চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই) থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া একটি মালবাহী ট্রেন কুমিল্লায় লাইনচ্যুতির পর চট্টগ্রামের ৫টি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এদিকে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন শত শত যাত্রী। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চট্টগ্রাম স্টেশনে অপেক্ষা করেছেন যাত্রীরা।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগ এবং কন্ট্রোল রুম থেকে জানা গেছে, গতকাল সোমবার ভোর ৪টার দিকে কুমিল্লার রাজাপুর রেলস্টেশনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী মালবাহী কন্টেইনার ট্রেনের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ঘটনার কারণে প্রায় ৭/৮ ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীবাহী ট্রেন আটকা পড়েছে।
কুমিল্লার ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার জানান, দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনটি উদ্ধারে আখাউড়া ও লাকসাম থেকে দুটি রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে বগিগুলো উদ্ধার করলে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে সব ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে গেলেও বিকেল ৩টা থেকে থেকে যেসব ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা ওইসব ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে চট্টগ্রাম এসে পৌঁছতে না পারায় ৫টি ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়ে যেতে পারেনি।
মহানগর গোধূলী, সোনার বাংলা, মেঘনা, মেইল এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশিতা নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়ে যেতে পারেনি। এগুলোর সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার প্রকৌশলী আবুল কালাম চৌধুরী আজাদীকে জানান, সকাল থেকে সবগুলো ট্রেন চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছেড়ে গেছে। এগুলো কুমিল্লার আগে স্টেশনগুলোতে অবস্থান নিলেও বেলা ১২টার পর থেকে ট্রেন চলাচল স্বভাবিক হওয়ার পর সবগুলো ছেড়ে গেছে। গোধুলী-সোনার বাংলাসহ কয়েকটি ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হয়েছে। সোমবার সকালে সুবর্ণ এবং সিলেটের পাহাড়িকা ছিল না। এ কারণে যাত্রীদের দুর্ভোগ কম হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিকাল সাড়ে ৪টায় চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে শত শত যাত্রী অপেক্ষা করছেন প্লাটফর্মে। এ সময় কখন ট্রেন ছাড়বে নির্দিষ্ট করে বলতে না পারায় অনেকেই কাউন্টারে গিয়ে টিকিট ফেরত দিতে ভিড় করতে দেখা গেছে।
মহানগর গোধূলী ট্রেনের যাত্রী নূর মোহাম্মদ জানান, আড়াইটায় স্টেশনে এসেছি। এখন ৫টা বাজে। ট্রেন কখন আসবে কেউ বলতে পারছেন না। বিকাল সাড়ে ৫টায় সোনার বাংলা ট্রেনের যাত্রী সাইফুল ইসলাম জানান, জরুরী কাজে আজকে (গতকাল) রাতে ঢাকায় গিয়ে মঙ্গলবার (আজ) সকালে কাজ সেরে সন্ধ্যা বা রাতে ফিরে আসার কথা। কিন্তু হঠাৎ ট্রেন দুর্ঘটনায় সব ট্রেন আটকে আছে।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরীর কাছে রাত ১১টায় জানতে চাইলে তিনি জানান, বিকাল ৩টার গোধুলী সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ছেড়ে গেছে। ৫টার সোনার বাংলা রাত সাড়ে ৮টায় ছেড়ে গেছে। রাত সাড়ে ১০টার মেইল এঙপ্রেস ১২টার দিকে ছেড়ে যেতে যাওয়ার কথা জানান তিনি। এছাড়াও ১১টার তূর্ণা নিশিতা ২৫ মিনিট বিলম্বে ছেড়ে যাবে বলে জানান তিনি।
এদিকে ঢাকাগামী ৭১১ উপকূল এক্সপ্রেস লাকসামে, চট্টগ্রামগামী ৭৪২ তূর্ণা এক্সপ্রেস শশীদলে, চট্টগ্রামগামী চট্টগ্রাম মেইল ইমামবাড়ীতে আটকে ছিল। এছাড়াও সেকশন ব্লক থাকায় চট্টলা, বিজয়, মহানগর প্রভাতী এঙপ্রেসের চলাচলও ব্যাহত হয়।