পার্বত্য জেলা রাঙামাটির দুর্গম উপজেলার একটি বিলাইছড়ি। প্রায় ৭৪৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলায় প্রায় ৩২ হাজার লোকের বসবাস। বর্তমান সরকার কাপ্তাই হ্রদ বেষ্টিত দুর্গম এই উপজেলাকে সড়ক যোগাযোগের আওতায় নিয়ে আসছে।
রাঙামাটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলাধীন রাইখালীর কারিগর পাড়া হতে বিলাইছড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হচ্ছে ৪০ কিলোমিটার সড়ক। এই সড়কের বাজেট হচ্ছে ৩৩৮ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে প্রকল্পের সবগুলো প্যাকেজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। কিছু প্যাকেজে ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে এবং কাজও শুরু হয়েছে। এ সড়কটির কাজ ২০২৫ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বিলাইছড়ির স্থানীয় বাসিন্দা বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, এই সড়কটি নির্মিত হলে আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে কাপ্তাই হয়ে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে পারবো। শুষ্ক মৌসুমে যখন কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে যায় তখন আমাদের নদীপথে যাতায়াত করতে খুবই অসুবিধা হয়। এই সড়কটি বিলাইছড়ির মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হবে।
বিলাইছড়ি ১ নং ইউপি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান বলেন, কাপ্তাইয়ের কারিগর পাড়া দিয়ে বিলাইছড়ি পর্যন্ত যে সড়কটি নির্মাণ করছে এলজিইডি তা আমাদের বিলাইছড়িবাসীর জন্য অত্যন্ত সুখবর। বিলাইছড়ি উপজেলার সাধারণ মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা ও যাতায়াতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই সড়ক।
ফারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যালাল তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, কারিগড় পাড়া–বিলাইছড়ি ৪০ কিলোমিটার সড়কটি নির্মিত হলে এখানকার মানুষ খুবই উপকৃত হবে।
বিলাইছড়ি এলজিইডির উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, বিলাইছড়ি–কাপ্তাই কারিগর পাড়া সড়ক প্রকল্পের বিলাইছড়ি অংশে সড়ক হচ্ছে ৮ কিলোমিটার। এই সড়কের প্রস্থ ১২ ফুট। কাপ্তাই অংশে ৩১ কিলোমিটার সড়ক নির্মিত হবে। এই প্রকল্পে ব্রিজ ও সড়ক রয়েছে।
এলজিইডি রাঙামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী আহামদ শফি বলেন, এই সড়কটি নির্মিত হলে বিলাইছড়িবাসী পানি পথে যাওয়া–আসা থেকে মুক্তি পাবেন। সড়ক পথে বিলাইছড়িকে যুক্ত করা যাবে। ৪০ কিলোমিটার এই দীর্ঘ সড়কটির বাজেট হচ্ছে ৩৩৮ কোটি টাকা। এটি নির্মাণের ফলে বিলাইছড়ি এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য খুব সহজেই বাজারজাত করতে পারবে।
উল্লেখ্য, রাঙামাটির ১০ উপজেলার মধ্যে তিনটি উপজেলা বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি ও বরকল সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এসব উপজেলায় যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌ পথ। কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টির পর এ তিন উপজেলায় নৌ যোগাযোগ শুরু হয়। যোগাযোগ সংকটের কারণে এসব উপজেলা কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ ব্যবসা বাণিজ্যের সুবিধা থেকে পিছিয়ে আছে।











