জরিমানা বৃদ্ধির পরও আসছে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্যের চালান

চট্টগ্রাম কাস্টমস

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ

মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ঠেকাতে পণ্যের আমদানি মূল্যের দ্বিগুণ থেকে সর্বোচ্চ চারগুণ পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। জরিমানার পরিমাণ বৃদ্ধির পরও বন্ধ হচ্ছে না মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি। অভিযোগ রয়েছে, মাঝে মাঝে কিছু চালান আটক হলেও অসাধু কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে অধিকাংশ পণ্য খালাস করে নেন আমদানিকারকরা। এতে আমদানিকারকরাও মিথ্যা ঘোষণা কিংবা ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য আমদানি করতে উৎসাহিত হন। ফলে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বেলজিয়াম থেকে ৭ হাজার ৬২ কেজি আঙুরের জুস ঘোষণায় বেভারেজ নিয়ে আসেন আমদানিকারক। গত ১৯ আগস্ট কাস্টমসের রাসায়নিক পরীক্ষায় মিথ্যা ঘোষণার বিষয়টি জানা যায়। এর আগে, চালানটি এসএসএল কচি জাহাজযোগে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। চালানটি খালাসে দায়িত্বপ্রাপ্ত নগরীর আগ্রাবাদ আজুশাহ লেইন এমএফ টাওয়ারের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ গত ২২ জুন বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। যার নম্বর-১০২২০১৩। চালানটির শুল্কায়নযোগ্য মূল্য আসে ৫ লাখ ৮৮ হাজার ৩৯৮ টাকা। জুসের মোট আমদানি শুল্ক আসে ৮৯ শতাংশ। কিন্তু বেভারেজ পণ্যের শুল্ক আসে ২৮৯ শতাংশ। অর্থাৎ মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির মাধ্যমে আমদানিকারক প্রায় সাড়ে ১১ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করেছে।
অপরদিকে ক্যানারি লিমিটেড ভারত থেকে আধা টন ‘সীডস কোটিং কোপলিমার ফর প্যাডি’ নামে কেমিক্যাল আমদানির জন্য সাউথ ইস্ট ব্যাংকে ১৬ হাজার ৯১৬ ডলারে এলসি খুলে। এরপর ভারত থেকে এমভি এক্সপ্রেস নাফটসি জাহাজ করে চট্টগ্রাম বন্দরে এসব পণ্য পৌঁছায়। পণ্য খালাসে দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান নগরীর পাঠানটুলি রোডের এসএনবি ট্রেডার্স গত ৮ জুলাই বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। যার নম্বর-সি-১১২৫৭৮৪। পরবর্তীতে নিয়ম মতে পণ্যের নমুনা পরীক্ষায় দেখা গেছে-আমদানিকারক কাঁচামাল ঘোষণায় ফিনিশড প্রোডাক্টস নিয়ে এসেছে। কাস্টমস কর্মকর্তাদের মতে- বিভিন্ন শস্যবীজের গুণগত মান ঠিক রাখতে বীজের ওপর কেমিক্যালের কোটিং ব্যবহার করা হয়।আমদানিকারক কেনারি লিমিটেড সেই কোটিং কেমিক্যাল প্রাইমারি ফর্মের আমদানির ঘোষণা দিয়ে সিনথেটিক পলিমার জাতীয় কেমিক্যাল নিয়ে এসেছে। এই দুই ধরণের পণ্যের শুল্কহারের পার্থক্য ৫৮ শতাংশ। অর্থাৎ আধা টন কেমিক্যালে আমদানিকারক ৮ লাখ টাকার বেশি শুল্ক ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম বলেন, মিথ্যা ঘোষণা পণ্য আমদানি রোধে চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার টিম সব সময় সতর্ক রয়েছে। এছাড়া আমরা নূন্যতম দ্বিগুণ জরিমানা করছি। তারপরও কিছু কিছু অসাধু আমদানিকারক মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি অব্যাহত রেখেছে। আমরা সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক ও সিএন্ডএফের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাও করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ
পরবর্তী নিবন্ধসিনোফার্ম ও মডার্নার আরো ৩ লক্ষাধিক ডোজ টিকা চট্টগ্রামে