চার দিকের সমাহারে হয় যেই চৌদিক, সেই চারদিকে তো অবশ্যই, এমনকি বাকী ছয় দিকেরও চৌদিকে বিগত দ্বাদশ দিবস, চৌইক মানে পারিবারিক, দাপ্তরিক, আত্মিক ও সামাজিক এই চৌ ধরনের দায়িত্ব পালনার্থে রোলার কোস্টার রাইড শেষে, আজিকে পঞ্চদশ দিবসে হইয়াছে আমার নবম দিক মানে উর্ধ্বে গমনের সময়।
না, এই উর্ধ্বযাত্রা অবশ্যই অনন্তের নয়। অনন্তের উদ্দেশ্যে যে যাত্রা হইবে এই অধমের যে কোন সময়, উহা যে নিম্নযাত্রা হইবে না সেটাই কি নিশ্চিত নাকি? আপাতত অত্যাসন্ন আমার এই উর্ধ্বগমন, দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে। এরপর শেষ বিকেলে দুবাই থেকে হবে রিয়াদের উদ্দেশ্যে ফের উর্ধযাত্রা। গুঢ় অর্থ হইলো যাহার, হ্যাঁ অধমের সৌদি ভিসাপ্রাপ্তি ঘটিয়াছে!
আসলে, রিয়াদ হইতে ঢাকায় ফিরিবার দশম দিনে, রিয়াদ অফিসের মানব সম্পদ প্রধান গিউসি, ভিসার পুনঃআবেদন করিবার সবুজ সঙ্কেত প্রদান করিলে, তারপরের দিন প্রাতকালেই গুলাশন ৮১ নম্বর রোডে অবস্থিত সৌদি দূতাবাসের সামনের সড়কে ভিসা প্রত্যাশীদের যে লম্বা লাইন হইয়া থাকে, উহাতে সামিল হইতে পারিয়াছিলাম।
মানুষ যে শেখে বেশী, অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে, সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে এবার আমার ভিসাপ্রার্থিদের লাইনে সামিল হয়ে যেতে পারাটা, করেছে সেটাই সুপ্রমানিত। এ বিষয়ের মূল কৃতিত্বের দাবীদার অবশ্যই, চাচাতো ভাই আক্কাস। সে ই দিয়েছিল আমাকে মতিঝিলস্থ এক সত্যায়ন বাবার দরবারের হদিস। ফলে ডিজিটালি আবেদনপত্র জমা দেয়ার পর, হাতে লেখা আবেদনপত্রের সাথে তাবৎ দলিলদস্তাবেজ সংযুক্ত করে নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ভিসার আবেদনের যে প্রক্রিয়া আছে সৌদি দূতাবাসের, তা যে আঠারো মাসে বছরের হওয়ার ব্যাপার, তা তো টের পেয়েছিলাম আগের দু বারের অভিজ্ঞতায়।
দাঁড়ান, খোলাসা করা যাক ঘটনা। প্রথমত ভিসা আমার যেহেতু এম্পলয়মেন্ট ক্যাটাগরির, সেজন্য আবেদনপত্রের সাথে প্রতিবারই, এ অধম আসলেই কতোটুকু শিক্ষিত তা প্রমাণার্থে, যাবতীয় সনদের আরবিতে অনূদিত নোটারাইজড কপি, রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে সত্যায়িত করে জমা দিতে হয়। প্রথমবার ঘনিষ্ট বন্ধু ও সরকার বাহাদুরের মেঝো আকারের আমলা কাজী মুনিরের প্ররোচনায় নিজেরা সশরীরে ঐ সত্যায়নযাত্রা শুরু করার পর, ঢাকাস্থ আমাদের পররাষ্ট্র দপ্তরের ছোট আমলারা, কৃষন চন্দরের বিখ্যাত “জাম গাছ” গল্পটির পুনঃমঞ্চায়ন করেছিল আমাদের সাথে। থাক সে ঘটনার বিষদ বর্ণনা করে এইক্ষণে আর আপনাদের ঝঞ্ঝাটে না ফেলি । শুধু