পরাশক্তিরা মিলছে এশিয়ায়, পক্ষ নিতে বাড়ছে চাপ অন্যদের ওপর

| রবিবার , ১৩ নভেম্বর, ২০২২ at ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ

কয়েকদিনের মধ্যে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় হতে যাওয়া একাধিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রথমটিতে যোগ দিতে বিশ্বনেতারা এখন ছুটছেন কম্বোডিয়ার নম পেনে। তবে এসব আলোচনায় পরাশক্তিগুলোর মধ্যে বিভেদ ও সংঘাত ছায়া ফেলতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কাও করছেন। সিএনএন জানিয়েছে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সম্মেলনে বিশ্বনেতারা তাদের প্রথম যাত্রাবিরতি নেবেন, দেখা করবেন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে। এরপর ইন্দোনেশিয়ার বালি আর ব্যাংককে জি২০ ও এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন ফোরামের সম্মেলন। খবর বিডিনিউজের।

২০২০ সালে কোভিড মহামারী শুরুর পর এবারই প্রথম গুরুত্বপূর্ণ এ তিনটি সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা সশরীরে অংশ নিতে যাচ্ছেন। কোভিড মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা, ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে বাড়তে থাকা খাদ্যের দাম ও বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানান ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সমন্বয় জোরদার করা সম্ভব কিনা, এই সম্মেলনগুলোতে অংশ নেওয়া বিপুল পরিমাণ কূটনীতিকের জন্য তার একটা পরীক্ষাও হয়ে যাবে। গত কয়েকদশকের রাজনৈতিক দিনপঞ্জিতে বিশ্ব এখনকার মতো ভূরাজনৈতিক তীব্র ভেদাভেদ আর দেখেনি।

ইউক্রেনে যুদ্ধ রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদের সম্পর্কে নাটকীয় পরিবর্তন এনেছে। শীর্ষ দুই অর্থনীতির দেশের মধ্যে বাজার দখলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র হয়ে উঠেছে। এসবের মধ্যে বাকি বিশ্বের ওপর চাপ বাড়ছে- পক্ষ বেছে নেওয়ার।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্মেলনগুলোর কোনোটিতে অংশ নেবেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের শি জিনপিং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় হওয়া সম্মেলনগুলোর অন্তত দুটিতে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে। মহামারীর মধ্যে বছর দুয়েকের বেশি দেশের বাইরে বের না হওয়া শি এখন ফের বিভিন্ন দেশে সফরে যাচ্ছেন, এরমধ্যে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাও নিশ্চিত করে ফেলেছেন তিনি। এদিকে বাইডেনও প্রাচ্যে যাচ্ছেন ফুরফুরে মেজাজে, তার দল মধ্যবর্তী নির্বাচনে প্রত্যাশার চেয়েও ভালো করেছে।
দুই নেতাই সম্মেলনগুলোতে নিজ নিজ দেশকে শক্তিশালী অংশীদার এবং বিশ্বমঞ্চে অন্যের তুলনায় বেশি দায়িত্বশীল হিসেবে হাজির করতে চাইবেন। জি২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে তারা মুখোমুখি বৈঠকেও বসবেন বলে বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস জানায়। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর শি-র সঙ্গে এটাই তার প্রথম মুখোমুখি বৈঠক হতে যাচ্ছে। শুক্রবার বেইজিংও শি যে জি২০ ও এপিইসি সম্মেলনে যাচ্ছেন তা নিশ্চিত করে। চীনের প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং একাধিক বিশ্ব নেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেও জানিয়েছে তারা।
শি-বাইডেন বৈঠক দুই পরাশক্তির মধ্যে উত্তেজনার আরও বৃদ্ধি রোধে ভূমিকা রাখলেও কয়েকদিনের মধ্যে হতে যাওয়া সম্মেলনগুলোতে বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের মধ্যে সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এই সম্মেলনগুলোতে, এমনকী এর মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি আঞ্চলিক আসিয়ান সম্মেলনেও বিশ্ব রাজনীতির বিভক্তির প্রতিফলনই দেখা যাবে বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক। তবে অন্য দুই সম্মেলনে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব যতটা গুরুত্ব পাবে, আসিয়ানে হয়তো তেমনটা পাবে না, জোটের এক সদস্য রাষ্ট্রের ভেতরে ক্রমবর্ধমান সংঘাতই তাদের ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘নেশা করে’ ঘুমিয়ে পড়ল ২৪ হাতি!
পরবর্তী নিবন্ধখেরসনের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনারা, বাসিন্দাদের উল্লাস