রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাগারে থাকা বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাশকে আরো চারটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর (শ্যোন এরেস্ট) আদেশ দিয়েছে আদালত। এর মধ্যে একটি নগরীর কোর্টহিলের অদূরে খুন হওয়া আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের ভাইয়ের করা এবং অপর তিনটি পুলিশের দায়ের করা মামলা। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ এ আদেশ দেন। এ সময় চিন্ময় আদালতে হাজির ছিলেন না। কারাগার থেকে ভার্চুয়ালি তাকে হাজির করা হয়। এর আগে এ চারটি মামলায় চিন্ময়কে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তারা। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গত সোমবার আইনজীবী আলিফ খুনের ঘটনায় তার বাবার করা মামলায় চিন্ময়কে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছিলেন একই বিচারক।
নগরীর নিউ মার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে গত বছরের ৩১ অক্টোবর চিন্ময় দাশের বিরুদ্ধে একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়। নগরীর কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলাটিতে গত বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে চিন্ময়কে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয়। তার পক্ষের আইনজীবীরা তার জামিন চেয়ে সেদিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় পুলিশ যখন চিন্ময়কে প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাবে, তখন আগে থেকে আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হওয়া তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যানের গতিরোধ করেন এবং প্রিজন ভ্যানের সামনে পিছনে শুয়ে পড়েন। আড়াই ঘণ্টা পর লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়ে চিন্ময়কে বহনকারী প্রিজন ভ্যানকে কারাগারে নেওয়া হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা আদালত পাড়ায় হামলা ও ভাঙচুর করে। শুরু হয় সংঘাত। এর মাঝে আদালতের প্রবেশ গেটের অদূরে মেথরপট্টি এলাকায় খুন হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ।
এসব ঘটনায় মোট সাতটি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে কোতোয়ালী থানায় ৬টি ও আদালতে একটি মামলা হয়। পুলিশ জানায়, কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে ৭৯ জনের নামে তিনটি, আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নামে একটি (হত্যা মামলা) ও তার ভাই খানে আলম বাদী হয়ে ১১৬ জনের নামে একটি ও মোহাম্মদ উল্লাহ নামে এক ব্যবসায়ী ২৯ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া মো. এনামুল হক নামে একজন বাদী হয়ে ১৬৪ জনের নামে আদালতে আরো একটি মামলা করেন। আদালত সেটি কোতোয়ালী থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।