সৈকতে ভেসে আসা নতুন জাতের জেলিফিশও খাওয়ার উপযোগী

বোরির বিজ্ঞানীদের অভিমত

কক্সবাজার প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ৪ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:০৮ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার সৈকতে প্রায়ই নানা জাতের মরা জেলিফিশ ভেসে আসে। গত কয়েকদিন ধরে ভেসে আসছে ‘ক্রেম্বায়োনেলা’ বা ‘বল নুইন্না’ জাতের শত শত মরা জেলিফিশ। এই প্রজাতির জেলিফিস খাওয়ার উপযোগী বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বোরি) বিজ্ঞানীরা।

বোরি মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর জানান, বিশ্বে প্রায় ২৫০০ প্রজাতির জেলিফিশ রয়েছে। এরমধ্যে ১২ প্রজাতির জেলিফিশ খাওয়ার উপযোগী, যারমধ্যে একটি হল ‘ক্রেম্বায়োনেলা’ বা ‘বল নুইন্না’ জাতের জেলিফিশ। ইন্দোনেশিয়ায় ‘ক্রেম্বায়োনেলা’ জাতের জেলিফিশ দামি ও জনপ্রিয় খাবার। এছাড়া জেলিফিশ ঔষুধ ও প্রসাধন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। তিনি জানান, গত বুধবার থেকে কক্সবাজার শহরের কলাতলী পয়েন্টসহ বিভিন্ন সৈকতে সামুদ্রিক জোয়ারের সাথে ভেসে আসছে ‘ক্রেম্বায়োনেলা’ বা ‘বল নুইন্না’ জাতের শত শত মরা জেলিফিশ। এর আগে গতবছর ৩ ও ৪ আগস্ট, ১১ ও ১৩ নভেম্বর এবং ৩ ডিসেম্বর ভেসে এসেছিল ‘ধলা নুইন্যা/বর নুইন্না’ জাতের জেলিফিশ। আর দুটোই খাওয়ার উপযোগী। অথচ আমাদের দেশে খাদ্য হিসাবে জেলিফিশের প্রচলন নেই বলে জেলেরা জালে ধরা পড়লে তা সমুদ্রে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে সেই মরা জেলিফিশগুলো জোয়ারের সাথে সৈকতে ভেসে আসে এবং পোকা মাকড়ের খাদ্য হয়। বেলাল হায়দর জানান, শত শত বছর ধরেই সামুদ্রিক জোয়ারের সাথে কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসছে মরা জেলিফিশ। একসময় এই মরা জেলিফিশ বা নুইন্না জমা হতো শহরের উত্তরাংশে বাঁকখালী নদী ও সমুদ্র মোহনার চরে। আর সেই ‘নুইন্না’ থেকেই শহরের বিমানবন্দর সংলগ্ন ২ নং ওয়ার্ডের নামকরণ হয়েছে নূনিয়ারছড়া, যা স্থানীয়ভাবে নুইন্নাছরা নামে পরিচিতি পেয়েছে। অথচ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জেলিফিশ থেকে তৈরি হচ্ছে সার, কীটনাশক, ওষুধ ও কসমেটিক্সসহ নানা পণ্য। জেলিফিশ রপ্তানী করে বাংলাদেশও প্রতিবছর শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করতে পারে। আর সুনীল অর্থনীতিতেও নতুন দিগন্ত উম্মোচন করতে পারে।

বিশ্বের বিভিন্ন সৈকতে জেলিফিশ একটি আতংকের নাম। তবে কক্সবাজার সৈকতে কখনও জেলিফিশ নিয়ে আতংকের ঘটনা শোনা যায়নি। এখন সেই জেলিফিশ নিয়ে দেশের সুনীল অর্থনীতিতে নতুন দুয়ার তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

বর্তমানে বোরি বিজ্ঞানীরা সাগর থেকে এই প্রাণির আহরণ, প্রক্রিয়াজাত, বাজারজাত ও খাবার রেসিপি কৌশল নিয়ে গবেষণা করছেন। জেলিফিশের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করতে এ সামুদ্রিক প্রাণিটিকে নিয়ে বহুমাত্রিক গবেষণা করা হচ্ছে বলে জানান বোরি মহাপরিচালক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনামীদামি ব্র্যান্ডের মোড়কে নকল পণ্য
পরবর্তী নিবন্ধজেসমিনের মৃত্যু মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তথ্য