আহসান হাবীব : প্রথিতযশা কবি, যশস্বী সাংবাদিক

| শনিবার , ১০ জুলাই, ২০২১ at ৭:২৬ পূর্বাহ্ণ

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের একজন নন্দিত শিল্পী আহসান হাবীব। একাধারে তিনি ছিলেন কবি, ঔপন্যাসিক, শিশু সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সাহিত্য সম্পাদক। সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় তিনি নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছেন নিরন্তর। তবে কবিতা তাঁকে এনে দেয় বিপুল খ্যাতি।
আহসান হাবীবের জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পিরোজপুরের শঙ্করপাসা গ্রামে। উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র থাকাকালীন অনেকটা বাধ্য হয়েই শিক্ষা জীবনের ইতি টানতে হয়। আর্থিক অনটন ছন্দপতন ঘটায় স্বাভাবিক জীবনে। জীবিকার সন্ধানে ১৯৩৬ সালে আহসান কলকাতা চলে যান, যোগ দেন সাংবাদিকতায়। আমৃত্যু তিনি এই পেশার সাথেই যুক্ত থেকেছেন। ১৯৪৭-এর পর ঢাকায় ফিরে আসেন তিনি। নিজের লেখা প্রথম কবিতা ছাপা হয় স্কুল ম্যাগাজিনে, ১৯৩৪ সালে। তখন তিনি পিরোজপুর গভর্নমেন্ট স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকতার পাশাপাশি কবিতা লিখতে শুরু করেন। কবিতার মধ্যেই যেন খুঁজে পান এক ধরনের মুক্তি। আহসান হাবীবের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: ‘রাত্রিশেষ’, ‘ছায়াহরিণ’, ‘সারাদুপুর’, ‘মেঘ বলে চৈত্রে যাবো’, ‘দুই হাতে দুই আদিম পাথর’, ‘প্রেমের কবিতা’, ‘বিদীর্ণ দর্পণে মুখ’ প্রভৃতি। তাঁর কবিতায় চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে সমকালীন সমাজ বাস্তবতা আর মধ্যবিত্ত জীবনের নিরন্তর সংগ্রাম। কালের প্রবাহকে নিপুণভাবে ধারণ করেছেন তিনি। ‘অরণ্যে নীলিমা’ নামে তাঁর একটি উপন্যাস রয়েছে। শিশুদের জন্য লিখেছেন ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর’, ‘রাণী খালের সাঁকো’, ‘অভিযাত্রী কলম্বাস’, ‘এসো পথ চিনে নেই’, ‘ছুটির দিন দুপুরে’ সহ আরো অনেক গ্রন্থ। দৈনিক আজাদ, মাসিক সওগাত, মাসিক মোহাম্মদী, মাসিক বুলবুল, ইত্তেহাদ, দৈনিক পাকিস্তান এবং স্বাধীনতা উত্তরকালে দৈনিক বাংলায় কাজ করেছেন। সাহিত্যে স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন ইউনেস্কো সাহিত্য পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আদমজী পুরস্কার, একুশে পদক, আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার, নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক প্রভৃতি। ১৯৮৫ সালের ১০ জুলাই আহসান হাবীব প্রয়াত হন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ জরুরি
পরবর্তী নিবন্ধমাঠের খেলায় ফুটে উঠুক ফুটবলের সৌন্দর্য