চট্টগ্রামের বাঁশখালীর খানখানাবাদ ইউনিয়নের প্রেমাশিয়ায় সরকারি খাস জায়গা বহাল রেখে অধিগ্রহণ ছাড়াই ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় বাঁধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে। প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় মৃত আলী আহমদের পুত্র শামসুর রহমান পাউবোর দায়িত্বরত এসও গোলাম কাদেরের বিরুদ্ধে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়ে কার্যক্রম স্থগিত করার আবেদন জানিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাঙ্গু নদীর ভাঙন থেকে প্রেমাশিয়া এলাকাকে রক্ষা করতে প্রায় দুই কোটি টাকার একটি বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প সমপ্রতি অনুমোদন দিয়েছে পাউবো। বাঁধটি সাঙ্গু নদীর তীর ঘেঁষে সরকারি খাস জায়গায় সোজা হওয়ার কথা থাকলেও এটি বাঁকা করে নির্মাণ করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের মাছের প্রজেক্ট রক্ষা করতে গিয়ে এটি বাঁকা করা হচ্ছে এবং অধিগ্রহণ ছাড়াই স্থানীয় ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গার উপরই নির্মাণ করা হচ্ছে বাঁধটি। যা নিয়ে স্থানীয় দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই বাঁধটির কারণে স্থানীয় আবুল কালাম, আবদু ছত্তার, আবদুল হাকিম, গিয়াস উদ্দীন, আবু নাছের, আলমগীর গংয়ের দশ কানি জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তারা অভিযোগ করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা গোলাম কাদেরের সাথে বিষয়টি জানার জন্য যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কৌশলে কথা না বলে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সাদেক আলী সিকদার জামে মসজিদের সভাপতি জোবাইদুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, ‘মসজিদের আড়াই কানি জায়গাসহ মোট দশ কানি ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা এই বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পরিত্যক্ত করে ফেলা হচ্ছে।
ব্যক্তি মালিকাধীন জায়গায় বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে খানখানাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আকতার ফারুক বলেন, ‘একজনের মাছের প্রজেক্ট রক্ষা করার জন্য পাউবোর কর্মকর্তারা নকশা পরিবর্তন করে ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় বাঁধ নির্মাণ করছেন। তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও আমরা কথা বলতে পারিনি।’
এ বিষয়ে পাউবোর দায়িত্বরত গোলাম কাদের বলেন, ‘জায়গাটি দেখতে বাঁশখালী সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রয়েছে। পরিদর্শন শেষে তিনি যে সিদ্ধান্ত দিবেন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পাউবোর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী অনুপম পাল বলেন, সাবেক এমপির অনুরোধে এ প্রকল্প গ্রহণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এখানে পাউবোর ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থ নেই। বাঁধ হলে এলাকার জনগণ উপকৃত হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরজমিনে পরিদর্শকপূর্বক নিদের্শনা দিবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, জনগণের ক্ষতি হয় এ ধরনের কোনো প্রকল্প পানি উন্নয়ন বোর্ড বাস্তবায়ন করবে না।
এদিকে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদুল আলম বলেন, খানখানাবাদে ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। দায়িত্বরতদের সাথে কথা বলেছি। অভিযোগ যাচাই বাছাই করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং সঠিক জায়গায় বাঁধ নির্মাণ করা হবে বলে।