Home আজকের পত্রিকা প্রথম পাতা অবসরে পাঠানো হলো চসিকের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে

অবসরে পাঠানো হলো চসিকের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে

0
অবসরে পাঠানো হলো চসিকের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে পরিশোধিত বিলের বিপরীতে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও আয়কর বাবদ ৮ কোটি ৩৬ লাখ ৬৪ হাজার ১০১ টাকা কেটে রাখলেও তা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়নি। একইসঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করে উন্নয়ন কাজের বিলের টাকা ব্যাংকের নির্ধারিত হিসাবে জমা না দিয়ে ঠিকাদারের নামে সরাসরি ইস্যু করা হয়। যার পরিমাণ ২৪ কোটি ৯১ লাখ ৯৬ হাজার ৩০৭ টাকা।

এমন আর্থিক অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। গত সোমবার এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি হলেও গতকাল বুধবার তা জানাজানি হয়।

অবসর পাঠানোর অফিস আদেশে স্বাক্ষর করেন চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদ। আজাদীকে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে (মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন) আনীত অভিযোগসমূহ তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক প্রমাণিত হওয়ায় এবং আয়কর ও ভ্যাটের কর্তনকৃত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা না দেয়ায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্মচারি চাকরি বিধিমালা ২০১৯ অনুয়ায়ী চাকুরি হতে অবসর প্রদান করা হয়।

চসিক সূত্রে জানা গেছে, আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা (নং ০১/২০২১) হয়। তিন দফা তদন্ত করে আনীত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।

জানা গেছে, পোর্ট কানেকটিং রোডের উন্নয়ন কাজের জন্য চারটি প্যাকেজে নিয়োগ দেয়া হয় ঠিকাদার। এর মধ্যে দুই নম্বর প্যাকেজে ৫০ কোটি ৫৮ লাখ ৬৩ হাজার ৩৩৯ টাকায় ‘মের্সাস রানা বির্ল্ডাস’কে ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর কার্যাদেশ দেয়া হয়। একইদিন তিন নম্বর প্যাকেজে ৫০ কোটি ৮২ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৮ টাকায় ‘মের্সাস রানা বিল্ডার্সসালেহ আহমদ (জেভি)’-কে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান দুটি কাজের বিপরীতে ঋণ নিয়েছে ইউসিবিএল, কুমিল্লা শাখা থেকে। এক্ষেত্রে হওয়া লিয়েন অনুযায়ী, উন্নয়ন কাজের বিলের টাকা ব্যাংকের নির্ধারিত হিসাবে (ইউসিবিএল, কুমিল্লা শাখা) জমা করতে হবে চসিককে। পরবর্তীতে চসিক মের্সাস রানা বির্ল্ডাসকে ২৮ কোটি ৬৯ লাখ ২০ হাজার ৩৬৫ টাকা এবং মের্সাস রানা বিল্ডার্সসালেহ আহমদ (জেভি)-কে ৩১ কোটি ৪৩ লাখ ৮৩ হাজার ১৮৬ টাকা পরিশোধ করে পৃথক ২০টি চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করে। এর মধ্যে ৬টি চেক ব্যাংকের নির্ধারিত হিসাবের নামে ইস্যু করা করা হয়। তার পরিমাণ ১৯ কোটি ৭২ লাখ ৭৭ হাজার ২১৮ টাকা। বাকি ১৪টি চেক সরাসরি ঠিকাদারের নামে ইস্যু করে সাইফুদ্দিন। এ ঘটনায় ২০২২ সালের ১০ মে দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপচিালক বাদী মো. আনোয়ারুল হক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সাইফুদ্দিনকে যুক্ত করে চার্জশিট দেয়া হয় গত ১৪ আগস্ট। যদিও ২১ আগস্ট শুনানিতে চার্জশিট গ্রহণ না করে তা পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত।

এছাড়া ২০১৮২০১৯ ও ২০১৯২০২০ অর্থবছরের চসিকের কার্যক্রমের উপর ৫টি অডিট আপত্তিমূলে ভ্যাট ও আয়কর বাবদ ৮ কোটি ৩৬ লাখ ৬৪ হাজার ১০১ টাকা কেটে রাখলেও তা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়। যা চসিকের তদন্তেও প্রমাণিত হয়।