মুক্তির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব

ড. সেলিনা আখতার | সোমবার , ১৫ আগস্ট, ২০২২ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ


১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর একজন কর্মবীর, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও কালজয়ী মহান পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি যথার্থভাবে আপন পরিচয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করলো। বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনায় বাঙালির বাঙালিত্ববোধ ও জাতীয়তাবাদের মূল উন্মেষ ঘটে। তাইতো বাংলার মানুষ শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দিয়ে বরণ করে নিয়েছে। তাকে হৃদয় হতে উৎসারিত ভালোবাসা দিয়ে পিতৃত্বের মর্যাদায় আসীন করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির ত্রাতা, বাঙালির ঠিকানা ও জীবনবোধের পরিচয় এবং বিশ্বে বাঙালির মাথা উঁচুকারী নেতা।

১৯৪৭ সালে ভারত বর্ষ বিভক্ত হয়ে দুটি রাষ্ট্র হল – ভারত ও পাকিস্তান। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে পাকিস্তানি শাসকচক্রের বৈষম্য-নীতি, শোষণ ও অগণতান্ত্রিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তাঁর সংগ্রামের কথাই বারবার ঘুরে ফিরে আসে। এমনি পরিস্থিতিতে মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে পরিচিত ও প্রবীণ নেতাদের ভিড়ে যিনি নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে স্বল্প সময়ে সম্ভাবনাময় রাজনীতিবিদ হিসেবে, সংগ্রামী ও সাহসী নেতৃত্বের ইমেজ নিয়ে সর্বত্র পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৭ সালের আগস্ট থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত ২৪ বছর কেটে যায় নবগঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তানে বাংলার মানুষের এবং বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। বঙ্গবন্ধুর জীবনের এই অধ্যায়ের প্রায় পুরো সময়টাই কেটে গেছে পাকিস্তানীদের হাতে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হয়ে এবং কারা-অভ্যন্তরে। আর ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালের মধ্যরাত থেকে ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে মুক্তি পাওয়া পর্যন্ত নয় মাস কেটে যায় সুদূর পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে। মুক্তির পরের সাড়ে তিন বছর সময় অতিবাহিত হয় একদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ে তোলার নিরবিচ্ছিন্ন কঠোর প্রচেষ্টায় এবং একই সাথে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত সামলাতে। শেখ মুজিবের স্বকীয় নেতৃত্বের আভাস পাওয়া যায় কিশোর বয়স হতেই।

কিশোর বয়সে খ্যাতিমান রাজনৈতিক নেতা শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নিকট গোপালগঞ্জে নির্ভীক কণ্ঠে তাঁদের গ্রামের স্কুলের সমস্যার দাবি তুলে ধরেছিলেন। আঠারো বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময় এক ঘটনায় প্রতিবাদী ভূমিকা গ্রহণের জন্য তরুণ শেখ মুজিব গ্রেফতার হন এবং সাত দিন হাজতবাস করেন। বিদ্রোহী এই বালক যে একদিন স্বদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে এমন সম্ভাবনা অনুধাবন করা গিয়েছিলো তখনি। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই শুরু হয়ে যায় ষড়যন্ত্র। প্রথমেই একটি নতুন রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজন দেখা দেয় সংবিধান। আর সংবিধানের প্রয়োজনে প্রথম পরিচ্ছদেই দেখা দেয় পাকিস্তান রাষ্ট্রের রাষ্ট্রভাষা কি হবে এ নিয়ে সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানে খোদ পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতার একগুঁয়েমি নীতির ফলে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মুখের ভাষাকে পদদলিত করে উর্দুকেই রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেবার ঘোষণা উচ্চারিত হলো। এর প্রতিবাদে পূর্ব বাংলার বিক্ষুব্ধ ছাত্র সমাজ জিন্নাহর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। শুরু হলো বাংলা ভাষার দাবিতে আন্দোলন। বঙ্গবন্ধু জেলের ভিতরেই বাংলা ভাষার দাবিতে অনশন শুরু করলেন।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্ত ফ্রন্টের অভূতপূর্ব বিজয় হলো। শেখ মুজিব যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী নিযুক্ত হলেন। ১৯৫৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের বিজয়ী নেতা হিসেবে শিল্প এবং দুর্নীতি দমন বিভাগের মন্ত্রী নিযুক্ত হলেন। পাকিস্তানী পাঞ্জাবি কুচক্রীদের অব্যাহত ষড়যন্ত্রের মুখে কেন্দ্র এবং প্রদেশে সরকার উৎখাত করে ৯২(ক) ধারা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ ভেঙে দেয়া হলো। দেশ শাসনে এক নৈরাজ্যকর অবস্থার সৃষ্টি হলো। দীর্ঘ ষড়যন্ত্রের পর ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর ইস্কান্দার মির্জা সামরিক শাসন জারি করে পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নিলেন। মাত্র ২০ দিনের মাথায় স্বঘোষিত ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান বন্দুকের নলের মাথায় ইস্কান্দার মির্জাকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করে পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করে সর্বময় ক্ষমতা গ্রহণ করলেন।

