Home উপ-সম্পাদকীয় তথ্য কণিকা পূর্ণেন্দু দস্তিদার : অগ্নিযুগের বিপ্লবী ও লেখক

পূর্ণেন্দু দস্তিদার : অগ্নিযুগের বিপ্লবী ও লেখক

0
পূর্ণেন্দু দস্তিদার : অগ্নিযুগের বিপ্লবী ও লেখক

পূর্ণেন্দু দস্তিদার (১৯০৯১৯৭১)। চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহের অন্যতম বিপ্লবী। এছাড়াও তিনি একজন রাজনীতিবিদ ও লেখক। তিনি ১৯০৯ সালের ২০ জুন চট্টগ্রামের পটিয়ায় থানার ধলঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম চন্দ্র কুমার দস্তিদার। তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯২৫ সালে এন্ট্রান্স ও ১৯২৭ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আই.এসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। যাদবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হলেও ১৯৩০ সালে মাস্টার দা সূর্যসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখলের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে কলকাতায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জেলে বন্দি থাকা অবস্থায় ১৯৩৪ সালে তিনি ডিস্টিংশনসহ বি.এ পাস করেন এবং পরে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৪০ সালে জেল থেকে মুক্তি লাভের পর তিনি চট্টগ্রাম আদালতে আইন ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৪৮ সালে পূর্ববঙ্গ কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হওয়ার পর তিনি পুনরায় গ্রেফতার হন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জেলে আটক থাকা অবস্থায় পূর্ণেন্দু দস্তিদার চট্টগ্রাম জেলার হিন্দুদের জন্য সংরক্ষিত আসন থেকে কংগ্রেস প্রার্থী বিনোদ বিহারী দত্তকে পরাজিত করে পূর্ববঙ্গ আইন পরিষদের সদস্য হন। ১৯৫৫ সালে জেল থেকে মুক্তিলাভের পর তিনি পূর্ববঙ্গ আইন সভায় চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের স্মারক স্তম্ভ নির্মাণের প্রস্তাব উত্থাপন করেন এবং ১৯৫৬ সালে তা ব্যবস্থাপক সভায় গৃহীত হয়। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারির পর তিনি আবারও গ্রেফতার হন ও ১৯৬২ সালে মুক্তি লাভ করেন। ১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সংঘটিত ভারতপাকিস্তান যুদ্ধের সময় তাঁকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়। ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তিনি মুক্তি লাভ করেন। তাঁর জীবনের বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে কারাগারে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদে চট্টগ্রাম১১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। ব্যক্তিগত জীবনাদর্শ ও অভিজ্ঞতা থেকে বেশ কিছু সৃজনশীল গ্রন্থ রচনা করেছেন তিনি। এসবের মধ্যে রয়েছে: ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রাম’, ‘কবিয়াল রমেশ শীল’, ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’ প্রভৃতি। অনুবাদ করেছেন চেখভ ও মোপাঁসার গল্প। আজীবন ত্যাগী, দেশব্রতী ও মুক্তির স্বপ্নে বিভোর পূর্ণেন্দু দস্তিদার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারতীয় সীমান্তে যাবার পথে পথশ্রমে ক্লান্ত হয়ে ১৯৭১ সালের ৯ মে মৃত্যুবরণ করেন।