এটুকু বলে রাখি, সপ্তাহব্যাপী প্রলম্বিত সেই রাধাচক্কর থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য সে সময় আরো দুই বন্ধু ও মেঝো আকারের আমলা শাকিল ও খুকুর স্মরণাপন্নও হতে হয়েছিল। আমাদের সেই নাস্তানাবুদ সত্যায়নযাত্রার কাহিনী শুনে বলেছিল আক্কাস , যেই অনুবাদকেন্দ্রে সনদসমূহের অনুবাদ করানো হয়েছে সেখানেই এক সত্যায়নবাবা আছেন যার কেরামতিতে, তার ভাষায় সনদসমূহের ফরেন হয়ে যাবে মাত্র দুই দিনে। তদপুরি ঐ দরবারের কম্পিউটার থেকেই সৌদি ভিসার অনলাইন অংশও সম্পন্ন করা যায় নির্ঝঞ্ঝাটে। ঢালতে হবে শুধু নির্দিষ্ট অংকের কড়ি। বুঝেছিলাম তাতে, সত্যায়ন বাবার ঐ দরবারের হাত গুলো সব বেশ লম্বা। সেই লম্বা হাত গুলোর একটি যখন অনায়াসে নাগাল পায় পররাষ্ট্রদপ্তরের নির্দিষ্ট টেবিলের, তেমনি আরেক হাত চলে যেতে পারে সৌদি এম্বেসিতেও নির্বিঘ্েন । অনলাইন আবেদন করার যে সাইট করেছে সৌদি এম্বেসির, সেটিতে প্রবেশাধিকারও আদতে সংরক্ষিত। বিশেষ বিশেষ জনের সাথে সৌদি এম্বেসির বিশেষ বোঝাপড়া থাকায়, অন্য কোন কম্পিউটার থেকে ঐ সাইটে ঢোকা গেলেও, আবেদন জমা দেয়া যায় না।
সেসময় ঐ সত্যায়ন বাবার দরবারের খবরে আমার দুই বন্ধু ,নিজেদের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে একমত হয়েছিলাম যে যদ্দেশে যদাচার কথাটি আসলেই অতি কাজের কথা। সে মোতাবেক এবার ঢাকায় পা দিয়েই বলেছিলাম আক্কাসকে, ঐ সত্যায়ন বাবার দরবারের মাধ্যমে অতীব গুরুত্বপূর্ণ আমার সত্যায়নকর্মটি যেন সম্পাদন করে রাখে সে। ফলাফল? সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার এক রাতের মধ্যে করতে পেরেছিলাম আবেদন ভিসার!
এরপর বিনা ঝঞ্ঝাটে দুই দিনের মধ্যে নতুন সৌদি ভিসাটি পেতেই, সেটির যে অংশটুকু এই অধমের পাঠযোগ্য বোধগম্য, সেই ইংরেজি অংশটুকু পড়ার পর হয়েছিল অবস্থা হরিষে বিষাদ, আমার। এ ব্যাপারে প্রথম হরিষ ছিল এই যে, যাই হোক পাওয়া গেছে ভিসা একটা । দ্বিতীয় হরিষ ছিল, ভিসাটি সিঙ্গেল এন্ট্রি বা হাজতি ভিসা না ।মাল্টিপল এন্ট্রির ৬ মাস মেয়াদের ভিসা এটি। একই সাথে এও বুঝেছিলাম এই ৬ মাস মানে ১৮০ দিন না। কারণ গুনতে হবে এই মাস, চান্দ্রমাসে। সেই শিক্ষা তো পেয়েছিলাম কিছুকাল আগেই কলে আটকা পড়া ইদুরের মতো রিয়াদে আটকা পড়ে। আর ভিসার বিষাদের বিষয়টি হল এমপ্লয়মেন্ট ভিসা না দিয়ে, মঞ্জুর করেছে বিজনেস ভিজিট ভিসা! ওতে পরিষ্কার ইংরেজিতে লেখা আছে “নট পারমিটেড টু ওয়ার্ক’। যার মনে ঘাড়ের উপর খাড়া ঝুলেই আছে। যদিও আগেরবারের মতো এবারেও গিউসি বলেছে, বাংলাদেশের সৌদি এম্বেসি ভিসা একটা দিলেই হল। সশরীরে রিয়াদ যাওয়ার পর, সেটিকে ইকামা পরিণত করে নেবার প্রয়োজনীয় কানেকশন যেমন আছে তার, তেমনি বলেছে সে ঠারে ঠূরে ঐ ভিসাটির টু ইকামা পথে যাত্রা নির্বিঘ্ন করার জন্য আছে প্রয়োজনীয় তেল মবিলও।