১৯৫৮ সালের ২৭ অক্টোবর আইয়ুব খান ক্ষমতায় বসে সামরিক শাসন জারি করে দেশ শাসন শুরু করলেন। বহু নেতা কর্মীকে তিনি জেলে পাঠালেন। রাজনীতি করা রাজনীতিবিদদের জন্য করে দিলেন নিষিদ্ধ। রাজনীতিবিদদের উপর জারি করলেন নিষেধাজ্ঞা। এবডো আইনের আওতায় এনে রাজনীতিবিদদের হয়রানি শুরু করলেন, এই নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হলেন শেখ মুজিব। অনেকে আইয়ুব খানের কাছে লিখিত মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পেলেন, কেউ কেউ রাজনীতি করবেন না বলে মাফ চাইলেন, আবার কেউ শুরু করলেন মার্শাল সাহেবের দালালি। শহীদ সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তান ত্যাগ করতে বাধ্য হলেন। একমাত্র শেখ মুজিব স্বৈরাচারী আইয়ুবের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আন্দোলন-সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। ১৯৬২ সালে আইয়ুব খান দেশে একটি শাসনতন্ত্র উপহার দিলেন বটে কিন্তু যেহেতু এটি জনপ্রিতিনিধিদের দ্বারা রচিত নয় এবং স্বৈরাচারের একক সৃষ্টি তাই শেখ মুজিবসহ অনেক নেতৃবৃন্দ এর বিরোধিতা করলেন এবং পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে গঠিত হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্টেরও তীব্র বিরোধিতা করা হলে তা আন্দোলনের মুখে বাতিল হয়ে গেল। আইয়ুব খানকে মোকাবিলা করার জন্যই শেখ মুজিব হয়ে উঠলেন জনগণের বন্ধু, অবিসংবাদিত নেতা এবং বঙ্গবন্ধু।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে ২১-দফার ভিত্তিতে যুক্তফ্রন্টের কাছে মুসলিম লীগের শোচনীয় পরাজয় ছিলো তাদের রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণার বিপর্যয়। তেমনি বাঙালির জাতীয় সত্তা সংরক্ষণের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা প্রকাশ পায় প্রথম বাংলা ভাষা আন্দোলনে, পরে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের পরাজয়ে এবং সর্বশেষে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছয়-দফা আন্দোলনে। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বাতিল ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির পর, ১৯৭০-এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় এবং গণরায় নস্যাতের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানে সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৬ দফার ভিত্তিতে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন ছিল নির্বাচনী ওয়াদা। নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদের ৩১৩টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসনে জয়ী হয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। আর প্রাদেশিক পরিষদের ৩১০টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি পায় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হলে জেনারেল ইয়াহিয়া খান ও ভুট্টো ষড়যন্ত্র শুরু করে। ভুট্টো পাকিস্তানের ক্ষমতা দখল করতে চান। সামরিক বাহিনীও ক্ষমতা হাতছাড়া করতে চায় না।

