নারীর ভাগ্যউন্নয়নে ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় নারীবান্ধব এ সরকারের আন্তরিকতার কোন কমতি নেই। তবুও বলতে হয় নারী আজও যেন পরজীবী উদ্ভিদের মতই বেঁচে আছে। উচ্চশিক্ষা, সরকারি চাকরি এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে নারী এখনো অনেক পিছিয়ে। বিসিএস এবং মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা বিভাগীয় পদ্ধতিতে হওয়ার কারণে মেয়েদের এগিয়ে যাওয়া চোখে পড়ার মত। প্রাইমারী শিক্ষক নিয়োগে নারীকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্রে মেয়েদের দৌঁড় ছেলেদের সমান নয়। ছেলেরা যেভাবে দলবেঁধে স্বল্প খরচে ঢাকায় গিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে, সেভাবে মেয়েরা পারে না। একটা পরীক্ষা দিয়ে যদি সেই একটাতে চাকরি হয়ে যেত তাহলে কথায় ছিল না। বাস্তবে তা নয়। একজন ছেলে যেভাবে অনায়সে ঢাকায় আসা যাওয়া করতে পারে একজন মেয়ে তা পারেনা। যদি সে মেয়ের বাবা অথবা বড় ভাই না থাকে অর্থাৎ অভিভাবক না থাকে, অথবা সে যদি বিবাহিত হয় এবং তার যদি সন্তান থাকে এক বা একাধিক, অথবা সে যদি রক্ষণশীল পরিবারের বউ হয় তাহলে অন্য জেলা থেকে ঢাকায় গিয়ে পরীক্ষা দেয়া হয়ে ওঠে না। তাই প্রতিটি পরীক্ষা যদি বিভাগীয় পদ্ধতিতে হতো মেয়েরা এভাবে বঞ্চিত হত না। চাকরি হওয়া না হওয়া সেটা পরের ব্যাপার। যদি আবেদনও করতে না পারে তাহলে খুবই দুঃখজনক। হাজারও নারী আছে যারা বাইরের জেলা থেকে ঢাকায় গিয়ে পরীক্ষা দিতে হয় বলে ঝিমিয়ে পড়ে। প্রচণ্ড ইচ্ছা এবং যথেষ্ট প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও হয়ে ওঠে না। পরবর্তীতে মনের ইচ্ছা মনে সংগোপন রেখে চার দেয়ালের অন্দরে খেয়ে বসে দিনাতিপাত করে আর সময়ে সময়ে গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে। নারীর ‘ক্ষমতায়ন’ শব্দটি আমরা হামেশা শুনি পত্র- পত্রিকায়ও দেখি। কিন্তু নারী যদি উচ্চ শিক্ষিত না হয়, আত্মনির্ভরশীল না হয়,নারী যদি পুরুষের কাছে পণ্যই থেকে যায়, যখন যেখানে ইচ্ছা ভোগের বস্তু থেকে যায় তাহলে নারীর ক্ষমতায়ন হয় কিভাবে? বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একজন দাপুটে নারী। বিরোধীদলীয় নেত্রী, সাংসদের স্পীকার,সংসদ সদস্য নারী। এছাড়াও প্রশাসনে, পুলিশে, সাংবাদিকতায়, আদালতের জজ নারী। সমাজের উঁচুস্তরে হাতে গোনা কয়েকজন নারীকে ক্ষমতার আসনে বসিয়ে নারীর ক্ষমতায়ন কখনো সম্ভব নয়। সেসব শুধু ছেলে ভোলানো গল্পের মতোই মনে হয়।