সে যাক, ভিসা হাতে পেয়ে ঠিক করেছিলাম রিয়াদের উদ্দেশ্যে উড়াল দেবার আগে, দশদিকের আট দিকে চৌইক প্রয়োজনে দৌড়ঝাঁপ করা বাদ দিয়ে, চুপচাপ বসে থাকবো ঘরে অন্তত দুই দিন, ছেলেদের ও পরিবারের হেফাজতে। সেই হিসাবে রিয়াদ থেকে ফেরার পঞ্চদশ দিনে আজ ফের রিয়াদ গমনার্থে একটু আগেই দুবাইগামী এমিরেটসের ফ্লাইটে চেক ইন শেষ করে, দাঁড়িয়েছি ঢাকা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনের কাউন্টার গুলোর সামনে এরই মধ্যে বেশ লম্বা হয়ে যাওয়া লাইনগুলোর সেটিতে, যেটিকে চোখের দেখায় ছোট মনে হয়েছে।
অপেক্ষার এই লাইনের লেজে দাঁড়াতেই প্রথমেই মনে পড়লো ,গত দুইদিন একটানা বাসায় থাকবো বলে পণ করেও শেষ পর্যন্ত তা করতে না পারলেও, যতক্ষন থেকেছি তাতেই একটা বিষয় নজরে এসেছে; তা হল আব্বা সম্ভবত ক্রমশ ঢুকে যাচ্ছেন শিশুদের শর্তহীন আনন্দ ও অর্থহীন দুঃখের জগতে। ফলে ছিলেন এবং আছেন এখনো উনি মহাখুশি, খেজুর ,তিন ফল ,জয়তুনের তেল এই তিন বেহেস্তি সওদা নিয়ে। এতদিন ভেবেছিলাম সন্তানদের চোখের আড়াল করতে একদম নারাজ যে আব্বা, ওনার এই আনন্দের কারণ বুঝি তার পুত্রের মহাপবিত্র সৌদি ভূমিতে থাকার উপলক্ষটিই। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, না তা না। কারণ ওনাকে তো ওনার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বেশ কিছুকাল ধরে ডিমেনশিয়া মানে স্মৃতিভ্রষ্টতার চিকিৎসাও দিয়েছে। বার্ধক্যজনিত এই রোগ হলে তো, রোগীর পারসোনালিটি ডিজঅর্ডার দেখা দেয়। যতোই প্রথমবার আমার সৌদি গমনের সময়, যাচ্ছে তার পুত্র আল্লার বিশেষ পছন্দের দেশে, এই ভেবে আলহামদুলিল্লাহ পড়ে থাকুন না কেন, এইবার নিশ্চিন্ত মনে তিন ফল চিবুতে চিবুতে হাসিমুখে আমাকে তার বিদায় দেয়ার দেবার ব্যাপারটি আজীবন চেনা আব্বার সাথে মোটেও যায় না। এ মনে হতেই বেশ একটা হোঁচট খেলাম মনে।
সাথে সাথে আমার সেই হোঁচটের ব্যাথা ও ক্ষত সারানোর জন্য দৌড়ে হাজির হলো পুত্রদ্বয়! আহা, কী আনন্দেই না কেটেছিল সময়, গত চৌদ্দ দিনের সারাটাক্ষন না হলেও, যখনই ফিরেছি ঘরে সন্ধ্যায় বা রাতে, সেই সময় থেকে একদম ঘুমাবার আগ পর্যন্ত। ছিল ওরা একদম আঠার মতন লেগে। দিতে হয়েছে ওদের কতো না প্রশ্নের জবাব। প্রতিরাতেই ঘুমিয়েছে দু’জনে আমারই বলা গল্প, ছড়া, কবিতা ও গানের সুরে সুরে, যে সুরের তাল কেটে নিজেই দিয়েছি আমি, ঘণ্টা দুয়েক আগে, হায়!