১৯৭১ সালের ১ মার্চ হতে ২৫ মার্চ পর্যন্ত পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলন বাঙালি জাতির মুক্তির সংগ্রাম ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। যুগান্তকারী ভাষা-আন্দোলন ও ঐতিহাসিক ৬-দফা কর্মসূচীর পর ১১-দফার ভিত্তিতে ঊনসত্তরের গণ আন্দোলন এবং অসহযোগ আন্দোলনের সূচনায় ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি ইতিহাসে এক অমর গাথা। তিনি বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ নিউজ উইক সাময়িকীর রিপোর্টার রবার্ট জেঙ্কিন্স বঙ্গবন্ধুকে যথার্থই ‘পোয়েট অব পলিটিক্স’ বা ‘রাজনীতির কবি’ বলে অভিহিত করেছিলেন। ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সাল। বাঙালি জাতির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন। সেদিন বিমান বন্দরে বঙ্গবন্ধু বিজয়ী জনতার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘আমি জানতাম বাংলাদেশ স্বাধীন হবে। আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। আমি আমার মানুষের কাছে ফিরে এসেছি।’ তাঁর সংগ্রামী জীবনে কখনো মাথানত করেননি তিনি। বঙ্গবন্ধু ইচ্ছা করলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। বঙ্গবন্ধু তা গ্রহণ করেননি। তিনি একটি জাতির স্বীকৃতি আদায় করেছেন। স্বাধীনতা দিয়েছেন। দিয়েছেন একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। ২৫ মার্চ রাতে পাক সামরিক বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লক্ষ তাজা প্রাণ এবং ২ লক্ষ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাঙালি জাতি একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর স্বাধীন বাংলাদেশের শাসনভার হাতে নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার দেশকে ওরা ধ্বংস করে দিয়েছে। আসুন ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমরা সবাই দেশ গড়ার কাজ করি।’ বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র জমা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যারা না বুঝে, না শুনে ঝোঁকের বশে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন, বঙ্গবন্ধু তাদেরকে সাধারণ ক্ষমা করেন; তবে যুদ্ধাপরাধীদেরকে ক্ষমা করেননি। তিনি সকলকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার আহবান জানান। বঙ্গবন্ধু সেদিন বলেছিলেন, ‘আমাকে পাকিস্তানের যে কারাগারে রাখা হয়েছিল তারই পার্শ্বে আমার জন্য কবর তৈরি করা হয়েছিল। আমি শুধু তাদেরকে বলেছিলাম, আমার বেঁচে থাকার কোন সাধ নেই। আমার লক্ষ লক্ষ বাঙালিকে তোমরা হত্যা করেছ। আমাকেও হত্যা করতে পার। তবু আমার অনুরোধ আমার মৃত্যুর পর আমার লাশটা বাংলার মাটিতে পাঠিয়ে দেবে’। বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানীরা মারার সাহস করেনি। মুজিব জয়ী হন। ফিরে আসেন বাংলার শ্যামল প্রান্তরে। আর বাঙালিরা মুজিবকে জাতির জনকের আসনে বসায়। এক জাতি, এক দেশ – বাংলাদেশ; আর সেই জাতি ও দেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু।

বঙ্গবন্ধুর ভাবনা জুড়ে ছিলো হাজার বছরের বাংলা ও বাঙালি। তিনি বলেছেন, ‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সাথে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি ও অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখার ইতিকথা কেবল পাকিস্তান আমলে অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের যুগের নয়, তারও আগের। বাংলার দুঃখী মানুষের কথা তাঁর রাজনৈতিক কর্মে ও ভাবনায় কৈশোর থেকেই স্থান করে নিয়েছিলো। আর এ কারণেই তাঁকে প্রদত্ত ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি জনগণের ভালোবাসার দান হিসেবে সার্থক হয়ে উঠেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম তথা রাজনৈতিক ইতিহাসকে বাংলাদেশের মর্মকথার নৈর্ব্যক্তিক ইতিহাস, বাংলাদেশের বহির্জগতের রাজনীতি, সমাজ ও অর্থনীতির ইতিহাস থেকে বিচ্ছিন্ন করে চিত্রিত করা সম্ভব নয়। একটি সমাজ, জনজীবন বা জাতির ভাবধারাতে স্থান নির্দেশই শুধু ইতিহাসের বিষয়বস্তু নয়, তার বিচার-বিশ্লেষণও ইতিহাসের বিষয়। তাই বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ইতিহাস সর্বতোভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাস।

জাতির পিতাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার মধ্যদিয়ে বাঙালির সত্তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী, কুচক্রী, ও যড়যন্ত্রকারীদের সেই অভিলাষ পূরণ হয়নি। সমকালীন বিশ্ব ইতিহাসে সবচেয়ে নির্মম ট্র্যাজেডি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড। এর চেয়ে মর্মপীড়া ও দুঃখজনক ঘটনা ইতিহাসে আর কিছু হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির ধ্রুবতারা। বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু একে অপরের পরিপূরক। জাতীয় শোক দিবসে গভীর শ্রদ্বা নিবেদন করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি। জাতির পিতাসহ এই দিনের সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
লেখক: প্রফেসর, ম্যানেজমেন্ট বিভাগ ও সভাপতি, চট্টগ্রাম বিম্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১৫ আগস্ট যেন বাংলার আরেক কারবালা
পরবর্তী নিবন্ধনবোত্থিত জাতির স্বপ্ন-সম্ভাবনায় অভিঘাত