পর্যটন স্পটে দর্শনার্থীর ঢল

চকরিয়া বাঁশখালী বান্দরবান

আজাদী ডেস্ক | বৃহস্পতিবার , ১৪ জুলাই, ২০২২ at ৬:০১ পূর্বাহ্ণ

ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পর্যটন এলাকাগুলোতে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। আবার কোথাও কোথাও নানা কারণে দর্শনার্থীর উপস্থিতি তুলনামূলক কম ছিলো।
চকরিয়া প্রতিনিধি জানান, চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিলো একেবারেই নগণ্য। অন্যান্য বার ঈদে অন্তত চারদিন যেভাবে দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীর সমাগম হতো সেই তুলনায় এবারের ঈদুল আযহায় দর্শনার্থীর উপস্থিতি কম। পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, সাধারণত কোরবানির ঈদের দিন পার্কে কোনো দর্শনার্থীর আগমণ হয় না। পরদিন থেকেই আসেন পর্যটকরা। তাই এবারও ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে গতকাল পর্যন্ত পার্কে দর্শনার্থীর আগমণ ঘটেছে।
পার্ক কর্মকর্তা বলেন, এবারের কোরবানির ঈদ উপলক্ষে পার্কজুড়ে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি পার্কজুড়ে নেওয়া হয়েছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। থরে থরে সাজানো হয়েছিল পুরো পার্ককে। টুরিস্ট পুলিশের টহলও ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু সেই তুলনায় এবার দর্শনার্থী আগমণ আশানুরূপ হয়নি। তিনদিনে অন্তত ৮ হাজার মতো দর্শনার্থীর আগমণ হয়েছে। সিংহভাগই ছিল স্থানীয় দর্শনার্থী।
কম দর্শনার্থী উপস্থিতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পার্ক কর্মকর্তা মাজহার বলেন, একদিকে বৃষ্টিপাত, অন্যদিকে প্রচণ্ড গরম। হয়তো এই কারণে এবারের ঈদে দর্শনার্থীর আগমণে ভাটা পড়েছে। তবে গরমের মাত্রা কমে এলে দেশি-বিদেশি পর্যটক-দর্শনার্থী বাড়তে পারে আশা করছি আমরা।
সরজমিনে দেখা গেছে, পার্কে আগত দর্শনার্থীরা বিভিন্ন বন্যপ্রাণির বেস্টনীতে ঢুঁ মারছে। তন্মধ্যে বাঘ, সিংহ, হাতি, বানর, জলহস্তি, আফ্রিকান ওয়াইল্ডবিস্ট, আফ্রিকান জেব্রা, প্যারা হরিণ, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, মিঠা পানির কুমির, ময়ূরসহ হরেক প্রজাতির বন্যপ্রাণি ও পাখিশালায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বড়দের সাথে থাকা কোমলমতি শিশুরা বেশ আনন্দ উপভোগ করছে এসব প্রাণির সান্নিধ্যে এসে। ক্লান্তি দূর করতে আবার অনেকে পার্কের লেক ও দৃষ্টিনন্দন গগণচুম্বি মাদার ট্রির ছায়াতলে বসে আড্ডাও জমিয়েছেন।
পার্কের প্রকল্প পরিচালক এবং চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, আগামীতে পুরো পার্কের চেহারা পাল্টে যাবে। তখন দেশি-বিদেশি পর্যটক-দর্শনার্থীদের কাছে আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে এই পার্ক।
বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, উৎসব মানেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবানে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। ঈদের আনন্দে গতকালও বান্দরবানের অন্যতম দর্শণীয় স্থান নীলাচল, মেঘলা, চিম্বুক, নীলগিরি, নীল দিগন্ত, তমাতুঙ্গী, ডিম পাহাড়, বগালেক, শৈলপ্রপাত, প্রান্তিক লেক, দেবতাকুমসহ আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটগুলোতে প্রকৃতির নির্মল ছোঁয়া পেতে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে ভ্রমণ পিপাসুদের। দেশী বিদেশী পর্যটকদের পদচারণায় বান্দরবানে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রকৃতি এবং শৈল্পিক ছোঁয়ায় সাজানো দর্শণীয় স্থানগুলো।
বেড়াতে আসা পর্যটক সাদিয়া রহমান ও জামিল আহমেদ দম্পতি বলেন, বর্ষায় পাহাড়ের প্রকৃতি যেন পাখম মেলেছে। চারদিকে সবুজের সমারোহ, মেঘের হাতছানি। চমৎকার পরিবেশ এখানে। মুগ্ধ হবার মত সব সৌন্দর্য।
এদিকে ভ্রাম্যমাণ পর্যটকদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এবার আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউজগুলোতে আশানুরূপ পর্যটক রুম বুকিং ছিলো না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বান্দরবান হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি অমল কান্তি দাস বলেন, পর্যটকের আগমন আশানুরূপ ঘটেনি। তবে মঙ্গলবার পর্যটকদের আগমন ছিলো চোখে পড়ার মত। আবাসিক হোটেল মোটেল গুলোতে মোটামুটি পর্যটকদের রুম বুকিং ছিলো।
বান্দরবান টুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় আকর্ষণীয় দর্শণীয় স্থানগুলোসহ জেলার সবগুলো উপজেলায় কাজ করছে টুরিস্ট পুলিশ। পর্যটক হয়রানি বন্ধে সতর্কতামূলক প্রচারণাও চালাচ্ছে তারা।
বাঁশখালী প্রতিনিধি জানান, উপজেলার পর্যটন স্পর্ট উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত, চা বাগান ও ইকোপার্ক পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ স্কুল কলেজ বন্ধের এ সময়ে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি অভিভাবক ও দূর দূরান্ত থেকে আগতদের পদচারনায় মূখর ছিল সব। তবে দর্শনীয় স্থানে যেতে যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়াতে আগত দর্শণার্থীরা নানাভাবে বিরুপ প্রতিক্রিয়া করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগুরুত্ব ফুরায়নি হাবলের
পরবর্তী নিবন্ধনগরের বিনোদন কেন্দ্রে ভিড়