“স্যার ঐ লাইনে চলে যান” ইমিগ্রেশনের এক পুলিশ এসময় বিদেশীদের জন্য সংরক্ষিত খালি লাইনটির দিকে আমাকে ও আমার পেছনে দাঁড়ানো বাকীদের এই বলে আহ্বান করতেই, তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে দ্রুত ঐ লাইনের সামনে দাঁড়াতেই, পেছন থেকে বলে উঠলেন একজন
“ছার আপনি পার হওয়ার পর চইলা যাইয়েন না। ঐ পাড়ে একটু খাড়াইয়েন, আমার লাইগা!“
তাতে পেছনে ঘাড় ঘোরাতেই দেখি ঠিক পেছনেই দাঁড়ানো তরুণ শামসু মিয়াকে; পরিচয় হয়েছিল যার সাথে চেক ইন শেষ করে এদিকে রওয়ানা করার সময়।
ঘটনা হচ্ছে আমার লাইনে আমি যখন চেক ইন করছিলাম, অন্য লাইনে তখন চেক ইন হচ্ছিল শামসু মিয়ার। কাউন্টারের লোকের হাতে পাসপোর্ট টিকিট দিয়ে শামসু মিয়া নিজের বড় বোচকাটি চেক ইন কাউন্টারের ওজন মাপার জায়গায় তুলে কাঁচুমাচু মুখে কাউন্টার থেকে আসা প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করছিল যখন, ঠিক সে সময়
বিমানবন্দরের এক সিকিউরিটি গার্ড এসে শামসু মিয়াকে তার হাতের ব্যাগটি খুলে দেখানোর জন্য পিড়াপিড়ি শুরু করে, যা করতে নারাজ শামসু মিয়া । এতে ঐ সিকিউরিটি চোটপাট শুরু করলে, নিজ বোর্ডিংকার্ড হাতে পেয়ে লাইন থেকে বেরিয়ে তাদের বচসার পাশ দিয়ে যাবার সময় গার্ডটিকে জিজ্ঞেস করেছিল, কেন সে ব্যাগ খুলতে বলছে? ঐ ব্যাগে কোন আপত্তিকর জিনিষ থাকলে, সেটা তো স্ক্যানিংয়েই ধরা পড়তো।
আমতা আমতা করে দেয়া গার্ডের উত্তর ছিল, যে না তা না। তার মনে হয়েছে শামসু মিয়ার হাতের ব্যাগটি অনেক ওজনদার। বিমানে ভিতরে তো অতো ওজনদার ব্যাগ নেয়া যায় না।
শুনে একদম শান্ত ও শক্ত গলায় বলেছিলাম কাজ হলো সিকিউরিটির। ব্যাগের ওজন তো দেখছেন চেক ইন কাউন্টারের এয়ারলাইন্সের লোক। ঐ ব্যাপারে কিছু বলার থাকে উনিই বলবেন তা! একে গ্রামের সহজ সরল লোক পেয়ে সে কেন উটকো ঝামেলা করছে ।
এ শুনেই ঐ বেটা একদিকে যেমন সুর সুর করে চলে গিয়েছিল তেমনি কাকতালীয় ভাবে এয়ারলাইন্সের লোকও সে সময় আর কোন কথা ন বলে এগিয়ে দিয়েছিল বোর্ডিং কার্ড। ফলে সে সময়েই কৃতজ্ঞতায় বিগলিত শামসু মিয়ার সাথে পরিচয় হয়েছিল। এখন দেখছি আছে সে এখন ঠিক আমার পেছনে। আচ্ছা ঘটনা কী? সেই থেকেই কী শামসু মিয়া আছে আমার পিছু পিছু? আসলেই ব্যাগে কোন বিপজ্জনক বস্তু নিয়ে ঘুরছে না তো শামসু মিয়া?
