চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে বাড়ানো হবে ফিডার জাহাজ

বন্দরে জরুরি বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৩ জুলাই, ২০২১ at ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ

তৈরি পোশাকসহ দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের পণ্য পরিবহনে গতিশীলতা আনতে চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে চলাচলকারী ফিডার জাহাজ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছ। রফতানিকৃত পণ্যের চালান যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর মাধ্যমে কানেক্টিং মাদার ভ্যাসেল পাওয়ার জন্য আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে বিরাজমান সংকট নিরসনে গতকাল (সোমবার) দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এক জরুরি সভার আয়োজন করে। বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহানের সভাপতিত্বে বন্দরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএএ), মেইন লাইন অপারেটর (এমএলও), বিজিএমইএ, এবং বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডাস এসোসিয়েশন (বাফা) সহ বন্দর ব্যবহারকারী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে বিভিন্ন অফডক থেকে রফতানি পণ্যবোঝাই কন্টেনার শিপমেন্ট দ্রুত ও সহজীকরণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বন্দরের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিমের সঞ্চালনায় সভায় বন্দরের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমডোর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বলা হয়, ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট সিঙ্গাপুর ও কলম্বোতে কন্টেনার ও জাহাজজট সৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ থেকে রফতানি পণ্যবাহী কন্টেনারগুলো যথাসময়ে মাদারভ্যাসেলে লোড দিতে পারছে না। এ দিকে বাংলাদেশ থেকে জাহাজগুলো প্রায় ৩০ শতাংশ অব্যবহৃত স্লট নিয়ে ছেড়ে গেছে এবং বিভিন্ন অফডকে প্রায় ৪২ হাজার ৪১০ টিইইউএস ও চট্টগ্রাম বন্দরে ২ হাজার টিইইউএস খালি কন্টেনার রয়েছে। বৈঠকে বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর যেসব অফডকে স্পেস সংকট রয়েছে সেগুলো থেকে ২০ ফুটের খালি কন্টেনারের কিছু চট্টগ্রাম বন্দরে এবং কিছু অন্য অফডকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বন্দরে থাকা ২০ ফুটের খালি কন্টেনার যাতে দ্রুত খালাস করা হয় বন্দর কর্তৃপক্ষ তা নিশ্চিত করবে। প্রয়োজনে ফোর্সলি শিপমেন্ট করবে।এর ফলে বন্দরে খালি জায়গা তৈরি হবে। ওই জায়গায় যেসব অফডকের জায়গা সংকট তারা তাদের খালি কন্টেনারের একটা অংশ পাঠিয়ে দেবে। ফলে অফডকগুলোতে জায়গা সংকট থাকবে না।
সভায় চট্টগ্রাম টু কলম্বো রুটে কন্টেনারবাহী ফিডার জাহাজ চলাচলকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শিগগিরএ রুটে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ফিডার জাহাজ নামানো হবে সংকটকালীন সময়ের জন্য। বিজিএমইএ বায়ারদের দ্রুত শিপমেন্ট করতে পারবে এমন শিপিং লাইন নির্বাচনের তাগাদা দেবে। দেশের সবচেয়ে বেশি আমদানি-রফতানি পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত মার্কস লাইন বাংলাদেশি পোশাক কারখানার চালানের চুক্তিবদ্ধ কন্টেনারগুলো দ্রুত শিপমেন্টের জন্য মাদারভ্যাসেলে স্লট বাড়াবে এবং ফিডার জাহাজ বাড়ানো বা অন্য লাইনের সহায়তা নেবে।
সভায় জানানো হয়েছে সংকটকালীন এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে কোনো প্রতিষ্ঠান কন্টেনার ফিডার ভ্যাসেল নামাতে চাইলে বন্দর অগ্রাধিকার দেবে। বন্দরের মূল জেটিতে প্রয়োজনে ১০টির বেশি কন্টেনার জাহাজ বার্থিং দেওয়া হবে। ইউরোপ-আমেরিকা যায় না এমন (রিজিওনাল কন্টেনার) ৪০ ফুট দীর্ঘ খালি কন্টেনার বন্দর ফোর্স শিপমেন্ট করবে।
গতরাতে একাধিক বন্দর ব্যবহারকারী বলেছেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে সমস্যাটি উপলব্ধি করে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে। দেশের সমুদ্র বাণিজ্যে এর সুফল মিলবে বলেও তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতাবিজে কাজ না হওয়ায় বৈদ্যকে কুপিয়ে হত্যা
পরবর্তী নিবন্ধরোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘে সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস