বিভিন্ন এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শূন্য থাকা এক লাখ ৮২২টি শিক্ষক পদে নিয়োগের আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ এনটিআরসিএ। গত ১৬ জুন জারি করা ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এখন পর্যন্ত সর্বাধিক শূন্যপদের বিপরীতে আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন প্রার্থীরা।
বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এ পদগুলোতে নিয়োগ সুপারিশ পেয়ে শিক্ষক হতে নিবন্ধিত প্রার্থীরা এক হাজার টাকা ফি দিয়ে আগামী ১ জুলাই পর্যন্ত আবেদন করার সুযোগ পাবেন, এ ফিয়ের বিনিময়ে তারা নিয়োগ সুপারিশ পেতে ৪০টি শূন্যপদে পছন্দ দিতে পারবেন। খবর বিডিনিউজের।
এনটিআরসিএর শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান শাখার উপপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুর রহিম খোন্দকার গতকাল রোববার বলেন, ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রার্থীরা আবেদন করেছে বলেও জানতে পেরেছি।
এ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচনে ‘খুব সময় লাগবে না’ বলে মন্তব্য করলেও কবে নাগাদ প্রার্থীরা নির্বাচিত হবেন সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত দিলে আবেদনের সময় বাড়ানো হতে পারে। আবেদন গ্রহণ শেষ হলে দ্রুতই টেলিটক ফল প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করবে বলে আশা করি।
কোন ধরনের প্রতিষ্ঠানে কতগুলো পদ : এক লাখ ৮২২টি শূন্য পদের মধ্যে বেসরকারি স্কুল ও কলেজের ৪৬ হাজার ২১১টি, মাদ্রাসার ৫৩ হাজার ৫০১টি এবং কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ১১০টি পদ রয়েছে। এসব পদে যারা নিয়োগ পাবেন, তারা এমপিও বা সরকারি অংশের বেতনভাতা প্রাপ্য। গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রার্থীর বয়স ২০২৫ সালের ৪ জুন ৩৫ বছর বা তার কম হতে হবে এবং নিবন্ধন সনদের মেয়াদ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের তারিখ থেকে তিন বছরের মধ্যে হতে হবে।
যেভাবে আবেদন : টেলিটকের নির্ধারিত ওয়েবসাইট http://ngi.teletalk.com.bd/ এ প্রবেশ করে প্রার্থীদের আবেদন করতে হবে। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০০ টাকা। একজন প্রার্থীর এক আবেদনের মাধ্যমে আলাদা আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ৪০টি শূন্যপদে পছন্দ দিতে পারবেন। আর পছন্দের ৪০টি প্রতিষ্ঠানে সুযোগ না পেলে মেধার ভিত্তিতে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ চান কিনা সে বিষয়ে মতামত দিতে পারবেন। এ নিয়োগে নারী কোটা থাকবে না বলে জানানো হয়েছে গণবিজ্ঞপ্তিতে। আগে শহরাঞ্চলের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট শিক্ষক পদের ৪০ শতাংশ এবং মফস্বল অঞ্চলের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট শিক্ষক পদের ২০ শতাংশ পদে নারী প্রার্থী নিয়োগ বাধ্যতামূলক ছিল, যা ‘মহিলা কোটা’ নামে পরিচিত ছিল। গত ১৫ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ নারী প্রার্থীদের জন্য আসন সংরক্ষণের এ বিধান বাতিল ঘোষণা করে।
যে প্রক্রিয়ায় নিয়োগ : বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এন্ট্রিলেভেলের শিক্ষক–প্রভাষক পদে নিয়োগ পেতে প্রার্থীদের শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি, লিখিত পরীক্ষা ও ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষা উত্তীর্ণ হলে প্রার্থীরা শিক্ষক নিবন্ধন সনদ পান। আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে, শিক্ষক নিবন্ধন সনদের মেয়াদ তিন বছর। এনটিআরসিএ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করলে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ওই সনদ ব্যবহার করে প্রার্থীরা নিয়োগ পেতে অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। আবেদন করা প্রার্থীদের মধ্যে যিনি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন, তাকেই ‘স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায়’ নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশ করবে এনটিআরসিএ। পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর নির্বাচিত প্রার্থীরা চূড়ান্ত সুপারিশ পেলে শিক্ষক পদে যোগদান করতে পারবেন।












