এইচএসসি পরীক্ষা শুরু আজ

সময় ও মানবন্টন নিয়ে মৌখিক নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে পরীক্ষার্থীদের

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ ২ ডিসেম্বর। করোনা পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৭ মাস পর অনেকটা ভিন্ন আঙ্গিকে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসএসসির মতো এইচএসসিতেও সবকয়টি বিষয়ে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে না এবার। গ্রুপ ভিত্তিক তিনটি বিষয়ের ৬টি পত্রের পরীক্ষায় বসতে হবে শিক্ষার্থীদের। মানবন্টন ও সময়ের ক্ষেত্রেও আনা হয়েছে পরিবর্তন।
তবে প্রশ্নপত্রের নির্দেশনা নিয়ে সদ্য শেষ হওয়া এসএসসিতে জটিলতার সম্মুখিন হয় পরীক্ষার্থীরা। নতুন নির্দেশনা দেয়া হলেও প্রশ্নপত্রে পুরনো প্যাটার্নেই নির্দেশনা উল্লেখ করা ছিল। এ নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। তবে এইচএসসি প্রশ্নপত্রের নির্দেশনায় যা-ই লেখা থাকুক, পরীক্ষার্থীদের নম্বর ও সময় বিভাজন নিয়ে নতুন নির্দেশনা মানতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দিপু মনি। ১৮ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীদের এমসিকিউ (বহুনির্বাচনী প্রশ্ন) ২৫টির মধ্যে ১২টির উত্তর দিতে হবে। এ জন্য সময় থাকবে ১৫ মিনিট। তত্ত্বীয় (সৃজনশীল) অংশে আটটি প্রশ্নের মধ্যে দুটির উত্তর দিতে হবে। সময় সোয়া এক ঘণ্টা। দুটি অংশ মিলিয়ে একটি বিষয়ে দেড় ঘন্টা সময় পাবে শিক্ষার্থীরা।
আর মানবিক ও ব্যবসায় শাখার পরীক্ষার্থীদের এমসিকিউ ৩০টির মধ্যে ১৫টির উত্তর দিতে হবে। এ জন্য সময় ১৫ মিনিট। আর তত্ত্বীয় ১১টি প্রশ্নের মধ্য থেকে উত্তর দিতে হবে ৩টির। এর জন্য সময় বরাদ্দ সোয়া এক ঘণ্টা। দুটি অংশ (তত্ত্বীয় ও এমসিকিউ) মিলিয়ে পরীক্ষার মোট সময় দেড় ঘন্টা। পরীক্ষা শুরুর আগে এসব নির্দেশনা পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই অবহিত করতে হবে। কক্ষের দায়িত্ব প্রাপ্ত পর্যবেক্ষকরা এ বিষয়গুলো পরীক্ষার্থীদের স্পষ্ট করবেন। গত ৬ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় ও শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এছাড়া পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে আসন গ্রহণ করার নির্দেশনা তো আছেই।
সময় ও মানবন্টন নিয়ে মন্ত্রণালয়ের নতুন সিদ্ধান্তের আগেই প্রশ্নপত্র ছাপা হয়ে যাওয়ায় প্রশ্নপত্রে পুরনো প্যাটার্নে নির্দেশনা উল্লেখ থাকতে পারে বলে জানান চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ। তবে প্রশ্নপত্রে নির্দেশনা যেভাবেই থাকুক, পরীক্ষার্থীদের নতুন নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে জানিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, পরীক্ষা কক্ষে পর্যবেক্ষকরা এসব নির্দেশনা স্পষ্ট করবেন।
এবার সারাদেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে প্রায় ১৪ লাখ পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। আর চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অংশ নিচ্ছে লক্ষাধিক (১ লাখ ১ হাজার ১০২ জন) পরীক্ষার্থী।
তবে গত বছরের (২০২০ সালের) তুলনায় চট্টগ্রামে ৩ হাজার ১৩৫ জন পরীক্ষার্থী বেড়েছে এবার। ২০২০ সালে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৯৭ হাজার ৯৬৭ জন। যদিও করোনা সংক্রমণের কারণে পরীক্ষাই নেয়া সম্ভব হয়নি গতবার। এদিকে, এবারের মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র অংশ নিচ্ছে ৪৯ হাজার ৯৮১ জন। আর ছাত্রী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫১ হাজার ১২১ জন।
শিক্ষাবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী- এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০ হাজার ৩৬০ জন, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৩৬ হাজার ৫৮৯ জন ও মানবিক বিভাগ থেকে ৪৪ হাজার ১৪৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। বোর্ডের অধীন মোট ২৬৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
চট্টগ্রামের ৫ জেলায় (চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) মোট ১১২টি পরীক্ষা কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরে ২৭টি, চট্টগ্রাম জেলায় (মহানগরসহ) ৬৮টি, কঙবাজার জেলায় ১৮টি, খাগড়াছড়ি জেলায় ৯টি, রাঙ্গামাটি জেলায় ১০টি ও বান্দরবানে ৭টি পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে । গতবার কেন্দ্র সংখ্যা ছিল ১০৭টি।
পরীক্ষা আয়োজনে ইতোমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করেছে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে ৬০টি সাধারণ ও ১২টি বিশেষ ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমহেশখালীতে আসামি ধরতে গিয়ে আহত কনস্টেবলের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডের সোহেল হত্যার আসামি রামগড় থেকে গ্রেপ্তার