বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলেই শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়ন পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় এ জোটের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। এর আগে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়টি পর্যলোচনা করতে আগামী জুলাইয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে একটি স্বাধীন পর্যালোচনা মিশন আসবে বলেও গতকাল ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি। তিনি বলেন, নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ ইইউ পর্যবেক্ষক দল পাঠানো কার্যকরী হবে কিনা সেটি খতিয়ে দেখবে ওই মিশন। খবর বিডিনিউজের।
এদিন ঢাকায় লো মেরিডিয়ান হোটেলে ইউরোপ ডে উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন ইইউ রাষ্ট্রদূত। এ সময় ইতালি, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, জার্মানি, ডেনমার্ক, সুইডেন ও স্পেনের মিশনপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতি বছর ৯ মে ইউরোপে দিবসটি উদযাপন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে চার্লস হোয়াইটলি বলেন, আমরা এখানে রাজনীতিতে মধ্যস্থতা কিংবা হস্তক্ষেপের জন্য নই; শোনা ও বোঝার জন্য আমরা এখানে। আমরা সব দলের সঙ্গেই বসব এবং আমরা এখানে কোনো সংঘাত ও অস্থিতিশীলতা দেখতে চাই না। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের মানুষও এটাই চায়।
ইইউ প্রতিনিধি দলের জুলাইয়ের সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সফরকারী দলের ওই প্রতিবেদন ইইউর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি জোসেফ বোরেলের কাছে যাবে। তিনি বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেশে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি (বোরেল) বলেছেন, পর্যবেক্ষক মিশন তখনই মোতায়েন করা হবে, যদি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য কোন কোন বিষয়কে বিবেচনায় নেওয়া হবে, তা পর্যালোচনা মিশনের প্রতিবেদনে উঠে আসবে বলে জানান রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, তিনি (জোসেফ বোরেল) বলেননি যে, অমুক দল অংশগ্রহণ করতে হবে বা তমুক দল অংশগ্রহণ করতে হবে। পর্যালোচনা দল অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে দেখবে। তারা সব দলের সঙ্গে বৈঠক করবে এবং পর্যবেক্ষণ জানাবে যে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হিসেবে কি কি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হবে। এ কারণে আমরা এখন বলতে পারি না, অমুক দল যোগ দিলে বা না দিলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে কিনা। বিশেষজ্ঞরা এই বিষয় দেখবেন এবং তাদের রাজনৈতিক অভিমত দেবেন। পরে উচ্চ প্রতিনিধি তার সিদ্ধান্ত নেবেন।
আরেক প্রশ্নে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, আপনারা নিশ্চয় জানেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ প্রতিনিধি (জোসেফ বোরেল) বলেছেন, আমরা নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠাতে প্রস্তুত। আপনারা আরও জানেন, আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের পর্যবেক্ষক মিশন মোতায়েনের বিষয়ে একটি চিঠি পেয়েছি। পর্যবেক্ষক পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো বাধা যাতে না হয়, সেটার সিকিউরিটি হিসেবে এটা দরকার ছিল।
পর্যালোচনা দলকে স্বাধীন বিশেষজ্ঞ দল হিসেবে অভিহিত করে রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, এটা নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রথম ধাপ। এরা ইইউ কর্মকর্তা বা আমলা নয়। দলটি সব রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে বসবে। এটা শুধু নির্বাচনের বিষয় নয়, এখানে দেখা হবে একটি নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ও, যাতে নিরাপত্তার বিষয়ও রয়েছে।
বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় কী কথা হয়েছে–এমন প্রশ্নে চার্লস হোয়াইটলি বলেন, আমরা শুধু বিএনপির সঙ্গে বসিনি, আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসেছি। বিএনপি প্রকাশ্যে যে কথাগুলো বলে সেগুলো আমাদেরকেও বলেছে। আমরা সব দলের সঙ্গে বসব।