ব্যাটে-বলে ব্যর্থতায় টাইগারদের সবচেয়ে বড় পরাজয়

রুশো তাণ্ডবে বিষাদ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ২৮ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ

প্রথমবারের মত ঐতিহাসিক সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। আর টাইগারদের সে ঐতিহাসিক মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডকে এক টুকরো মিরপুর বানিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশের দর্শকরা। কিন্তু ম্যাচ শেষে তাদের মুখ লুকিয়ে স্টেডিয়াম ছাড়তে হয়েছে। তবে তাদের কোনো অপরাধে নয়। বাংলাদেশ দলের লজ্জার হারে মুখ লুকাতে হয়েছে বাংলাদেশী দর্শকদের। সকালের উৎসবটি বেলা গড়াতেই পরিণত হলো বিষাদে। লজ্জা, হতাশা আর এক বুক কষ্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশের দর্শকরা। কারণ বাংলাদেশ যে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেছে ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পরাজয়। শুধু তাই নয় একজন রাইলি রুশোর সমান রান করতে পারেনি বাংলাদেশের ১১ জন ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের সবার সম্মিলীত সংযোজন যেখানে ১০১ সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যান রুশো একাই করেছেন ১০৯ রান। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ অবধি টাইগাররা ছিলো হারের কালো বৃত্তে বন্দী। প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে বাংলাদেশ যেখানে আত্নবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার ঢেকুর তুলছিল সেটা একেবারে মিলিয়ে গেল একজন রাইলি রুশোর তাণ্ডবে। ফলে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচেই সেই পুরানো চেহারার বাংলাদেশ।

টসে জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে কি দারুণ শুরুই না করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কে জানতো বাংলাদেশের সব জারিজুরি সেই প্রথম ওভারেই শেষ হয়ে যাবে। পরে অপেক্ষা করছিল হতাশা আর ধীর্ঘশ্বাস। প্রথম ওভারেই সাফল্য এনে দেন তাসকিন আহমেদ। উইকেটের পেছনে ধরা পড়ে ফিরেন প্রোটিয়াস অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। দলের রান তখন মাত্র দুই। এরপর কেবলই দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ব্যাটসম্যানের শাসন। রুশো ও ডি কক মিলে তুলো ধুনো করতে থাকেন বাংলাদেশের বোলারদের। ৮১ বলে ১৬৮ রানের জুটি গড়েন দুজন। রানের স্রোত বয়ে যেতে থাকে সিডনির সবুজ আঙিনায়। রুশো হাফ সেঞ্চুরি করেন ৩০ বলে আর ডি কক করেন ৩৩ বলে। এরপর আরো আগ্রাসী রুশো। পরের হাফ সেঞ্চুরি করতে খেলেন মাত্র ২২ বল। ৫২ বলে পৌঁছে যান সেঞ্চুরিতে।

যদিও ৮৮ রানে একবার ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান রুশো। শেষ পর্যন্ত আফিফ হোসেনের বলে ডি ককের বিদায়ে ভাঙে এ জুটি। ৩৮ বলে ৬৩ রান করে ফিরেন ডি কক। যদিও রানের সে স্রোত শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি প্রোটিয়াসরা। শেষ ৫ ওভারে কেবল ৩৪ রান করতে পারে প্রোটিয়াসরা। শেষ পর্যন্ত ২০৫ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৫৬ বলে ৭টি চার এবং ৮টি ছক্কার সাহায্যে ১০৯ রান করেন রুশো। বাকি পাঁচ ব্যাটসম্যান করেছেন ২১ রান। সাকিব ২ উইকেট নিয়েছেন ৩৩ রান খরচায়।

২০৬ রানের পাহাড় সম লক্ষ্য। শুরুটা মনে হচ্ছিল আশা জাগানিয়া। ঠিক বোলিংয়ে সেই প্রথম ওভারের মত। প্রথম দুই ওভারে ২৬ রান তুলে নেন দুই ওপেনার শান্ত এবং সৌম্য। এরপর আনরিক নরকিয়া আক্রমণে আসতেই বদলে যায় চিত্র। নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় এবং চতুর্থ বলে ফেরান দুই ওপেনার শান্ত এবং সৌম্যকে। শান্ত ৯ এবং সৌম্য করেন ১৫ রান। এরপর লিটন একপ্রান্ত আগলে রাখলেও অপর প্রান্তে কেবলই ছিল আসা যাওয়ার মিছিল। পরের ছয় ব্যাটসম্যান ফিরেছেন দুই অংকের ঘরে যাওয়ার আগে। যে দুজন দুই অংকের ঘরে গেছে তাদের মধ্যে মিরাজ করেছেন ১১ আর তাসকিন করেছেন ১০ রান। সাকিব সহ ছয় ব্যাটসম্যান মিলে করেছেন ১৩ রান। নরকীয়ার পেসের সাথে শামসির স্পিনে কাবু হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। লিটনের ৩১ বলে ৩৪ রান না হলে শতরান না পেরোনোর লজ্জায় পুড়তে হতো বাংলাদেশ দলকে। শেষ পর্যন্ত ১০১ রানে অল আউট হয় ২১ বল বাকি থাকতে। নরকিয়া ৩.৩ ওভার বল করে মাত্র ১০ রান দিয়ে ৪ উইকেট শামসি ৪ ওভার বল করে মাত্র ২০ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ
পরবর্তী নিবন্ধক্যাম্পাসে রাজনীতি না করে পদ পাওয়ায় সহ সভাপতিকে মারধর