দেশে গত এক দিনে রেকর্ড ৮ হাজার ৩৬৪ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছে গেছে নয় লাখের কাছাকাছি। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা রয়েছে একশর উপরে। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল। দেশে মহামারী শুরুর পর থেকে সেটাই ছিল দেশে এক দিনে শনাক্ত রোগীর সর্বোচ্চ সংখ্যা। খবর বিডিনিউজের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কেবল ঢাকা জেলাতেই ৩১৬৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের প্রায় ৩৮ শতাংশ। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট ৮ লাখ ৯৬ হাজার ৭৭০ জনের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য এসেছে সরকারের খাতায়।
গত এক দিনে সারা দেশে আরও ১০৪ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে কেবল খুলনা বিভাগেই ৩৫ জনের প্রাণ নিয়েছে এ ভাইরাস।
সব মিলিয়ে দেশে করোনায় মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১৪ হাজার ২৭৬ জন হয়েছে।
আগের দিন দেশে রেকর্ড ১১৯ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই সংখ্যা এক দিনে সামান্য কমলেও এখনও তিন অংকের ঘরেই রয়েছে। আর দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আগের দিনের ৫ হাজার ২৬৮ জন থেকে এক লাফে বেড়েছে তিন হাজারের বেশি।
নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার বেড়ে ২৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ হয়েছে, আগের দিন যা ২১ শতাংশের সামান্য বেশি ছিল। সরকারি হিসাবে গত এক দিনে আরও ৩ হাজার ৫৭০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৭ হাজার ৬৭৩ জন।
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার সামাজিক বিস্তার ঘটায় জুনের শুরু থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় গতকাল থেকে আবার সারা দেশে লকডাউনের বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার।
ঢাকা নগরীসহ জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বাধিক ৩১৬৫ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। যশোরে ৪৫৪ জন, রাজশাহী জেলায় ৩২৩ জন, চট্টগ্রাম জেলায় ৩২৭ জন এবং খুলনা জেলায় ৩১১ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৫৬৪টি ল্যাবে ৩৫ হাজার ৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৬৫ লাখ ৪১ হাজার ৮৪০টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যা আগের দিন ২১ দশমিক ৫৯ শতাংশ ছিল। দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
ঢাকা জেলায় দৈনিক শনাক্তের হার আগের দিনের ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ শতাংশ হয়েছে। ঢাকা বিভাগে ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ৩৭ দশমিক ০৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪২ দশমিক ২০ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ৪১ দশমিক ৪০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪৬ দশমিক ২৮ শতাংশ হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে ২১ দশমিক ১২ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ২০ দশমিক ৬০ শতাংশ।
মৃত ১০৪ জনের মধ্যে ৫৮ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। তাদের ৬৮ জন ছিলেন পুরুষ, ৩৬ জন ছিলেন নারী। ৮২ জন সরকারি হাসপাতালে, ১৫ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ৭ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।