বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় চট্টগ্রামেও যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদায় খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের উৎসব শুভ বড়দিন উদযাপিত হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে গতকাল খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ছিল উৎসবের আমেজ। দিনভর গির্জা, ধর্মীয় উপাসনালয় ও বাসাবাড়িতে প্রার্থনাসহ নানা আয়োজনে দিবসটি পালিত হয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় নগরীর পাথরঘাটার জপমালা রাণীর ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীর ক্যাথিড্রাল গির্জায় বাংলায় মহা–খ্রিষ্টযাগ, রাত ১২টায় একই গির্জায় ইংরেজিতে মহা–খ্রিষ্টযাগ, চান্দেরিয়ায় রাত ১১টায় বাংলায় মহা–খ্রিষ্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় ক্যাথিড্রাল গির্জায় বাংলায় মহা–খ্রিষ্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বাহির স্যিগনালে সকাল ১০টায় ও চান্দেরিয়াতে সকাল সাড়ে ৯টায় মহা–খ্রিষ্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে গতকাল বিকেলে কোনো খ্রিষ্টযাগ এর অনুষ্ঠান রাখেনি কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, বড়দিনকে সামনে রেখে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় ক্যাথিড্রাল গির্জায় বাংলায় মহা–খ্রিষ্টযাগ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আর্চ বিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদার। আর গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় মহা–খ্রিষ্টযাগ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ফাদার রিগেন ডি কস্তা।
জানা গেছে, গতকাল দুপুরে গির্জা অভ্যন্তরে গান, বাজনার মাধ্যমে আনন্দ উল্লাস করেন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা। এছাড়া দেশ ও জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য সমবেত প্রার্থনা করা হয়। গতকাল সন্ধ্যায় পাথরঘাটা জপমালা রাণীর ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীতে গিয়ে দেখা গেছে, গির্জার ভেতরে ও গির্জা এলাকায় সবখানে উৎসবের আমেজ। যিশু বেথেলহেমের যে গোয়াল ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তারই আদলে গির্জা অভ্যন্তরে সাজানো হয়েছে গোশালা। এছাড়া স্থাপন করা হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি।
খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গির্জার পাশাপাশি বড়দিন উপলক্ষে বাসাবাড়িতেও চলে নানা আনন্দ উৎসব। অনেকে আত্মীয়–স্বজন, বন্ধু–বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যান। সবমিলে বলা যায়, ধর্মীয় আচার, প্রার্থনা, কীর্তনসহ আরো নানান আনুষ্ঠানিকতায় উদযাপন করা হয়েছে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শুভ বড়দিন।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় পাথরঘাটার জপমালা রাণীর ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীতে যান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি সেখানে আর্চ বিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদারকে সাথে নিয়ে বড় দিনের কেক কাটেন। কেক কাটার আগে মেয়র দৈনিক আজাদীকে বলেন, ধর্ম, বর্ণ সবাই আমরা এক সাথে মিলেমিশে থাকব। এ জন্য আমাদের মন পরিষ্কার রাখতে হবে। সমস্ত বৈষম্য দূর করতে হবে।