ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলায় যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের বিনিয়োগকারী জর্জ সোরোসের তীব্র সমালোচনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। গতকাল শনিবার অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে এক আলোচনা সভায় সোরোসকে ‘বুড়ো, ধনী, একগুঁয়ে এবং বিপজ্জনক’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
বলেন, এ ধরনের মানুষ মনে করেন তিনি যা ভাবেন, বিশ্ব সেভাবেই চলবে। তিনি বসে আছেন নিউ ইয়র্কে। তিনি এখনও মনে করেন, গোটা বিশ্ব কীভাবে চলবে সেটি তার দৃষ্টিভঙ্গিই নির্ধারণ করে দেবে। এ ধরনের মানুষ, এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি এবং এ ধরনের সংগঠনগুলো আসলে মতামত গঠনের জন্য সম্পদ
ব্যবহার করে। তার মতো মানুষেরা মনে করেন, তাদের পছন্দমতো ব্যক্তিরা নির্বাচনে জিতলে সে নির্বাচন ভাল হয়েছে। আর তা না হলে সে দেশের গণতন্ত্র ত্রুটিপূর্ণ। মজার বিষয় হচ্ছে, এসবই খোলামেলা সমাজের পক্ষে ওকালতি করার নামে করা হয়। খবর বিডিনিউজের। জর্জ সোরোস সমপ্রতি জার্মানির মিউনিখে
আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আগে এক বক্তব্যে আদানি গোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা বিতর্ক নিয়ে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করেছিলেন। গত বৃহস্পতিবারের ওই বক্তব্যে মোদীর সমালোচনা করে সোরোস বলেছিলেন, ‘ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু দেশটির নেতা, মোদী
গণতান্ত্রিক নন। মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দেওয়াটা তার উল্কাগতির উত্থানের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। মোদী খোলা এবং রুদ্ধ সমাজ দু’য়ের সঙ্গেই নিবিড় সম্পর্ক রক্ষা করে চলেন।’
জর্জ সোরোস একজন হাঙ্গেরিয়ানন–আমেরিকান ব্যবসায়ী এবং সমাজসেবী। ভারত এবং মোদী নিয়ে তার মন্তব্যকে ‘ইউরো আটলান্টিক দৃষ্টিভঙ্গি’র প্রতিরূপ বলে অভিহিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আমাদের অবশ্যই বিতর্ক এবং কথোপকথনের সুযোগ থাকতে হবে। পাশাপাশি
থাকতে হবে ওইসব মূল্যবোধ, যেগুলো গণতন্ত্রকে সংজ্ঞায়িত করে। কারণ, বিশ্ব পুনরায় ভারসাম্যপূর্ণ এবং ইউরো–আটলান্টিক নির্ভরতামুক্ত হয়ে উঠেছে।’
জয়শঙ্কর আরও বলেন, এ ধরনের কথাবার্তা আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করে। আমরা এমন একটি দেশ, যে দেশটি ঔপনিবেশিকতার মধ্য দিয়ে গেছে। বাইরের হস্তক্ষেপ হলে কী ধরনের বিপদ ঘটে তা আমরা জানি।’ সোরোস এর আগেও মোদী সরকারের সমালোচনা করেছিলেন। গত কয়েক বছরে বহুবারই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন এই ধনকুবের।












