মাছ না ধরেই ফিরছে কক্সবাজারের জেলেরা

লঘুচাপের কারণে সাগরে ফের সতর্কতা সংকেত

কক্সবাজার প্রতিনিধি | সোমবার , ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৯:৪৪ অপরাহ্ণ

লঘুচাপ-নিম্নচাপের কারণে সপ্তাহজুড়ে চলা আবহাওয়া বিভাগের সতর্কতা সংকেত প্রত্যাহারের মাত্র তিন দিন পর আবারও লঘুচাপ তৈরি হলো বঙ্গোপসাগরে।

আজ সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আবহাওয়া বিভাগ সাগরে ট্রলার চলাচলের ওপর ফের ৩নং সতর্কতা সংকেত জারি করেছে।

এ খবর পেয়ে সাগরে মাছ ধরারত জেলেরা মাছ ধরা বন্ধ করে ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজারের অধিকাংশ ট্রলারই ঘাটে ফিরেছে বলে জানিয়েছে ট্রলার মালিক সমিতি।

উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টির আশংকা করছে আবহাওয়া বিভাগ। জেলেরাও আবহাওয়া বিভাগের জারি করা দুর্যোগের আশংকায় দুপুরের পর থেকে ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে বলে জানান কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

তিনি জানান, এ নিয়ে গত দেড় মাসে সাগরে চতুর্থবারের মতো লঘুচাপ তৈরি হলো।

এর আগে চলতি মাসের ৯ তারিখ লঘুচাপ সৃষ্টির কারণে সপ্তাহজুড়ে চলা আবহাওয়া বিভাগের সতর্কতা সংকেত প্রত্যাহারের পর গত ১৬ তারিখ ট্রলারগুলো মাছ ধরতে গিয়েছিল। আর এর মাত্র তিন দিন পর ফের সাগরে লঘুচাপ তৈরির কারণে আবারও মাছ না ধরেই ফিরতে হলো জেলেদের।

ট্রলার মালিকরা জানান, এর আগে গত ১৮ আগস্ট একই কারণে সাগরে সতর্কতা সংকেত জারি করে আবহাওয়া বিভাগ। এসময় সাগর থেকে ফেরার পথে অন্তত দু’টি বোটডুবির ঘটনা ঘটে এবং এতে ৮ জন জেলে মারা যায়। প্রায় এক সপ্তাহ পর আবহাওয়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে সাগরে পুনরায় মাছ ধরা শুরু হয়।

এর আগেও একই কারণে গত ৬ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সাগরে মাছধরা বন্ধ থাকার পর আবহাওয়া দপ্তর সতর্কতা সংকেত প্রত্যাহার করায় গত ১৬ আগস্ট থেকে ট্রলারগুলো ফের সাগরে মাছ ধরা শুরু করেছিল কিন্তু মাত্র দুই দিন পর গত ১৮ আগস্ট একই কারণে আবহাওয়া দপ্তর ফের ৩নং সতর্কতা সংকেত জারি করে। ফলে মাছ ধরা শুরু না হতেই ঘাটে ফিরতে হয় জেলেদের।

কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ জানান, কক্সবাজারে ছোট-বড় প্রায় ৮ হাজার মাছধরার বোট রয়েছে। একেকটি বড় বোটে ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট বোটে ৫ থেকে ১৯ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে। ট্রলারগুলোর মধ্যে ইলিশ জালের বোটগুলো গভীর বঙ্গোপসাগরে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো উপকূলের কাছাকাছি মাছ ধরে।

ইলিশ জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। এসব জেলে বোটগুলো সাগর উপকূলে ছোট প্রজাতির মাছ ধরে, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়।

বঙ্গোপসাগরে বারবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া তৈরি হওয়ার কারণে গত দেড় মাসের অধিকাংশ সময়ই সাগরে মাছ ধরা বন্ধ ছিল এবং এ কারণে সাগর থেকে মাছ ধরাও কম পড়েছে বলে জানান শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাটস্থ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় অটোরিকশায় বাসের ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধচিরঘুমে রানি এলিজাবেথ