রাউজানে পিয়ার মোহাম্মদ বাবু নামে সাবেক এক ছাত্রদল নেতাকে গুলি করেছে সন্ত্রাসীরা। গতকাল শনিবার দুপুরে পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের অন্নদা ঠাকুর আদ্যপীঠ রামকৃষ্ণ সংঘ মন্দির প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। পেটে ও পায়ে গুলিতে আহত বাবুকে উদ্ধার করে প্রথম উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে, পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নগরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি রাউজান সদর ইউনিয়নের খানখানাবাদ গ্রামের হাফেজ মাওলানা নুর মোহাম্মদের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিয়ার মোহাম্মদ বাবু শহরে সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসা করেন। আওয়ামী লীগের আমলে হামলা–মামলার ভয়ে গ্রামে যেতেন না। শেখ হাসিনার পতনের পর নিয়মিত বাড়িতে আসা–যাওয়া করতেন। এর মধ্যে এলাকার মাটি ও বালু ব্যবসার সাথে জড়িত হন। দলের অন্যদের সাথে ব্যবসা করছিলেন। পরে ব্যবসার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে অন্যদের সাথে বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে দলাদলি। এই দলাদলি থেকেই ঘটনার সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
জানা যায়, আদ্যপীঠ রামকৃষ্ণ সংঘ মন্দির কম্পাউন্ডের ভিতরে পাশাপাশি রয়েছে করিম ও ম্যুরাল সরোবর নামে দুটি পুকুর। বিগত সরকারের আমলে দুটি পুকুরের খনন ও পাকা ঘাট নির্মাণের জন্য টেন্ডার করা হয়েছিল। সেই সময় টেন্ডারে কাজ পাওয়া আওয়ামীপন্থী ঠিকাদার পালিয়ে গেলে সমঝোতার চুক্তিতে ওই কাজ শেষ করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন বাবু। কাজের প্রস্তুতি দেখতে আরাফাত নামের একজনকে সাথে নিয়ে সিএনজি টেক্সিতে করে বেলা ১১টার দিকে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। কিছুক্ষণ পর কয়েকজন সন্ত্রাসী তাকে ঘিরে ফেলে। খুব কাছ থেকে পায়ে ও পেটে গুলি করে। এ সময় সাথে থাকা আরাফাত নিরাপদে গা ঢাকা দিতে সক্ষম হন। বাবু মাটিতে পড়ে গেলে মৃত ভেবে আক্রমণকারীরা পালিয়ে যায়।
আহত বাবুর মা মোরশেদা বেগম দাবি করেন, গত বৃহস্পতিবার হযরত চাঁদ শাহ’র (রা.) বার্ষিক ওরশকে কেন্দ্রে করে দলাদলির শিকার তার পুত্র বাবু। ওরশের আগের রাতে ওরশকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের দলাদলিতে ফাঁকা গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল।
উল্লেখ্য, গুলিবিদ্ধ বাবু বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী বলে পরিচিত।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, খবর পেয়ে আমার ছুটে যাই। ঘটনাস্থলে ৫–৬ রাউন্ড খোসা পাওয়া গেছে। সেগুলো আলামত হিসাবে উদ্ধার করা হয়েছে। মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।