যতোই নিজ মনে ঐ সন্দেহ মাথাচাড়া উঠুক তারপরও ইমিগ্রেশন শেষ হতেই, ঐ পাশে গিয়ে তার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
বেশ করিতকর্মা মনে হচ্ছে বিদেশীদের লাইনের এই ইমগ্রেশনকর্মীকে । আমার ইমিগ্রেশন যেমন বেশ ঝটপট করে দিল, হল একইরকম শামসু মিয়ারও।
এদিকে এরকম ঝটপট ইমিগ্রেশন হয়ে যেতেই শামসু মিয়া মনে হয় ধরে নিয়েছে, এটাও আমারই মাজেজা। আকর্ণ হাসিতে তাই সামনে এসে ব্যাগটা মেঝেতে রেখে হাত কচলাতে কচলাতে বলল, “অনেক উপকার করলেন স্যার। আল্লার কাছে দোয়া করি আপনার জন্য।“
আরে না না আমি কিছু করি নাই। এইখানে তো ব্যাগ চেক হয় না। ঐটা চেক হইবো প্লেনে উঠার আগে। ব্যাগের মধ্যে ছুরি ,কেচি , তেল ,পানি এসব কিছু না থাকলেই হইল? তা আছে কি ব্যাগে ? জিজ্ঞেস করি সামনে এগুতে এগুতে
“না ছার ঐসব নাই। ৬০টা লুঙ্গি আর দুইশো বিশ টা আমাগো দেশী ফোনের সিম আছে !”
শুনে থমকে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করি, বলেন কী? এসব নিয়া যাইতেছেন কই? দেশের বাইরে যেখানেই যান, ঐখানে এতো লুঙ্গি নিতেছেন কেন? বাংলাদেশের সিমের কী কাজ ঐ দেশে ?
“দুবাই যামু । ঐখানে আমাগো দেশিগো মইধ্যে এগুলির খুব চাহিদা। বিক্রি করুম।”
লুঙ্গির ব্যাপারটা বুঝলাম। কিন্তু বাংলাদেশের সিম দিয়া কি হইবো ঐ দেশে?
“দেশে আসে যারা, তার এই সিম খোঁজে। বুজলেন না এই সিম থাকলে ঢাকা এয়ারপোর্টে নাইমাই এই ফোনে কথা কওনের লাইগা এই সিমের খুব ডিমান্ড !”
বোঝা গেল শামসু মিয়ারে যতোই সহজ সরল ভ্যাবলা ভাবছিলাম, তা ঠিক না। ওনার ব্যাবসায়িক বুদ্ধি আমার চেয়ে অনেক অনেক পাকা। একই সাথে মনে হল রতনে রতন চেনার মতো, ঐ সিকিউরিটি গার্ডও আসলে চিনেছিল শিকার, তার। উল্টা আমি নিজেই হইলাম বেহদ্দ বেকুব ।
ভাবতে ভাবতে শামসু মিয়াকে বললাম, আইচ্ছা আপনি এখন এইখানে বসেন। উপরে আমার একটু কাজ আছে। এই বলে এমিরাটসের সৌজন্যে পাওয়া লাউঞ্জ কার্ডটির বদৌলতে মুফতে উপরের তলার বলাকা লাউঞ্জের সেবা নেবার মানসে সিড়ির দিকে পা বাড়ালাম।
লেখক : প্রাবন্ধিক, ভ্রমণ সাহিত্যিক।










