জীবনানন্দ দাশ : প্রকৃতির কবি, বিষণ্নতার কবি

| বৃহস্পতিবার , ২২ অক্টোবর, ২০২০ at ৯:১৫ পূর্বাহ্ণ

রবীন্দ্র-পরবর্তী বাংলা সাহিত্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি জীবনানন্দ দাশ। প্রকৃতি আর প্রেম তাঁর কবিতায় অসাধারণ রূপকল্পনাময় অভিব্যক্তি পেয়েছে। কবিতার পাশাপাশি তিনি বেশ কিছু প্রবন্ধও লিখেছেন। অনেক রচনা প্রকাশিত হয়েছে কবির মৃত্যুর পর।
জীবনানন্দ দাশের জন্ম ১৮৯৯ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলায়। ১৯২১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। কর্মজীবনে কিছুকাল ইনসিওরেন্স কোম্পানির এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। কয়েক বছর ‘দৈনিক স্বরাজ’ পত্রিকায় সাহিত্য বিভাগ সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন। তবে অধিকাংশ সময়ই যুক্ত ছিলেন অধ্যাপনায়। জীবনানন্দ দাশের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘ঝরাপালক’ প্রকাশিত হয় ১৯২৭ সালে। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’, ‘বনলতা সেন’, ‘মহা পৃথিবী’, ‘সাতটি তারার তিমির’, ‘রূপসী বাংলা’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। কবিতা ছাড়াও তাঁর প্রবন্ধগ্রন্থ ‘কবিতার কথা’, গল্পগ্রন্থ ‘গল্পসমগ্র’, এবং উপন্যাস ‘মাল্যবান’ ও ‘সতীর্থ’ বাংলা সাহিত্যে মূল্যবান সংযোজন। জীবনানন্দ দাশের লেখা গল্পগুলোর মধ্যে ‘কুয়াশার ভেতর মৃত্যুর সময়’, ‘রক্তমাংসহীন’, ‘পাতা তরঙ্গের বাজনা’, ‘পালিয়ে যেতে’, ‘জামরুলতলা’ ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যময় নিসর্গশোভা, মানবপ্রেম, বিষণ্নতা আর বিপন্ন মানবতার বেদনা ও হতাশাবোধ প্রকাশিত হয়েছে জীবনানন্দের কবিতায়। পরিবর্তমান কাল, অতীত আর বর্তমান ইতিহাসের রূপকাশ্রয়ী, বিষাদময় প্রকাশও তাঁর কবিতার বৈশিষ্ট্য। আধুনিক শহর-নগর এসেছে গ্রামের আবহে। সব মিলিয়ে জীবনানন্দ দাশ প্রেম আর সৌন্দর্য ও বিষণ্নতার কবি। আর এর প্রকাশ স্নিগ্ধ কোমল চেতনায় মূর্ত। ১৯৫৪ সালের ২২শে অক্টোবর কলকাতায় এক ট্রাম দুর্ঘটনায় কবি প্রয়াত হন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকিশোর গ্রুপ : বড় ভাইদের মদদ
পরবর্তী নিবন্ধফটিকছড়ির কৃতী সন্তান প্রফেসর তোফায়েল আহমেদ সিকদার