দৈনিক গ্যাস উৎপাদন বাড়বে ৬ কোটি ঘনফুট

ছয়টি কূপ খননের পরিকল্পনা তিন মাসেই লক্ষ্য অর্জন করতে চায় পেট্রোবাংলা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ

দৈনিক ৬ কোটি ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে পেট্রোবাংলা। ছয়টি কূপ খননের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোর এই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই লক্ষ্য অর্জন করতে চায় সংস্থাটি।
এদিকে আগামী বছরের মধ্যে ১৫টি কূপে দৈনিক ২১.৭ কোটি ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক অস্থিরতায় জ্বালানি নিয়ে সংকট এবং দেশের ঘাটতি মোকাবেলায় অভ্যন্তরীন খাত থেকে গ্যাস উত্তোলনে মনোযোগ দিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। কূপ খনন ও গ্যাস উত্তোলন বৃদ্ধি পেলে শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি জ্বালানি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে গ্যাস সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। এলএনজি আমদানি করে গ্যাস সেক্টর টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা এবং আমদানি বন্ধ হওয়ায় পরিস্থিতি ক্রমে নাজুক হয়ে ওঠে। বর্তমানে দৈনিক ৫৮ কোটি ঘনফুট এলএনজি আমদানি করে ন্যাশনাল গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। কোনো কারণে আমদানি ব্যাহত হলে জ্বালানি সেক্টরে সংকট সৃষ্টি হবে জানিয়ে পেট্রোবাংলার শীর্ষ একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশে বর্তমানে ২১টি গ্যাসফিল্ড থেকে
প্রতিদিন ২৩২ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করে সরবরাহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে দেশীয় তিনটি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণাধীন ১৭টি গ্যাসফিল্ড থেকে ৮৩ কোটি ঘনফুট এবং বিদেশি দুটি কোম্পানি (শেভরণ ও তালোর) মালিকানাধীন ৪টি গ্যাসক্ষেত্র থেকে উত্তোলন করা হয় ১৪৯ কোটি ঘনফুট গ্যাস। এই গ্যাস দিয়ে দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব না হওয়ায় আমদানি নির্ভরতা বাড়ছে। কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতি, ডলার সংকটসহ নানা প্রতিকূলতায় আমদানি প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ায় পেট্রোবাংলা দেশের গ্যাস ক্ষেত্রগুলোতে নতুন করে কূপ খননের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্থলভাগে গ্যাসের অনুসন্ধান এবং উত্তোলনের মাধ্যমে আগামী তিন মাসের মধ্যে অন্তত দৈনিক ৬ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন বাড়ানোর উপায় খোঁজা হচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এঙপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেঙ) গ্যাসক্ষেত্রে পাঁচটি এবং সিলেট গ্যাসফিল্ডস কোম্পানির (এসজিএফএল) ফিল্ডে একটি কূপ খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই ছয়টি কূপ থেকে দৈনিক ৬ কোটি ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়বে। পাশাপাশি আগামী বছরের মধ্যে বাপেঙের গ্যাসক্ষেত্রে ৫টি, এসজিএফএলের ৬টি এবং বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ডস কোম্পানির (বিজিএফসিএল) গ্যাসক্ষেত্রে ৪টি কূপ খনন করা হবে। এই ১৫ কূপ থেকে দৈনিক ২১.৭ কোটি ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়বে।
পেট্রোবাংলার পদস্থ একজন কর্মকর্তা বলেন, অভ্যন্তরীণ খাত থেকে গ্যাস উত্তোলন বাড়ানো গেলে এলএনজি আমদানির ওপর নির্ভরতা কমবে। গ্যাস আমদানির পেছনে শত শত কোটি টাকা চলে যাচ্ছে। তাই গ্যাস উত্তোলন বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। চলতি বছরের মাঝে এর সুফল মিলবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশ্রীলংকান তারুণ্যের জয়
পরবর্তী নিবন্ধসাগরের নিম্নচাপ