ঢাকা সিটিতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা সিটি এলাকায় ব্যাটারিচালিত গাড়ি বন্ধ রাখার আগের নির্দেশ পরিবর্তন করে গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন। গতকাল দুপুরে আওয়ামী ওলামা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথির বক্তব্যের সময় এ কথা জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের স্বল্প আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা সিটি এলাকায় ব্যাটারিচালিত গাড়ি বন্ধের নির্দেশ পরিবর্তন করে চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্যে স্বল্প আয়ের মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে শুধু ঢাকা শহরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ২২টি মহাসড়কে আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকবে। খবর বাংলানিউজ ও বিডিনিউজের।
বিএসটিআইকে মান নির্ধারণের তাগিদ : এদিকে ব্যাটারিচালিত রিকশার মান নির্ধারণ করা যায় কিনা সে বিষয়ে নিয়ে কাজ করতে প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডর্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট–বিএসটিআইকে তাগিদ দিয়েছেন সিনিয়র শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা। গতকাল দুপুরে তেজগাঁওয়ের বিএসটিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, রিকশা যখন যন্ত্রচালিত হয়ে যায়, তখন দেখা যায় হাত–পা উপরে উঠে আছে কিন্তু গাড়ি চলছে। এটা অ্যাকসিডেন্ট হতে পারে। হাইওয়েতে আরও মারাত্মক। সারাদেশে প্রায় ২০ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা চলে। এখন আমরা কি এদের রুটি–রোজগারকে প্রতিহত করব? সেটি আমাদের উদ্দেশ্য নয় কিন্তু। এটার একটা স্ট্যান্ডার্ড ঠিক করে দেওয়া যেতে পারে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ জন্যই বলেন, তোমরা এটা ঠিক করে দাও। তোমরা জায়গাটাকে একটু ম্যাসেজ কর, রোলার্স কর, ওয়েইটটা (ওজন) একটু দিয়ে দাও। তাহলেই তো আর এই ব্যাটারিচালিত রিকশা…। আর এটার উপরে অনেকের জীবন–জীবিকা নির্ভর করছে। ক্লিয়ারলি ইনস্ট্রাকশন দিয়ে দিলে হয়ত তারা সেই ইনস্ট্রাকশন মেনে চলবে।
শিল্প সচিব বলেন, আমি বিএসটিআইয়ের ডিজি মহোদয়কে বলছিলাম, যদি এটা করা সম্ভব হয়, তবে রুটি–রোজগারও আমাদের ভালো থাকল। এখন যে বৈশ্বিক একটা পরিস্থিতির মধ্যে আমরা যাচ্ছি, এই অবস্থায় এতগুলো লোকের উপরে তাদের পরিবার ডিপেন্ড করছে। তাদের জন্য সমস্যা তৈরি হবে না। সব কিছুর স্ট্যান্ডার্ডটা আমাদের খুবই জরুরি।
গত কয়েক বছরে দেশে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ব্যবহার যেমন বেড়েছে, তেমনি প্যাডালচালিত রিকশায় ব্যাটারি লাগিয়ে সেগুলো দ্রুতগতির করার পাশাপাশি চালকের জন্য আরামদায়ক করা হয়েছে। কিন্তু এই রিকশাগুলোর কোনো বৈধতা ছিল না। ফলে পুলিশ প্রায়ই এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। আবার চাঁদা আদায় করে চলতে দেওয়ার ঘটনাও আসনে এসেছে। সম্প্রতি সরকারি এক আদেশে ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের ঘোষণা আসে, এরপর মিরপুরে রিকশা চালকরা ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায়। তবে এই রিকশাগুলোর কোনো নির্ধারিত মান নেই। চালকদেরও কোনো প্রশিক্ষণ নেই। বিএসটিআই সাইকেল রিমস, প্যাসেঞ্জার কার টায়ারস অ্যান্ড রিমস, ট্রাক অ্যান্ড বাস টায়ারস অ্যান্ড রিমস ও মোটরসাইকেল টায়ারস অ্যান্ড রিমস বিষয়ে মান নির্ধারণ করলেও ব্যাটারিচালিত রিকশার বিষয়ে কোনো মান নির্ধারণ করেনি।