নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও মানুষের ওপর ঋণের বোঝা

প্রদীপ ভট্টাচার্য্য | রবিবার , ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ at ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ

দেশ ও বিশ্ববাজারে নানান সৃষ্ট সংকট বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যেমন প্রভাব পড়েছে ঠিক তেমনি প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারেও। যার ফলে ক্রমান্বয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলছে। যা বর্তমানে অস্বাভাবিক আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে নিম্নমধ্যবিত্তের আয়ের সাথে ব্যয় এর কোনো মিল নেই। একের পর এক নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে বললেই চলে। ইতিমধ্যে ডিম, মাছ, মাংস, ডাল, আদা, পিঁয়াজ, রসুন, চাউল, হলুদ, তেল, গুড়ো দুধ, আলুসহ কাঁচা শাকসবজি ও সকল প্রকার মসলার মূল্য অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। অথচ দেশের মধ্যে অনেক নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কিন্তু কিছু সিন্ডিকেট মজুদদার ব্যবসায়ীর যোগসাজশেই বাজারকে শুধু অস্থির করে তুলেনি সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। বিশেষ করে আমাদের দেশে সাধারণত কোনো না কোনো সুযোগকে পুঁজি করে নিত্যপণ্যসহ সব জিনিসের দাম ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাড়িয়ে দিয়ে ফয়দা লুটে। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পরেও বর্তমানে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা ডলার ও পরিবহন সংকট, আমদানি রফতানির ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানান অজুহাত নিয়ে একের পর এক নিত্যপণ্যের দামের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতেই রয়েছে। যেমন ধরুন দেশের বিভিন্ন ক্ষেতখামারে কৃষকের বিক্রয়কৃত শাক সবজির দাম শহরে এসে দুই তিন গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু কেন? এর কোনো সদুত্তর নেই। অথচ দেশের ভেতর কাঁচা মালামাল ও দেশীয় পণ্যের ক্ষেত্রে পরিবহন খরচ কতোইবা হতে পারে তা সবার অজানা নয়। তারপরেও কেন নিজের দেশের নিত্যপণ্যের দামের ক্ষেত্রে এত তফাৎ। মূলত এর মাঝখানের যে অব্যাবস্থাপনা তৈরি হচ্ছে তা বাজার মনিটরিং এর মাধ্যমে খুঁজে বের করার দায়িত্ব কিন্তু সরকারের। কিন্তু বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূল্যের আকাশচুম্বীর ঊর্ধ্বগতির দিকে কারো নজর নেই। এ অবস্থা চলমান থাকলে অচিরেই সাধারণ, নিম্নমধ্যবিত্ত জনগণ দেউলিয়া হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

অথচ সাধারণ জনগণের আশা ছিল বর্তমান নতুন সরকার দেশে সিন্ডিকেট প্রথা ভেঙে নিত্যপণ্যের বাজারসহ সবজিনিসের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। বর্তমান সময়েও কিছু কিছু ক্ষেত্রে দৃশ্যমান সিন্ডিকেটের হাতবদলের কারণে দ্রব্যমূল্য সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করা কারও পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হলো অনতিবিলম্বে এসমস্ত অসাধু ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেট প্রথা ভেঙে নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও অতি মুনাফালোভীর অপচেষ্টা রোধ করা এবং প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, জরিমানা করা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমার ভাই আছে!
পরবর্তী নিবন্ধআমি যদি বাঙালি হই