চালকের সতর্কতায় বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা

কদমতলীতে ব্যারিয়ার উপেক্ষা করে রেললাইনে টেক্সি

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৭ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ

নগরীর খুলশী-ঝাউতলা রেল ক্রসিংয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তিনজনের প্রাণহানির দুদিন যেতে না যেতেই এবার চট্টগ্রামের সবচেয়ে ব্যস্ততম ও বড় রেলক্রসিং কদমতলীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনের সাথে সিএনজি টেক্সির সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সিএনজিটি ৪জন যাত্রীসহ উল্টে গেলেও কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সিগন্যাল অমান্য এবং ক্রসিংয়ের ব্যারিয়ার উপেক্ষা করে প্রবেশের ঘটনায় সিএনজিসহ ড্রাইভার সোহেলকে আটক করেছে জিআরপি থানা পুলিশ। এই ব্যাপারে জিআরপি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চবির ১৪০ নম্বর ডাউন শাটল ট্রেনটি কদমতলী রেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় ব্যারিয়ার উপেক্ষা করে বেশ কয়েকটি সিএনজি রেল ক্রসিংয়ে ঢুকে যায়। মূলত ট্রেন চালকের সতর্কতার কারণে এই সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এবং ব্যাপক প্রাণহানির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী দোকানদার সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, ট্রেনটি সিগন্যাল পেয়ে ধীরে ধীরে কদমতলী স্টেশনে প্রবেশ করছিল। তাছাড়া ট্রেনের চালক রেল ক্রসিংয়ের ভেতরে কয়েকটি সিএনজি প্রবেশের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ট্রেনের গতি আরো কমিয়ে দেন। যার কারণে একটি সিএনজি ট্রেনের ইঞ্জিনের ধাক্কায় উল্টে গেলেও বড় ধরনের কোন ক্ষতি হয়নি।
পাহাড়তলী রেলওয়ে কন্ট্রোল অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা মো. শরীফ জানান, কদমতলী স্টেশনে প্রবেশের সময় সব ট্রেনই ধীরে ধীরে প্রবেশ করে। এতে দুর্ঘটনায় ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভবনা কম। শাটল ট্রেনটিও যখন স্টেশনে প্রবেশ করছিল তখন গতি একেবারেই কম ছিল।
ট্রেন চালক শহীদ উল্লাহ বলেন, আমি চবির শাটল ট্রেনটি নিয়ে কদমতলী স্টেশনের কাছাকাছি আসলে আমার আগে মেঘনা এঙপ্রেস স্টেশন থেকে বের হয়। এ সময় গেটকিপার আমাকে থামার জন্য রেড সিগন্যাল দিয়ে মেঘনাকে চলে যাওয়ার জন্য গ্রীন সিগন্যাল দেয়। মেঘনা চলে যাওয়ার পর গেটকিপার আমাকে স্টেশনে প্রবেশের জন্য গ্রীন সিগন্যাল দেয়। তখন মুহূতেই ব্যারিয়ার উপেক্ষা করে অনেকগুলো সিএনজি ক্রসিংয়ে ঢুকে যায়। এ সময় একটা সিএনজি আমার লাইনে আটকে যায়। তার আগে পিছে সব গাড়ি ছিলো। ফলে কোথাও যেতে পারছিল না। আমি মুহূর্তের মাঝে জোরে ব্রেক মেরেছি। ব্রেকও সাথে সাথে কাজ করেছে। তবে ইঞ্জিনের সামনের বাপারের ধাক্কায় সিএনজিটি উল্টে মুখ উপরের দিকে হয়ে যায়। তখন যাত্রীরা বের হতে পারছিল না। সাথে সাথে লোকজন এসে সিএনজি থেকে সবাইকে বের করে নেন। এতে ৪জন লোক ছিল। আমি যদি সাথে সাথে জোরে ব্রেক না ধরতাম তাহলে চারজনই মারা যেতে। এখানে গেটকিপার উভয় দিকে রেড সিগন্যাল দিয়েছেন। গেটকিপারের কোন দোষ নেই।
এই ব্যাপারে জিআরপি থানার ওসি নাজিম উদ্দিন আজাদীকে জানান, এই ঘটনায় কেউ আহত হয়নি। আমরা সিএনজিসহ ড্রাইভারকে আটক করেছি। জিআরপি থানার এস আই কামরুল জানান, সিএনজিটি আমাদের থানায় আটক আছে। ড্রাইভার সোহেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ ডিসেম্বর সকাল পৌনে ১১টায় খুলশীর জাকির হোসেন সড়কের ঝাউতলা রেলগেটে ডেমু ট্রেনের সঙ্গে বাস, সিএনজি ও মাহিন্দ্রার সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনার বিষয়ে সে সময়ে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছিল, রেলক্রসিংয়ের একপাশের ব্যারিয়ার ফেলা হলেও অন্যপাশের ব্যারিয়ার ফেলা হয়নি। ব্যারিয়ার না ফেলার কারণে সিএনজি, মাহিন্দ্রা ও বাস ঢুকে যাওয়ায় ডেমু ট্রেনের সাথে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফোনালাপ নিয়ে যা বললেন ইমন ও মাহি
পরবর্তী নিবন্ধমুরাদকে নিয়ে ফখরুলের সঙ্গে তর্কে যুবদল নেতা