স্ট্রোক হলে দ্রুত পদক্ষেপ সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়

এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামে সেমিনারে বক্তব্য

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৩০ অক্টোবর, ২০২২ at ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস পালন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘দ্য পাওয়ার অব সেভিং প্রেশাস টাইম’। গতকাল সকালে বর্ণাঢ্য র‌্যালির পাশাপাশি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এভারকেয়ার হাসপাতাল মিলনায়তনে আয়োজিত সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামের মহাব্যবস্থাপক ডা. ফজলে আকবর, হসপিটালের নিউরোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. হামিদুল হক, নিউরোলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, নিউরোসার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কো-অর্ডিনেটর ডা. মো. আনিসুল ইসলাম খান এবং নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী কনসালটেন্ট ডা. এ এম সাফায়েত হোসেন।

সেমিনারে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামের মহাব্যবস্থাপক ডা. ফজলে আকবর বলেন, স্ট্রোক হলে এক মিনিটে প্রায় ২২ লক্ষ নিউরন মৃত্যুবরণ করতে পারে। এজন্য বিশেষজ্ঞরা বলেন স্ট্রোক হলে রোগীদের জন্য প্রতিটি সেকেন্ডই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং, স্ট্রোক হয়েছে বোঝামাত্র সময় নষ্ট না করে তাৎক্ষণিক নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম উন্নত প্রযুক্তি সমৃদ্ধ বন্দর নগরীর সর্ববৃহৎ হাসপাতাল। অন্যান্য সকল রোগের মতো স্ট্রোকের রোগীদের সেরা সেবা নিশ্চিতে এ হসপিটাল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ডা. হামিদুল হক বলেন, স্ট্রোকের দুটি ধরন সম্পর্কে আমরা অবগত এবং উভয় ক্ষেত্রেই উপসর্গ প্রায় এক। তাই সঠিক পরীক্ষা ছাড়া রোগের ধরন নির্ণয় প্রায় অসম্ভব। স্ট্রোকে অনেকের জীবন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। তবে প্রাথমিক গাইডলাইন মোতাবেক চললে জটিল অবস্থা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। সকলের প্রতি আমার আহ্বান, স্ট্রোক হলে অবহেলা না করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

ডা. মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, স্ট্রোকের কারণে রোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর শ্বাসনালি, শ্বাস-প্রশ্বাস ও রক্ত সঞ্চালন সচল রাখার (সিপিআর থেরাপি এক্ষেত্রে বিশেষ কার্যকরী) চেষ্টা করতে হবে। রোগীকে একদিকে কাত করে বালিশ ছাড়া মাথা নিচু করে শোয়াতে হবে। চোখ ও চোখের প্রতিক্রিয়া বা সংকেতের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মূত্রথলির যত্ন নিতে হবে ও প্রয়োজনে ক্যাথেটার ব্যবহার করতে হবে। দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।

ডা. মো. আনিসুল ইসলাম খান বলেন, হেমোরেজিক এবং ইসকিমিক উভয় ধরনের স্ট্রোকে সার্জারির সুযোগ আছে। রোগীর জ্ঞানের মাত্রা কমে গেলে এবং সিটি স্ক্যানে রক্তের পরিমাণ এবং প্রেসার ইফেক্ট পর্যালোচনা করে আমরা সাধারণত সার্জারির সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। সার্জারি পরবর্তীকালে ফিজিওথেরাপির ভূমিকা আছে। অবশ কিছুদিন গেলে হাত-পা শক্ত হয়ে যায়। জোর করে টেনেও সোজা করা যায় না। নিয়ন্ত্রিত ফিজিওথেরাপি এই অবস্থা রোধ করতে সাহায্য করে।

ডা. এ এম সাফায়েত হোসেন বলেন, স্ট্রোক বিশ্বব্যাপী খুবই কমন একটি সমস্যা বা রোগ। অনেকের ধারণা, স্ট্রোক হচ্ছে হৃদযন্ত্রের (হার্টের) কোনো সমস্যা, যা ভুল ধারণা। প্রকৃতপক্ষে স্ট্রোক মস্তিষ্কের একটি রোগ। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণ। এছাড়া ধূমপান, মাদক, দুশ্চিন্তা, ডায়াবেটিস ইত্যাদি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই সকলের প্রতি আহ্বান, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ত্যাগ করুন, স্ট্রোকমুক্ত সমাজ গড়ুন।

সেমিনারে এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম থেকে সেবা নেওয়া দুজন স্ট্রোক রোগী উপস্থিত ছিলেন। তারা তাদের চিকিৎসাসেবার অভিজ্ঞতা জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাজকীয় কঠিন চীবর দান নিয়ে রাউজানে এলেন থাই উপপররাষ্ট্র সচিব
পরবর্তী নিবন্ধজিম্বাবুয়েকে ১৫১ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