‘যে কোন ধরনের বিজ্ঞপ্তির জন্য ভাড়া দেওয়া হবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক অনুমোদিত।’
নগরের জাকির হোসেন রোডের দক্ষিণ খুলশী এলাকায় মূল সড়কের পাশে বাণিজ্যিকভাবে স্থাপিত একটি বিলবোর্ডে এভাবেই বিজ্ঞাপনদাতার দৃষ্টি আর্কষণ করা হচ্ছিল। সেখানে সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদন থাকার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ ২০১৫ সাল থেকে বিলবোর্ডের অনুমোদন দেওয়া বন্ধ রেখেছে চসিক। এর আগে নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে শহরের সৌন্দর্যহানিকর কয়েকশ বিলবোর্ড উচ্ছেদ করে সংস্থাটি। এছাড়া গত মাসে দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ সাইনবোর্ডও উচ্ছেদ করা হয়েছিল।
এ অবস্থায় খুলশীতে প্রকাশ্যে বিলবোর্ড স্থাপন করে ভাড়া দেওয়ার জন্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও প্রশ্ন উঠেছে চসিকের নীরবতা নিয়ে। তাছাড়া বিলবোর্ড মালিকের অনুমোদন থাকার দাবি সত্যি হলে সেটা নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ লোকজন। তারা বলছেন, চসিকের চেয়েও কি সেই বিলবোর্ড স্থাপনকারী শক্তিশালী?
এদিকে বিলবোর্ডটিতে থাকা মোবাইল নম্বরে গতকাল বিজ্ঞাপনদাতা পরিচয়ে কল করলে অপর প্রান্ত থেকে নিজের পরিচয় দেন জাহিদ। তিনি বলেন, আমাদের সাইনবোর্ডটির আয়তন ৮ বাই ১৫। এখানে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে অ্যাডভান্স ৫ হাজার টাকা দিতে হবে। এছাড়া প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা করে পরিশোধ করতে হবে। অ্যাডভান্সের জন্য আগে ১০ হাজার টাকা নেওয়া হতো। এখন করোনার জন্য কমানো হয়েছে।
সিটি কর্পোরেশন উচ্ছেদ করলে তখন জমা দেওয়া অর্থের কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উচ্ছেদ করবে না। এটার অনুমোদন আছে। পুরো শহরে তিনটি সাইনবোর্ডের অনুমোদন আছে। এর মধ্যে আমারটিও আছে। শহরে অনুমোদিত অপর দুই সাইনবোর্ডের একটি জিইসি এবং অপরটি আগ্রাবাদ এলাকায় বলে জানান তিনি। ‘যদি উচ্ছেদ করে?’ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যতদিন থাকবে ততদিনের জন্য টাকা পরিশোধ করবেন।
পরে আজাদীর পরিচয়ে ফোন করলে জাহিদ বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমোদনপত্র দিয়েছে। ওখানে সাইনবোর্ড লেখা আছে। এজন্য সিটি কর্পোরেশনকে একটা অ্যামাউন্ট দিয়েছি। ওটার রশিদও আমাদের দিয়েছে। সেখানে সাইজও লেখা আছে। ওরা (সিটি কর্পোরেশন) বলছে, শুধুমাত্র রাস্তার মাঝখানে ছাড়া ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় উনাদের সাথে কথা বলে বিলবোর্ড বা সাইনবোর্ড বসানো যাবে। রাস্তার মাঝখানে আড়াআড়িভাবে বিলবোর্ড দেওয়া যাবে না।
সিটি কর্পোরেশনের কোন সার্কেল অনুমোদন দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৬ নম্বর সার্কেল থেকে অনুমোদন নিয়েছি। প্রতি স্কয়ার ফিটের জন্য সিটি কর্পোরেশনকে কত টাকা পরিশোধ করেছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আসলে আমার এক বড় ভাই নিয়েছে, তাই বিষয়টা জানি না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবাইকে অনুমোদন দেয় না। অনুমোদন আছে সেটাও কাউকে বলে না। পলিটিক্যাল তো, পলিটিক্যালভাবে যেতে হয়।
জানতে চাইলে চসিকের রাজস্ব সার্কেল-৬ এর কর কর্মকর্তা (লাইসেন্স) আজাদীকে বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এর আগে দেওয়া হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।
বিলবোর্ডটির বিষয়ে জানতে চাইলে চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন আজাদীকে বলেন, ‘কালকেই (সোমবার) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।