কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণ দুর্নীতিতে জড়িত আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। গতকাল শনিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিকেল চারটার দিকে নগরীর এমইএস কলেজ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন কক্সবাজার এলএ শাখার শীর্ষ দালাল মুহিব উল্লাহ ও সার্ভেয়ার কেশব লাল দেব। কেশব লাল দেব বর্তমানে নেত্রকোনা জেলার ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় সার্ভেয়ার হিসেবে কর্মরত। এর আগে গত ২১ জানুয়ারি কালারমার ছড়া ভূমি অফিসের তহসিলদার জয়নাল আবেদীনকে গ্রেপ্তার করে দুদক।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি র্যাবের অভিযানে ঘুষের ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকাসহ গ্রেপ্তার হন কক্সবাজার এলএ শাখার সার্ভেয়ার ওয়াশিম খান। ওই ঘটনায় ১০ মার্চ চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারি পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে সার্ভেয়ার মো. ওয়াসিম খানকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর মামলা তদন্তে নেমে গত বছরের ২২ জুলাই কক্সবাজারের শীর্ষ দালাল সেলিম উল্লাহ এবং ৩ আগস্ট দালাল সালাউদ্দিন ও কামরুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় মুহিব ও কেশবকে।
দুদকের তদন্তে উঠে আসে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পাওয়া ক্ষতিপূরণের চেক ব্যাংকে নগদায়ন হওয়ার সাথে সাথে গ্রেপ্তার হওয়া মহিব উল্লাহ নির্দিষ্ট ঘুষ কিংবা কমিশনের ৩০-৫০শতাংশ নিজের ব্যাংক হিসেবে ট্রান্সফার (স্থানান্তর) করে নিত। কখনো নগদ টাকা উত্তোলন করে নিজের একাউন্টে জমা করতেন মহিব উল্লাহ। কক্সবাজার ভূমি অধিগ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে বহু সম্পদের মালিক হয়েছেন মুহিব। তদন্তে নেমে এর সত্যতা পায় দুদক।
দুদকের তদন্তে উঠে আসে, যেখানে ভূমি অধিগ্রহণের সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা কর্মচারী কিংবা তাদের আত্মীয় স্বজন বসবাস করেন সেখানকার বিভিন্ন ব্যাংকে আরটিজিএস করে টাকা পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় যারা মুহিব উল্লাহর ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা তুলেছেন তারা প্রত্যেকেই তার সিন্ডিকেটের লোক এবং ভূমি অধিগ্রহণের কমিশন বাণিজ্যের সাথে জড়িত। ভূমি মালিকদের ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার পর তাদের কাছ থেকে নগদে উত্তোলন করে ওই টাকা হতে নিজের অংশ রেখে বাকী টাকা ঘুষ হিসেবে সার্ভেয়ারসহ এলএ শাখার কর্মকর্তাদের দিয়ে দিতেন। একইভাবে শনিবার গ্রেপ্তার হওয়া আরেক সার্ভেয়ার কেশব লাল দেব ও তার স্ত্রী মুক্তা রাণী দাশের ব্যাংক একাউন্টেও মুহিব উল্লাহ দুই মেয়াদে দুই লাখ টাকা প্রদান করেন বলে দুদক জানতে পারে।