত হয়েছে। এই খাল দিয়ে পুরো এলাকার পানি কর্ণফুলীতে গিয়ে পড়ে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় পুরো এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছিল। এতে সামান্য বৃষ্টিতেই পুরো এলাকা পানিতে থৈ থৈ করে। চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মেগা প্রকল্পের আওতায় এই খালটি খনন করা হয়েছে। পরিষ্কার করা হয়েছে হাজার হাজার টন ময়লা-আবর্জনা। এতে করে খালটির অবস্থা আগের তুলনায় অনেকটা ভালো। তবে খালের রিটেইনিং ওয়াল পানি নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তারা বলেন, খালের পাড়ে রিটেইনিং ওয়াল রাস্তা থেকে আড়াই-তিন ফুট উঁচু। রিটেইনিং ওয়ালের কিছু স্থানে পানি নিষ্কাশনের পথ রাখা হয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এতে করে ভারী বৃষ্টির সময় রাস্তার পানি নালায় যেতে বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে অল্প বৃষ্টিতে এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়।
অপরদিকে দুই নম্বর গেট থেকে জিইসি মোড় পর্যন্ত এলাকার পানি নিষ্কাশনের নালাটি সফদর আলী সাহেবের বাড়ির কাছে। রাস্তার দুই দিক থেকে নালার মুখটি উঁচুতে অবস্থিত। এতে করে রাস্তায় পানি জমার পরে পানি যাওয়া শুরু হয়। কিন্তু পানি নিষ্কাশনের এই পথ সংকীর্ণ। ঠিকভাবে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় বৃষ্টিতে ওই এলাকা জলাবদ্ধ থাকে। একই সাথে রাস্তার মাঝখানের ডিভাইডারের কারণেও এক পাশের পানি অপর পাশে যেতে পারে না। এতে নালার বিপরীত পাশের পানি আটকা পড়ে। ডিভাইডারের নিচ দিয়ে পানি চলাচলের বড় পাইপ রাখা গেলে সুফল মিলবে বলে স্থানীয়রা জানান। এদিকে নিচের মতো ফ্লাইওভারেও জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। ফ্লাইওভারের পানি নিষ্কাশনের জন্য ৪ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞেষজ্ঞরা বলেন, মানুষের বাসাবাড়ির পানি নিষ্কাশনে ৪ ইঞ্চি পাইপ দেয়া হয়। ফ্লাইওভারে আরো বড় ব্যাসের পাইপ দেয়ার পরামর্শ দেন তারা। কারণ, পানির বোতল, চিপসের প্যাকেট গিয়ে পাইপগুলোর মুখ বন্ধ করে দেয়। এতে করে পানি নামতে পারে না। এখানে এমন ব্যাসের পাইপ দেয়া দরকার, যাতে বড় বোতলও বের হয়ে যেতে পারে।
এ ব্যাপারে সিডিএর পদস্থ একজন কর্মকর্তা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে বহুমুখী কার্যক্রম চলছে। নিরবচ্ছিন্নভাবে চলা কার্যক্রমের সুফল মিলবে।
এ ব্যাপারে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী বলেন, পানি নামার জন্য রিটেইনিং ওয়ালে কিছুদূর পরপর পথ রাখা হয়েছে। এত বেশি পথ রাখা হয়েছে যে, তা দিয়ে দুই রাস্তার পানি নিষ্কাশন সম্ভব। রাস্তার পাশে ফুটপাত নির্মাণ সম্পন্ন হলে পানি নিষ্কাশনে আরো গতি আসবে।












