তবু কৃষি জমিতে শিল্প স্থাপনের চেষ্টা

পাশে বৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল, আছে সব সুবিধা

মীরসরাই প্রতিনিধি | বুধবার , ৭ অক্টোবর, ২০২০ at ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ

এখনো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পার্শ্বে তিন ফসলি কৃষি জমিতে দেখা যায় বাণিজ্যিক শিল্প উদ্যোক্তাদের নানা সাইনবোর্ড! তাছাড়া বিভিন্ন সড়কের পাশে কৃষি জমি গোপনে কিনছে অনেকে শিল্প স্থাপনের উদ্যেশ্যে। অথচ এই মীরসরাইয়ে দেশের বৃহৎ শিল্প জোন বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীতে সকল সুবিধা নিশ্চিত করে শিল্প উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানাচ্ছেন নানামুখী আয়োজনে। শিল্প এলাকায় শিল্পকারখানা স্থাপনের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কৃষি জমি ও বসতবাড়িতে নয়, শিল্প এলাকায় শিল্পকারখানা স্থাপন করতে হবে। আমাদের কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। আমরা ইকোনোমিক জোন করে দিচ্ছি। এসব স্থানে শিল্পকারখানা নির্মাণের ক্ষেত্রে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে। আপনারা ব্যবসা করতে চান বা শিল্প করতে চান, তাহলে শিল্প এলাকায় যান। বাড়ির পাশের ধানের জমি নষ্ট করে শিল্প স্থাপন করবেন কেন?
সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণাকে কার্যকর পদক্ষেপে রুপান্তরিত করা যেন সময়ের দাবি। মীরসরাই উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুপাশের সবুজ ক্ষেত বেয়ে সারি সারি পাহাড়ের সুশোভিত দৃশ্যে মন প্রাণ যেন সকলের জুড়ে যায়। কিন্তু এই প্রশান্তিতে তীর বিধে উঠে কোথাও কোথাও যখন দেখা যায় সবুজের সমারোহের সেই কৃষি জমির মধ্যখানে কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড লাগানো থাকে। একসময় নয়দুয়ারিয়া মাঠ, মীরসরাই সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা, পূর্ব খৈয়াছরা মাঠ, কমলদহ মাঠে অনেক সাইনবোর্ড দেখা গিয়েছিল। কৃষি জমি রক্ষায় সরকারের প্রচার প্রচারনা মীরসরাইয়ের বিভিন্ন সভা সমাবেশে সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়াার মোশাররফ হোসেন এমপির ঘোষণা এবং উপজেলা পরিষদের প্রশাসনকে কৃষি জমি রক্ষার নির্দেশনা দেয়ার পর কমে আসতে শুরু করে এসব সাইনবোর্ড। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন কেউ শিল্প প্রতিষ্ঠান করতে চাইলে অথনৈতিক জোনে সকল সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে। তাই কৃষি জমি নয় অর্থনৈতিক জোনেই সকল উদ্যোক্তাকে শিল্প স্থাপন করতে হবে। কিন্তু প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে এখনো অনেকে প্রকাশ্যে না হলেও গোপনে কৃষি জমি কিনে চলছেন। অনেকে সাইনবোর্ড না দিলেও কেউ কেউ সাইনবোর্ডও দিচ্ছেন। সম্প্রতি এখনো ওয়াহেদপুর, নিজামপুর, খৈয়াছরা এলাকায় কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড দেখা যায়। কিন্তু প্রশাসনের এই বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেই এখনো।
এই বিষয়ে মীরসরাইয়ের সহকারী কমিশনার ভূমি সুবল চাকমা বলেন, এসব ভূমি ক্রেতাদের বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক পর্যায়ক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। মীরসরাই উপজেলার উপকূলাঞ্চলে চলমান দেশের বৃহৎ অর্থনৈতিক জোন বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরের কাজ। শিল্প জোনে শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী বিশেষ সুবিধায় দ্রুততার সাথে সকল কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে সেখানে দেশ বিদেশের ২০টি শিল্প প্লটে উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে।
শিল্প জোনের চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী এই বিষয়ে বলেন, সরকার কৃষি জমি রক্ষায় বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীকে সাজাচ্ছেন বিশ্ব মানের শিল্প এলাকা রূপে। এখানে সকল সুবিধা পাবে সবাই। তাই কৃষি জমিতে আর কোনভাবেই শিল্প উদ্যোগ নয়। এই অর্থনৈতিক জোনেই আহ্বান জানাচ্ছি সবাইকে উন্নত আগামীর সুবিধা নিতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ বৈদিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভা
পরবর্তী নিবন্ধশুভর বাসায় ‘রহস্যময়’ ব্রিফকেস