এডিআরে মামলা নিষ্পত্তিতে আগ্রহী নন আমদানিকারকরা

৪ বছর ধরে বন্ধ এডিআর শাখার কার্যক্রম

জাহেদুল কবির | মঙ্গলবার , ২০ জুন, ২০২৩ at ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসের বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) শাখার মাধ্যমে শুল্ক মূল্য জটিলতা নিরসনে আগ্রহী হচ্ছেন না আমদানিকারকরা। চট্টগ্রাম কাস্টমসে প্রায় ১০ হাজারের অধিক মামলা রয়েছে। কাস্টমস কর্তারা বলছেন, মামলার জট কমাতে এডিআর শাখা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে গত ৪ বছর ধরে শাখাটিতে কোনো কার্যক্রম নেই।

শাখাটি মূলত কাস্টমসের শুল্ক মূল্য সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলা কাস্টমস ও আমদানিকারকদের পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করে থাকে। এক্ষেত্রে আমদানিকারককে কাস্টমসের ট্রাইব্যুনাল থেকে মামলা নামিয়ে এডিআরে আনতে হয়। কিন্তু বিভিন্ন সময় কাস্টমসের পক্ষে থেকে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকদের চিঠি দেয়ার পরেও কাঙ্ক্ষিত সাড়া মিলছে না।

এডিআর শাখা সূত্রে জানা যায়, এডিআর শাখায় গত ৪ বছরে আবেদন জমা পড়েছে মাত্র একটি। সেটি শুল্ক মূল্য সংক্রান্ত না হওয়ায় নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। তবে গত ২০১৬২০১৭ অর্থবছরে এডিআরে মামলা নিষ্পত্তির জন্য আবেদন জমা পড়ে ১০২টি, বিপরীতে নিষ্পত্তি হয় ৯১টি। এর মাধ্যমে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এছাড়া ২০১৭২০১৮ অর্থবছরে এডিআরের কোনো কার্যক্রম ছিল না। সর্বশেষ গত ২০১৮২০১৯ অর্থবছরে এডিআরে আবেদন জমা পড়ে ২৪টি, এরমধ্যে নিষ্পত্তি হয় ২১টি। এসব মামলা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৪ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত কাস্টমসে আবেদন জমা পড়েছে ১২৬টি। নিষ্পত্তি হয়েছে ১১২টি মামলা এবং নিষ্পত্তিকৃত মামলা থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ২৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এছাড়া বাকি ১৪টি নিষ্পত্তি হয়নি।

এডিআর শাখার কর্মকর্তারা জানান, এডিআর কার্যক্রম চালু রাখতে হলে কাস্টমস ও আমদানিকারক উভয় পক্ষকে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। তাহলেই কেবল এডিআর কার্যক্রম গতি পাবে। এডিআরের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি হলে কাস্টমস ও আমদানিকারক উভয়পক্ষ লাভবান হবে। উচ্চ আদালত ও কাস্টমসের আপিল ট্রাইব্যুনালে দীর্ঘদিন থেকে নিষ্পন্ন না হওয়া অবস্থায় রাজস্ব সংক্রান্ত মামলা এডিআরের মাধ্যমে নিষ্পত্তির জন্য উদ্যোগ নেয় এনবিআর। সেই লক্ষে গত ২০১২ সালের ১ মার্চ থেকে কার্যক্রমটি শুরু হয়। তবে বিশ্বব্যাংকের বেসরকারি খাতে সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) সহযোগিতায় ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে এডিআর পদ্ধতিটি গতি পায়। এ পদ্ধতিতে আদালতের বাহিরে আমদানিকারক এবং কাস্টমসের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে একজন নিরপেক্ষ সহায়তাকারীর মাধ্যমে দ্রুত সময়ে মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করে থাকে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ফাইজুর রহমান জানান, এডিআর মামলা নিষ্পত্তির জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকদের উদ্বুব্ধ করে যাচ্ছি। কাস্টমসের পক্ষ থেকে আমদানিকারকদের বিভিন্ন সময় চিঠি ইস্যুও করা হয়েছে। আসলে এডিআরে মামলা নিষ্পত্তি হলে কাস্টমস ও আমদানিকারক উভয়পক্ষের লাভ হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২৫ বালতি ডিম পেয়েছেন কামাল সওদাগর
পরবর্তী নিবন্ধপার্বত্য চট্টগ্রামের ৩ জেলায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