এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচাইতে বড় চমক দিল আফগানিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার মত পরাশক্তিকে পরাজিত করে শুধু চমকই সৃষ্টি করেনি আফগানরা, সেমিফাইনালের পথেও থাকল।
নানা কারনে অস্ট্রেলিয়া এবং আফগানিস্তানের মধ্যকার ম্যাচটিতে ছিল ভিন্ন উত্তেজনা। নারীদের খেলার সুযোগ না দেওয়ার অজুহাতে একাধিক সিরিজ বাতিল করে অস্ট্রেলিয়া। তাই মাঠের বাইরেও এই লড়াইটি ছিল বেশ আলোচনার।
তার উপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কোন ফরমেটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় না পাওয়া, সেমিফাইনালের সম্ভাবনা জিইয়ে রাখা, সব মিলিয়ে এই ম্যাচটি ছিল আফগানদেতর জন্য বাঁচা-মরার।
আর সে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২১ রানে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করল আফগানিস্তান। সে সাথে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের সম্ভাবনাও জিইয়ে রাখল রশিদ খানের দল।
ব্যাট হাতে ইব্রাহিম জাদরান এবং রহমানুল্লাহ গুরবাজের দুর্দান্ত ব্যাটিং দুই পেসার নাবীন উল হক এবং গুলবাদিন নাইবের আগুন ঝরানো বোলিং আফগানদের ঐতিহাসিক জয় এনে দেয়। সে সাথে দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে আফগানরা ক্রিকেট ইতিহাসে সবচাইতে বড় জয়টা তুলে নিল।
সুপার এইট পর্বে আফগানরা শেষ ম্যাচটি খেলবে বাংলাদেশের বিপক্ষে আর অস্ট্রেলিয়া খেলবে ভারতের বিপক্ষে। তাই খালি চোখে সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা আফগানদেরই বেশি।
টসে হেরে ব্যাট করতে নামা আফগানিস্তান দারুন শুরু করে দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরানের হাত ধরে। দুই ওপেনার ১১৮ রান যোগ করে বিচ্ছিন্ন হন। ৪৯ বলে ৬০ রান করা গুরবাজকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন স্টয়নিস।
পরের ওভারে এডাম জাম্পার জোড়া আঘাত। তার প্রথম শিকার তিসন নাম্বারে নামা আজমত উল্লাহ। তিন বল জাম্পা ফেরান ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানকে। ৪৮ বলে ৫১ রান করেন তিনি। পরের তিন ওভারে ২৬ রান যোগ করে আফগানিস্তান। আর তাতেই আফগানদের স্কোর গিয়ে দাড়ায় ১৪৮ রানে।
করিম জানাত ৯ বলে আর মোহাম্মদ নবী ৪ বলে ১০ রান করে দলের এই ইনিংসে ভূমিকা রাখেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৩টি উইকেট নেন প্যাট কামিন্স আর জাম্পা নিয়েছেন ২ উইকেট।
১৪৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা অস্ট্রেলিয়া প্রথম ওভারেই হারায় ওপেনার ট্রেভিস হেডকে। নাবিন উল হকের বলে বোল্ড হন এই ওপেনার। নিজের পরের ওভারে মিচেল মার্শকে ফেরান নবীন। অভিজ্ঞ ডেভিড ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে খাদের কিনারায় পৌছে দেন মোহাম্মদ নবী।
৩২ রানে ৩ উএকট নেই অস্ট্রেলিয়ার। এরপর প্রতরোধ গড়েন মেক্সওয়েল এবং স্টয়নিস। ১১ রান করা স্টয়নিসকে ফিরিয়ে ৩৯ রানের এই জুটি ভাঙ্গেন গুলবাদিন নাইব। এরপর শুরু অস্ট্রেলিয়ার ধ্বস। মেক্সওয়েল হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিলেও দলকে জেতাতে পারেননি।
কারন সেই গুলবাদিনের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং। ৪১ বলে ৫৯ রান করে মেক্সওয়েল ফিরলে তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে যায় অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং। ২১ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ১২৭ রানে অল আউট হয় অস্ট্রেলিয়া ৪ বল বাকি থাকতে। ৪ উইকেট নিয়ে আফগানদেন জয়েল নায়ক গুলবাদিন নাইব। ৩ উইকেট নিয়েছেণ নাবীন উল হক।